চাশতের নামাজ, যা সালাতুদ দুহা নামে পরিচিত, একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ নফল নামাজ। এই নামাজ মুমিনের জন্য আল্লাহর নৈকট্য অর্জন, গুনাহ মাফ এবং আধ্যাত্মিক শান্তি লাভের একটি বিশেষ মাধ্যম। রাসুল (সা.) নিজে এই নামাজ আদায় করতেন এবং সাহাবিদের এটি পড়তে উৎসাহিত করেছেন।
চাশতের নামাজের সময়চাশতের নামাজের সময় সূর্যোদয়ের পর থেকে শুরু হয় এবং জোহর নামাজের সময় শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত চলে। এটি সাধারণত সকালের প্রথমাংশে আদায় করা হয়। বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:
শুরুর সময়: সূর্যোদয়ের প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর, যখন সূর্যের লাল আভা চলে যায় এবং সূর্য কিছুটা উপরে উঠে। এই সময়টি নিষিদ্ধ নামাজের সময়ের বাইরে।
শেষের সময়: সূর্য মাথার উপরে মধ্যাহ্নে পৌঁছানোর ঠিক আগে, অর্থাৎ জোহরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।
সর্বোত্তম সময়: হাদিস অনুযায়ী, সকালের মাঝামাঝি সময়, যখন সূর্য বেশ উঁচুতে উঠে যায় এবং দিনের তাপ বাড়তে শুরু করে, তখন চাশতের নামাজ পড়া উত্তম। আবু হুরায়রা (রা.
বাংলাদেশে সূর্যোদয় যদি সকাল ৫:৩০ এ হয় এবং জোহরের ওয়াক্ত দুপুর ১২:০০ টায় শুরু হয়, তবে চাশতের নামাজের সময় সকাল ৫:৫০ থেকে ১১:৫০ পর্যন্ত। সর্বোত্তম সময় হতে পারে সকাল ৮:০০ থেকে ১০:০০ এর মধ্যে।
আরও পড়ুনসালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম১১ আগস্ট ২০২৫চাশতের নামাজের নিয়মচাশতের নামাজ দুই থেকে বারো রাকাত পর্যন্ত আদায় করা যায়, তবে সাধারণত দুই বা চার রাকাত পড়া হয়। নিচে এর নিয়ম দেওয়া হলো:
নিয়ত করা
নামাজ শুরু করার আগে মনে মনে চাশতের নামাজের নিয়ত করতে হবে। উদাহরণ:
“আমি দুই/চার রাকাত সালাতুদ দুহা নফল নামাজ আল্লাহর জন্য আদায় করছি।”
নিয়ত মনে মনে করা যথেষ্ট।
নামাজ আদায়
রাকাত সংখ্যা: সর্বনিম্ন দুই রাকাত এবং সর্বোচ্চ বারো রাকাত। প্রতি দুই রাকাতে সালাম ফিরিয়ে পড়া উত্তম।
পড়ার পদ্ধতি: সাধারণ নফল নামাজের মতোই পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সুরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ইখলাস পড়ার কথা কোথাও কোথাও বর্ণিত হয়েছে। তবে যেকোনো সুরা পড়া যায়।
আরও পড়ুনইশরাকের নামাজের সময়সূচি ও বিধান০৬ আগস্ট ২০২৫চাশতের নামাজের ফজিলতচাশতের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে। প্রতিদিন তোমার শরীরের প্রতিটি জোড়ার জন্য সদকা দেওয়া উচিত। আর চাশতের দুই রাকাত নামাজ এই সদকার পরিবর্তে যথেষ্ট।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯৮২)
মনে রাখতে হবেসূর্যোদয়, সূর্যাস্ত এবং মধ্যাহ্নের সময় চাশতের নামাজ পড়া যাবে না।
নামাজে মনোযোগ বজায় রাখা, যাতে এর আধ্যাত্মিক উপকার পাওয়া যায়।
চাশতের নামাজ নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা, কারণ এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।
আরও পড়ুন‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ একটি ফজিলতপূর্ণ তাসবিহ২৬ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ শত র ন ম জ র র ন ম জ র সময
এছাড়াও পড়ুন:
হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামীকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। এতে ইউরোপের কয়েকজন নেতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের বরাত নিউইয়র্ক টাইমস এই খবর জানিয়েছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করেন ট্রাম্প। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটাই প্রথম বৈঠক। প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠককে ট্রাম্প “উষ্ণ” বলে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে পুতিনের মতো বৈঠকে “খোলামেলা” ও “গঠনমূলক” আলোচনা হয়েছে।
ট্রাম্প ও পুতিনের প্রত্যাশা, তাঁদের এই বৈঠক ইউক্রেন সংঘাত সমাধানে অগ্রগতি আনতে পারবে।
বৈঠকের পরের দিন গতকাল শনিবার সূত্রের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প সোমবার জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৈঠকে ‘ইউরোপীয় নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’ তবে ইউরোপের কোন কোন নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
শনিবার সকালে জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে এক পোস্টে জানানা, সোমবার তিনি ওয়াশিংটনে যাবেন। পরে ট্রাম্পও তা নিশ্চিত করেছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প সম্ভবত জেলেনস্কির কাছে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। প্রস্তাবে ইউক্রেনের পূর্ব দিকের দনবাস অঞ্চলের যেসব এলাকা রাশিয়া বিল পাস করে নিজেদের বলে ঘোষণা করেছেন, কিয়েভকে তা মেনে নিতে হবে। এমনকি দনবাসের যেসব এলাকা এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আছে, কিন্তু রাশিয়া নিজের বলে ঘোষণা করেছে, তা-ও মস্কোর বলে স্বীকার করে নিতে হবে।
প্রতিবেদনটি বলছে, ইউক্রেন এসব শর্ত মেনে নিলে অন্যান্য সীমান্তে চলমান সংঘাত বন্ধ করবে রাশিয়া।
কিন্তু এরই মধ্যে জেলেনস্কি বারবার বলেছেন, রাশিয়ার কাছে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া হবে না। হারানো সব ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা হবে।
ট্রাম্প ও পুতিনের আলাস্কা বৈঠকের পর যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ড এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। সেখানে তাঁরা ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও জেলেনস্কির সঙ্গে ইউরোপের সহযোগিতায় ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকে বসার ব্যাপারে নিজেদের প্রস্তুতির’ কথা জানান।
আলাস্কা বৈঠকের পর ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছিলেন, পুতিন, ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এখনো আলোচনা করেনি।
গত বৃহস্পতিবার ফক্স বিজনেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছিলেন, ইউক্রেনের ইউরোপীয় সমর্থকদের “কাজ দেখাতে” না পারলে “চুপ থাকা” উচিত। ইউক্রেন সংঘাত বন্ধের সমাধান খোঁজে বের করতে চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের কাছে ইউরোপের দাবি-দাওয়া হাজির করা বন্ধ করতে হবে।