তিন বছর আগে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাওতা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. সাহিদ। গত ২৪ জুলাই ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে সাহিদ ৩ নম্বর সহসভাপতির পদ পেয়েছেন। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানতে চাইলে চাপড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বলেন, ওয়ার্ড কমিটিতে মৃত ব্যক্তি রয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে জানাতে পারবেন।

দলীয় নেতা–কর্মীরা বলছেন, ত্যাগী নেতা–কর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করার কারণে এমন কাণ্ড ঘটেছে। তাঁদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতা–কর্মীদের বঞ্চিত করে ওয়ার্ড কমিটির শীর্ষ নেতারা নিজ এলাকা থেকে বেশি নেতার নাম কমিটিতে রেখেছেন। তবে কমিটিতে মৃত ব্যক্তিকে নেতা বানানোর ব্যাপারে উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতারা কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ আগস্ট চাপড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২৪ জুলাই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এতে শহিদ মিঞাকে সভাপতি ও মোশারফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে ৩ নম্বর সহসভাপতি পদে মৃত মো.

সাহিদের নাম আছে।

ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান। তিনি মৃত সাহিদের ছোট ভাই। ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন বছরের বেশি সময় আগে আমার ভাই হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু ওয়ার্ড কমিটিতে সহসভাপতি পদে তাঁর নামটা কীভাবে এল, বলতে পারব না। হয়তো ভুলবশত হয়েছে।’

ইউনিয়ন বিএনপির পদবঞ্চিত নেতা আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, নেতারা তাঁদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব বিতর্কিত কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব কমিটিতে দলের জন্য জেলজুলুমের শিকার ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও কাছের লোকদের রাখা হয়েছে।

৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শহিদ মিঞা বলেন, ‘কমিটিতে মৃত ব্যক্তি আছেন, ব্যাপারটি আমার জানা নেই। আমার ছেলে এলে কমিটির লিস্ট বের করে যাচাই করে জানাব।’

কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব লুৎফর রহমান বলেন, ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সময় সার্চ কমিটি, জেলা কমিটি ও থানা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তিনি ছিলেন কো–অর্ডিনেটর। কমিটিতে মৃত কেউ আছেন, তা জানতেন না, জানলে বাদ দিতেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স গঠন কর কম ট ত কম ট র গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রম আইন সংস্কারে তাগিদ ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের

বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কারে তাগিদ দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠকে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল বলেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) সবার চাওয়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতি রেখে বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কার করা হবে।

রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠক করে শ্রম আইন সংস্কারে এই তাগিদ দেয় মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল। শ্রম অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে দেশের আইনি সংস্কারের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন বিজিএমইএর সভাপতি। মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদলে ছিলেন লেবার অ্যাটাশে লীনা খান, ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি ফ্রস্ট ও ফরেন অ্যাগ্রিকালচারাল সার্ভিস অ্যাটাশে এরিন কোভার্ট।

বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি ছাড়াও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, মিজানুর রহমান, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

মাহমুদ হাসান খান বলেন, তৈরি পোশাক খাতের শ্রম পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা বিজিএমইএর অন্যতম অগ্রাধিকার। তাঁর নেতৃত্বে পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ৮১টি শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন পাল্টা শুল্কের নির্বাহী আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা তৈরি পোশাকে যদি কমপক্ষে ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর নতুন আরোপ শুল্ক থেকে আনুপাতিকভাবে অব্যাহতি পাওয়া যাবে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ নেতারা মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছে জানতে চান, রপ্তানি পণ্যে কী ফর্মুলায় বা প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন এবং স্বচ্ছতা ও ট্রেসেবিলিটি নির্ণয় করা হবে। এ ব্যাপারে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন তাঁরা।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে একটি গুদাম স্থাপনের সম্ভাব্যতা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। তাঁরা বলেন এটি বাংলাদেশি উদ্যোগ বা মার্কিন উদ্যোগ বা যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এই গুদাম তৈরি পোশাক রপ্তানিতে লিড টাইম কমাতে ভূমিকা রাখবে।

বিজিএমইএ নেতারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির পাশাপাশি পলিয়েস্টার, নাইলনের মতো ম্যান মেইড ফাইবার আমদানি করতে আগ্রহী। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে তাঁরা মার্কিন দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন। বিষয়টি নিয়ে ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি ফ্রস্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা বিস্তারিত জানাবেন।

মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়াতে আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যোগের সিলেক্ট ইউএসএর সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বিজিএমইএ নেতাদের পরামর্শ দেন। তাঁরা বলেন, এটি বাংলাদেশি তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং তৈরিতে সহায়তা করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রম আইন সংস্কারে তাগিদ ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের
  • প্যানেল গোছাতে ব্যস্ত সংগঠনগুলো, প্রচারে সম্ভাব্য প্রার্থীরা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য
  • সাদাপাথরে লুটপাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ স্থগিত