জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনের চাঁদা দাবির একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তাঁকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এনসিপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এই বহিষ্কার আদেশ দেওয়া হয়। এতে সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি কেন তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, এর লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আপনাকে দলের সব প্রকার সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে এতদ্দ্বারা সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। এই বহিষ্কার আদেশ আজকের তারিখ হতে কার্যকর হবে।’

আরও পড়ুন‘তোমরা দেখো ওর থেকে আরও পাঁচ লাখ নিতে পারো কি না’১০ আগস্ট ২০২৫

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘আপনাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না—তার লিখিত ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল-আমিনের কাছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রদান করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন দমাতে নিজাম উদ্দিনের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার একটি ভিডিও গত রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আরেক ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিওটিতে আন্দোলন বন্ধের জন্য টাকা চাইতে শোনা যায় তাঁকে। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল সোমবার তাঁকে কারণ দর্শানোর চিঠি (শোকজ) দেয় দলটির চট্টগ্রাম নগর কমিটি।

এনসিপির বহিষ্কারাদেশ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫

ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।

সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।

জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।

সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”

অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।

সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”

সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।

ঢাকা/হিমেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ