তিন বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তি পেলেন ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতির পদ
Published: 13th, August 2025 GMT
তিন বছর আগে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাওতা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. সাহিদ। গত ২৪ জুলাই ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে সাহিদ ৩ নম্বর সহসভাপতির পদ পেয়েছেন। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানতে চাইলে চাপড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বলেন, ওয়ার্ড কমিটিতে মৃত ব্যক্তি রয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে জানাতে পারবেন।
দলীয় নেতা–কর্মীরা বলছেন, ত্যাগী নেতা–কর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করার কারণে এমন কাণ্ড ঘটেছে। তাঁদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতা–কর্মীদের বঞ্চিত করে ওয়ার্ড কমিটির শীর্ষ নেতারা নিজ এলাকা থেকে বেশি নেতার নাম কমিটিতে রেখেছেন। তবে কমিটিতে মৃত ব্যক্তিকে নেতা বানানোর ব্যাপারে উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতারা কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ আগস্ট চাপড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২৪ জুলাই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এতে শহিদ মিঞাকে সভাপতি ও মোশারফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে ৩ নম্বর সহসভাপতি পদে মৃত মো.
ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান। তিনি মৃত সাহিদের ছোট ভাই। ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন বছরের বেশি সময় আগে আমার ভাই হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু ওয়ার্ড কমিটিতে সহসভাপতি পদে তাঁর নামটা কীভাবে এল, বলতে পারব না। হয়তো ভুলবশত হয়েছে।’
ইউনিয়ন বিএনপির পদবঞ্চিত নেতা আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, নেতারা তাঁদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব বিতর্কিত কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব কমিটিতে দলের জন্য জেলজুলুমের শিকার ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও কাছের লোকদের রাখা হয়েছে।
৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শহিদ মিঞা বলেন, ‘কমিটিতে মৃত ব্যক্তি আছেন, ব্যাপারটি আমার জানা নেই। আমার ছেলে এলে কমিটির লিস্ট বের করে যাচাই করে জানাব।’
কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব লুৎফর রহমান বলেন, ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সময় সার্চ কমিটি, জেলা কমিটি ও থানা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তিনি ছিলেন কো–অর্ডিনেটর। কমিটিতে মৃত কেউ আছেন, তা জানতেন না, জানলে বাদ দিতেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স গঠন কর কম ট ত কম ট র গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
নেত্রকোনায় সাংবাদিক লুৎফুজ্জামান আলিফের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক নাজমুস শাহাদৎ, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের জেলা কমিটির সভাপতি পারভেজ, হামলার শিকার লুৎফুজ্জামান আলিফ প্রমুখ।
লুৎফুজ্জামান আলিফ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রূপসী বাংলার নেত্রকোনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ নভেম্বর দুপুরে লুৎফুজ্জামান আলিফ ও তাঁর সহকর্মী শাহজাহান শেখ জেলার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে একটি ভাড়া মোটরসাইকেলে নদীর তেরিবাজার ঘাটে নামেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন ব্যক্তি সেখানে যান। তাঁদের মধ্যে দুজন চাপাতি হাতে লুৎফুজ্জামানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। সঙ্গে থাকা শাহজাহান শেখ বাধা দিতে গেলে তাঁকেও কোপানোর চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন লুৎফুজ্জামানকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি পরে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে গতকাল বাড়ি ফেরেন।
এ ঘটনায় লুৎফুজ্জামান বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় মামলা করেছেন। এতে দুর্গাপুর পৌরশহরের পশ্চিম মোক্তারপাড়া এলাকার ইমরান ইসলাম ওরফে ইমন (২৩) ও পুলিশ মোড় এলাকার মো. সৌরভের (২৩) নামোল্লেখ করে এবং আরও চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।