আফ্রিকার দেশ চাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা সুচেস মাসরাকে সহিংসতা উস্কে দেয় এমন বর্ণবাদী ও বিদ্বেষী বার্তা প্রচারের জন্য ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, চাদের রাজধানী এন’জামেনার একটি আদালত শনিবার (৯ আগস্ট) এ রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ের পর প্রতিপক্ষের আইনজীবী কাদজিলেম্বে ফ্রান্সিস সাংবাদিকদের বলেন, মাসরা তার সাজার বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

ফ্রান্সিস বলেন, “তার মক্কেল অযোগ্য অপমানের শিকার হয়েছেন।”

গত বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী মাসরা ট্রান্সফরমার্স পার্টির প্রধান এবং চাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহামত দেবির তীব্র সমালোচক।

মধ্য আফ্রিকান দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে লোগোন অক্সিডেন্টালে মে মাসে পশুপালক এবং কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষের জন্য ৬৭ জন সহ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই একই নগাম্বে জাতিগত গোষ্ঠীর। ওই সংঘর্ষে ৩৫ জন নিহত ও আরো ছয়জন আহত হন।

মাসরা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ঘৃণামূলক বক্তব্য, ভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা এবং গণহত্যার প্ররোচনা।

শনিবার আদালত কক্ষ ত্যাগ করার আগে, তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, “শক্ত থাকুন।” 

দক্ষিণের প্রধানত খ্রিস্টান ও সর্বপ্রাণবাদী জনগোষ্ঠীর মধ্যে নাগাম্বায়ে জাতিগত গোষ্ঠী ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তবে গোষ্ঠীটি রাজধানীর মুসলিম-অধ্যুষিত কর্তৃপক্ষের উপেক্ষার শিকার। 

২০২২ সালে তার অনুসারীদের উপর রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের পর মাসরা দেশত্যাগ করেন, ২০২৪ সালে সম্মত সাধারণ ক্ষমার অধীনে ফিরে আসেন।

সেই বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি ডেবির বিরুদ্ধে লড়াই করেন, যেখানে ডেবি ৬১ শতাংশেরও বেশি সমর্থন নিয়ে জয়ী হন।

কিন্তু মাসরা ফলাফল মেনে নেননি, দাবি করেন, ভোটে কারচুপি হয়েছে। পরে তিনি ডেবির সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে রাজি হন।

ডেবির বাবা ইদ্রিস ডেবি ইটনোর মৃত্যুর পর ২০২১ সালের এপ্রিলে চাদে ক্ষমতায় আসা সামরিক শাসকদের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মাসরা। ইটনো ৩০ বছর ধরে দেশ পরিচালনা করেছিলেন।

ডেবি ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং চলতি বছরের শুরুতে সংসদীয় নির্বাচনের মাধ্যমে তার রাষ্ট্রপতিত্বকে বৈধতা দেন, যার বিরোধিতা করেছিল মাসরা এবং তার দল।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ : ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ‘কিছুই জানতেন না’। গতকাল মঙ্গলবার তিনি ওয়াশিংটনে যুবরাজকে স্বাগত জানিয়ে এ মন্তব্য করেন।

ট্রাম্পের বক্তব্য ২০২১ সালে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুবরাজ খাশোগিকে ‘গ্রেপ্তার বা হত্যা’ করার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছিলেন।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, সৌদি আরব খাশোগি হত্যাকাণ্ড ঠিকঠাক তদন্ত করেছে।

এর আগে খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ওয়াশিংটন ও রিয়াদের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যুবরাজ কিছুই জানতেন না। আমাদের অতিথিকে বিব্রত করার দরকার নেই।

এ প্রসঙ্গে যুবরাজ বলেন, হত্যাকাণ্ডটি ‘বেদনাদায়ক’ ও  ‘বড় ভুল’, তবে সৌদি আরব যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।

২০২১ সালের মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সৌদি আরব সেটিকে নেতিবাচক, মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য বলে প্রত্যাখ্যান করে। যুক্তরাষ্ট্র ওই সময় কয়েকজন সৌদি কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তবে যুবরাজের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার যুবরাজের সঙ্গে সাক্ষাতে ট্রাম্প পারমাণবিক সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন। যুবরাজ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ ৬০০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার করা হচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনবে সৌদি আরব।

খাশোগির স্ত্রী হানান এলাত্র এক্স–এ যুবরাজের কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

ইসরায়েলের উদ্বেগ সত্ত্বেও সৌদি–মার্কিন এফ–৩৫ চুক্তির ইঙ্গিত ট্রাম্পের

ট্রাম্প বলেছেন, রপ্তানি লাইসেন্স এখনো ঘোষণা করা হলেও তিনি আশা করছেন যে সৌদি আরব ও মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্প–জায়ান্ট লকহিড মার্টিনের মধ্যে একটি চুক্তি হবে।

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক আধিক্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে—এমন আশঙ্কায় ইসরায়েলের কিছু কর্মকর্তার মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে এখনো একমাত্র দেশ হিসেবে ইসরায়েলই এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনা করছে।

ট্রাম্প বলেন, সৌদিদের জন্য যে মডেলটি বিক্রি করা হবে, তা মোটামুটি ইসরায়েলের ব্যবহৃত সংস্করণের মতোই হবে। তিনি বলেন, “সৌদি আরব আমাদের বড় মিত্র, আর ইসরায়েলও বড় মিত্র। আমি জানি, ইসরায়েল চাইবে আপনাদের কম সক্ষমতার বিমান দেওয়া হোক।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাশোগি হত্যাকাণ্ডের কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ: ট্রাম্প
  • খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ : ট্রাম্প