ঝালকাঠিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে নিষিদ্ধঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আলী ইমাম খান ওরফে অনুকে (৩০) আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঝালকাঠি সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

আলী ইমাম খান সম্প্রতি জামিন নিয়ে পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মাসুদুর রহমান।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৫ মে সকাল ১০টার দিকে ঝালকাঠি শহরতলির ইকোপার্ক এলাকায় আলী ইমাম খান তাঁর স্ত্রী সায়মা পারভীন ওরফে তানহাকে (১৯) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তোলেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে সদর থানায় আত্মসমর্পণ করেন। সেখানে পুলিশের কাছে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তাঁকে সঙ্গে নিয়ে শহরতলি ইকোপার্ক এলাকায় গিয়ে নিহত সায়মা পারভীনের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় সায়মার ব্যাগে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি পাওয়া যায়।

সায়মা পারভীন ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আলী ইমাম ঝালকাঠি শহরের ফকির বাড়ি এলাকার বাসিন্দা।

ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মাহেব হোসেন বলেন, এ ঘটনায় সেদিন রাতেই সালমার বাবা শাহাদাৎ তালুকদার জামাতা আলী ইমামকে একমাত্র আসামি করে ঝালকাঠি সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গৌতম কুমার ঘোষ আসামি আলী ইমামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। আদালত ২০২৪ সালের ৪ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আদালত ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এ রায় দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঝ লক ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে। 

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা

পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন

সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”

সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”

তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”

তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ