কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য বা কারণ ছাড়াই পুঁজিবাজারে খাদ্য ও আনুসঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রহিমা ফুড করপোরেশন লিমিটেডের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) এমন তথ্য আবারো জানিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১১ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

পিপলস লিজিংয়ের অর্ধবার্ষিকে লোকসান বেড়েছে ১৫.

৩৩ শতাংশ

প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে বড় পতন

শেয়ার দর অস্বাভাবিক বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ১০ আগস্ট ডিএসই কোম্পানিকে চিঠি পাঠায়। ওই চিঠির জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো রকম অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে।

গত ১৩ জুলাই রহিমা ফুডের শেয়ার দর ছিল ১১২ টাকায়। আর ১১ আগস্ট লেনদেন শেষে দাঁড়ায় ১৬৮.৯০ টাকায়। এই কয়েক কার্যদিবসে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫৬.৯ টাকা বা ৪৯ শতাংশ।

‎এভাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
 

ঢাকা/এনটি/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসই

এছাড়াও পড়ুন:

গাড়ি যখন ব্র্যান্ড নিউ

যেসব গাড়ি দেশের বাজারে শূন্য কিলোমিটার বা অব্যবহৃত অবস্থায় আসে, সেসব গাড়িকে ব্র্যান্ড নিউ বা আনকোরা গাড়ি বলে। বৈদ্যুতিক, হাইব্রিড, প্লাগ-ইন হাইব্রিড (পিএইচইভি), জ্বালানিচালিতসহ সব ধরনের আনকোরা গাড়ি দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। বিলাসবহুল থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে রয়েছে নানা মডেলের ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি। গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, রুচির পরিবর্তন, হালনাগাদ গাড়িগুলো সম্পর্কে ইন্টারনেট থেকে সহজ জ্ঞানার্জন, বিক্রয়োত্তর সেবা ও খুচরা যন্ত্রাংশের দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কথা চিন্তা করে ক্রেতারা এই শ্রেণির গাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গাড়িঋণের সহজলভ্যতা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সুবিধাজনক ভ্রমণের চাহিদায় হালনাগাদ মডেলের গাড়িতে চড়ার জন্য গাড়ির বাজারে আনকোরা গাড়ির এক নতুন জোয়ার দেখা যাচ্ছে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির চাহিদার কারণে বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির বাজারে আগ্রহ বাড়ছে। ব্র্যান্ড নিউ গাড়িতে যেহেতু ব্যাটারি ও মোটরগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় থাকে, সেহেতু এই গাড়িগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি সেবাও মেলে। এর সঙ্গে গাড়ি আমদানিতে কিছু কর রেয়াত করা হয়েছে, যা বাজার বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশের অটোমোবাইল বাজার দ্রুতগতিতে প্রসারিত হচ্ছে। গাড়ির বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সরকার যদি শুল্ককাঠামো কিছুটা হ্রাস করার পাশাপাশি অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটায়, তবে আগামী পাঁচ বছরে আনকোরা গাড়ি বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে এই প্রতিবেদনে।

ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির সুবিধা

বাংলাদেশে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির বাজার একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। ভবিষ্যতে প্রযুক্তিনির্ভর পরিবহনব্যবস্থার দিকে দেশ এগিয়ে গেলে এই বাজার আরও প্রসারিত হবে। নতুন গাড়ি কেনার সবচেয়ে বড় কারণ হলো কারিগরি–নির্ভরতা। নতুন গাড়িগুলো উৎপাদনকেন্দ্র থেকে সরাসরি আসে। এতে কোনো পূর্ববর্তী ব্যবহারের ক্ষতি বা ঝুঁকি থাকে না। ক্রেতারা নিশ্চিত থাকেন যে গাড়িটি শতভাগ নতুন এবং সঠিকভাবে কাজ করবে। নতুন গাড়িটিতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সাধারণত ৩–৮ বছরের বাম্পার টু বাম্পার বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করে থাকে। এই সেবার আওতায় বিনা মূল্যে বা স্বল্প মূল্যে সার্ভিসিং পাওয়া যায়। অনেক প্রতিষ্ঠান সার্ভিসিং, যন্ত্রাংশ ও বিমাসুবিধাও প্যাকেজ আকারে দেয়, যা রিকন্ডিশন্ড গাড়িতে সহজে মেলে না।

একটি গাড়ি ব্র্যান্ড নিউ অবস্থায় কেনা অনেক নিরাপদ। গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এ ক্ষেত্রে সরাসরি বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়। গাড়ি কেনার পর পরবর্তী যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণের ওপর নির্ভর করবে গাড়িটি কতটা বন্ধুসুলভ! তাই প্রথম অবস্থা থেকে নিজের হাতে নিজের গাড়ির পরিচালনা আনন্দময় অনুভূতি প্রদান করে। ব্র্যান্ড নিউ গাড়িতে টায়ার, চাকা, গিয়ার বক্স থেকে শুরু করে অন্য পার্টসগুলো নতুন থাকায় রক্ষণাবেক্ষণ খরচও অনেকাংশে কমে যায়। রিকন্ডিশনড গাড়িগুলোর ফিচার বেশি থাকলেও ব্র্যান্ড নিউ গাড়িতে আলাদা প্রশান্তি পাওয়া যায়। ভেতরে নতুন গাড়ির সুঘ্রাণ মেলে। আনকোরা গাড়ির যন্ত্রাংশগুলোও নতুন হওয়ায় মোটামুটি ৫০ হাজার কিলোমিটারের আগে নিশ্চিন্তে চলাচল করা যায়। নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বা মিটার কারচুপি, ইঞ্জিনসমস্যা ইত্যাদি নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকে না। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য নতুন গাড়ি একটি নিরাপদ বিনিয়োগ মনে করেন অনেকেই। এ ছাড়া গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভিস সেন্টার থাকায় যেকোনো সমস্যায় সহজে সমাধান ও স্পেয়ার পার্টস পাওয়া যায়। ব্র্যান্ড নিউ গাড়িতে পাঁচ বছর পর্যন্ত ফিটনেস শুল্ক দিতে হয় না বলে বার্ষিক শুল্কের পরিমাণও কমে যায়। এ ছাড়া রেজিস্ট্রেশন খরচও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির চেয়ে কম।

বিলাসবহুল গাড়ির বাজারে

বিলাসবহুল গাড়ির ক্ষেত্রে আনকোরা গাড়ির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। উচ্চবিত্তরা এসব গাড়ি কিনতে পছন্দ করেন। ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির বাজারে জার্মান গাড়ির আলাদা চাহিদা রয়েছে। এসব গাড়ি দেখতে যেমন নান্দনিক, তেমনি প্রযুক্তিতেও হালনাগাদ সব প্রযুক্তি–সংবলিত। বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ–বেঞ্জ, অডি, লেক্সাস, ভলভো, জিপের গাড়িগুলো বিলাসবহুল সারিতে জনপ্রিয়। দেশে এই গাড়িগুলোর অনুমোদিত পরিবেশক রয়েছে। পাশাপাশি ল্যান্ড রোভার রেঞ্জ, জাগুয়ার, পোর্সে, টেসলা, মাজেরাতিসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের গাড়িগুলো আমদানিকারকেরা ব্যক্তিগতভাবে আমদানি করে থাকেন।

বিএমডব্লিউ

বিলাসবহুল গাড়ির কথা মনে পড়লেই যে প্রতিষ্ঠানের নাম প্রথম সারিতেই মনে পড়ে, তার নাম বিএমডব্লিউ। জার্মানির বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিএমডব্লিউর হালনাগাদ মডেলগুলো আরও বেশি আকর্ষণীয়, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। দেশের বাজারে বিএমডব্লিউর পরিবেশক এক্সিকিউটিভ মোটরস লিমিটেড। প্রথম সারির ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সেলিব্রিটি ক্রিকেটাররাও বিএমডব্লিউপ্রেমী। তিনটি বিভাগে বিএমডব্লিউ গাড়িগুলো পাওয়া যায়। বিএমডব্লিউ থ্রি এবং ফাইভ সিরিজের সেডান গাড়িতে প্লাগ ইন হাইব্রিড, সেভেন সিরিজে পেট্রল এবং এক্স সিরিজে মিলবে এসইউভি পেট্রল (এক্স ১ এবং এক্স ৭) ও বৈদ্যুতিক (আইএক্স এবং আইএক্সথ্রি) গাড়ি। এম সিরিজে এসইউভিতে রয়েছে এক্সএম (পিএইচইভি) এবং সেডান গাড়িতে আই ফাইভ এম৬০ এক্স ড্রাইভ (বৈদ্যুতিক)। আই সিরিজের প্রতিটি গাড়ি বৈদ্যুতিক। এই সিরিজে সেডানের মধ্যে রয়েছে আইসেভেন, আইফাইভ ও আইফোর। এসইউভিতে মিলবে আইএক্স, আইএক্সথ্রি এবং আইএক্সওয়ান। সদ্য আসা গাড়িগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দামি ও অত্যাধুনিক সুযোগ–সুবিধাসম্পন্ন গাড়িটির মডেল বিএমডব্লিউ আইসেভেন ইড্রাইভ ৫০। এটি একটি বৈদ্যুতিক সেডান গাড়ি। শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিটার গতি তুলতে গাড়িটির সময় প্রয়োজন হয় মাত্র ৫ দশমিক ৫ সেকেন্ড। একবার ফুল চার্জে গাড়িটি সর্বোচ্চ ৬১১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। গাড়ির পেছনের আসনের যাত্রীদের জন্য রয়েছে এক বিশাল ডিসপ্লে, যা গাড়ির ওপরের ছাদে বল্টানো অবস্থায় থাকে। বিএমডব্লিউ অপারেটিং সিস্টেম ৮, প্রশস্ত কেবিন, আরামদায়ক আসনসহ যাত্রাপথকে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করার সব উপকরণ রয়েছে গাড়িটিতে। তিন কোটি টাকা থেকে গাড়িটির  মূল্য শুরু হয়। বৈদ্যুতিক গাড়ির জগতে আইসেভেন ইড্রাইভ ৫০ নতুন যুগের সূচনা করেছে, যা একসঙ্গে পরিবেশবান্ধব, বিলাসবহুল ও বৈদ্যুতিক গাড়ি হিসেবে সর্বোচ্চ পথ পাড়ি দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয়।
এ ছাড়া এসইউভি বিভাগে বিএমডব্লিউ আইএক্সত্রি এম স্পোর্টস একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি, যা তাৎক্ষণিক টর্ক উৎপাদনের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন গতি প্রদান করে। রয়েছে এম স্পোর্ট স্টাইলিং ও অ্যারোডায়নামিক ডিজাইন। ইতিমধ্যে এক্সিকিউটিভ মোটরস সারা দেশে ১৬টি স্থানে বিএমডব্লিউ স্ট্যান্ডার্ড চার্জিং স্টেশন স্থাপন করেছে, যা বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জ্বালানিচালিত গাড়ির মধ্যে রয়েছে বিএমডব্লিউ এক্সওয়ান। এই গাড়ির তৃতীয় প্রজন্মের মডেলটি বাংলাদেশের বাজারে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই কমপ্যাক্ট এসইউভি মডেলটি আধুনিক ডিজাইন ও উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয়। ১ দশমিক ৫ লিটার টুইন পাওয়ার টার্বো ইঞ্জিনে গাড়িটির সর্বোচ্চ অশ্বশক্তি ১৩৬ হর্সপাওয়ার এবং টর্ক ২৩০ এনএম। ১৮ ইঞ্চি অ্যালয় হুইল, অ্যাডাপটিভ হেডলাইট, অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট, ডিজিটাল কি প্লাস, ১২টি স্পিকারে অডিও সিস্টেম এবং বিএমডব্লিউ আইড্রাইভ ফিচারের মাধ্যমে গাড়িটি ক্রেতাদের মন জুগিয়েছে। কেনার আগে এই মডেলের গাড়ি পরীক্ষামূলক চালানোর সুযোগও দিচ্ছে এক্সিকিউটিভ মোটরস।  

মার্সিডিজ–বেঞ্জ সেডান ৪৫০

সম্পর্কিত নিবন্ধ