শিশুর মায়োপিয়া কেন হয়, চিকিৎসা ও করণীয় কী
Published: 17th, August 2025 GMT
মায়োপিয়া বা ক্ষীণদৃষ্টি হলো চোখের এমন এক সমস্যা, যা হলে কাছে থাকা জিনিস স্পষ্ট দেখা যায়, কিন্তু দূরের বস্তু দেখা যায় ঝাপসা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিশুদের মধ্যে এ সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
কারণ কীমা–বাবার একজন বা দুজনেরই মায়োপিয়া থাকলে শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। দীর্ঘ সময় ডিজিটাল স্ক্রিন বা বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলে, মুঠোফোন, ট্যাব, কম্পিউটার ও বই পড়ার সময় বেশি হলে চোখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সূর্যের আলোয় কম সময় কাটানো ও ঘরের কৃত্রিম আলোয় বেশি সময় থাকলেও মায়োপিয়া হয়। পড়ার সময় চোখ ও বইয়ের দূরত্ব ঠিক না রাখা, চোখে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ ইত্যাদি কারণে হয়।
আরও পড়ুনপদ্মা নদীতে কায়াক চালিয়ে রাজশাহী থেকে চাঁদপুর গেছেন ইনতিয়াজ, পথে কোথায় থেকেছেন, কী খেয়েছেন১৬ আগস্ট ২০২৫চিকিৎসা ও করণীয়চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুদের জন্য উপযুক্ত ‘পাওয়ারের’ চশমা নিতে হবে। নিম্নমাত্রার অ্যাট্রোপিন ড্রপ চোখে দিলেও মায়োপিয়ার অগ্রগতি ধীর হয়। স্পেশাল কন্ট্যাক্ট লেন্স বা অর্থোকেরাটোলজি লেন্স দেওয়া যেতে পারে। রাতে ব্যবহারযোগ্য এই লেন্স চোখের গঠন কিছু সময়ের জন্য পরিবর্তন করে। মায়োপিয়া কন্ট্রোল গ্লাস বা বিশেষ ধরনের কাচ ব্যবহার করা হয়, যা মায়োপিয়ার অগ্রগতি রোধে সাহায্য করে।
কিছু বিষয় মেনে চললে শিশুর মায়োপিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমে। প্রতিদিন অন্তত দুই ঘণ্টা সূর্যের আলোতে শিশুরা যাতে খেলাধুলা করতে পারে, সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ‘২০-২০-২০’ নিয়ম মেনে চলা অর্থাৎ প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ড ২০ ফুট দূরে তাকানো। বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করা। শিশুদের প্রতিদিনের স্ক্রিন ব্যবহার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাখা। পড়াশোনার সময় সঠিক আলো ও চোখের দূরত্ব যেন থাকে।
আরও পড়ুনব্র্যান্ডের গজ কাপড় সস্তায় কিনতে পারবেন যে গলিতে১৫ আগস্ট ২০২৫জটিলতাশিশুদের মায়োপিয়া বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে চোখে গুরুতর রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। উচ্চ মাত্রার মায়োপিয়া থাকলে চোখের পর্দা ছিঁড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। গ্লুকোমা অর্থাৎ চোখের ভেতরে চাপ বেড়ে যাওয়া ও স্নায়ু ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। রেটিনার কেন্দ্রীয় অংশের অবক্ষয়, যা স্থায়ী দৃষ্টিহানির কারণ হতে পারে। তুলনামূলকভাবে আগেভাগে চোখে ছানি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
শিশুদের ভালোভাবে না দেখতে পারা তাদের শিক্ষা, খেলাধুলা ও সামাজিক মেলামেশায় প্রভাব ফেলে। শ্রেণিকক্ষে বোর্ড স্পষ্ট না দেখতে পাওয়া ও মনোযোগ হারানোর সমস্যা হয়। চশমা পরলে এ নিয়ে লজ্জা বা উপহাসের শিকার হতে হয় শিশুদের। কিছু খেলা বা বাহ্যিক কাজে অংশ নিতেও পারে না। চোখের সমস্যা থাকলে শিশুদের উদ্বেগ, ক্লান্তি ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মতো সমস্যায় পড়তে হয়।
যথাযথ ব্যবস্থাপনা, নিয়মিত চোখের পরীক্ষা, জীবনধারায় পরিবর্তন, সঠিক চশমা ব্যবহার ও সঠিক চিকিৎসায় শিশুদের মায়োপিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শৈশবে মায়োপিয়ার যথাযথ ব্যবস্থাপনা না করলে তা শুধু চোখের নয়, মানসিক ও সামাজিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অধ্যাপক ডা.
ইফতেখার মো. মুনির, গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ ও পরিচালক, বাংলাদেশ আই হসপিটাল, মালিবাগ, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গ্রেপ্তার
কিশোরগঞ্জের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি উবায়দুর রহমান সেলিমকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার নতুন বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার সেলিম উপজেলার ইটনা সদর ইউনিয়নের পশ্চিমগ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি ইটনা উপজেলায় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর ইকবাল গ্রেপ্তারের তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে ঠিকাদারির টাকা নিতে এসে ছাত্রলীগ নেতা আটক
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেপ্তার
জাফর ইকবাল জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ইটনা থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার আসামি সেলিম। বিকালে আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঢাকা/রুমন/বকুল