দেশে আর চেতনার ব্যবসা চলবে না: সালাহউদ্দিন
Published: 20th, September 2025 GMT
আওয়ামী লীগের মতো ‘স্বাধীনতার পক্ষের-বিপক্ষের শক্তি’র বিষয় টেনে দেশের মানুষের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বিএনপি এটি সমর্থন করে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এই চেতনার ব্যবসা আর চলবে না।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এক জাতীয় সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ চার নেতা ‘আল্লামা শাহ আহমাদ শফী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী ও আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদীর নেতৃত্ব, ত্যাগ ও সংগ্রাম’ শীর্ষক এই জাতীয় কনফারেন্সের আয়োজন করে শায়খুল হাদীস পরিষদ।
সম্মেলনে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান নিয়েও চেতনার ব্যবসা না করার অনুরোধ জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করে, তারা জুলাইয়ের একমাত্র ধারক-বাহক, তাহলে আবার জাতির মধ্যে বিভক্তি আসবে। শুধু একটি শক্তিকেই স্বীকৃতি দিতে হবে, সেটি হলো ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য।
কয়েকটি দলের মাঠের কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সবকিছুর সমাধান আলোচনার টেবিলে হবে। টেবিলে আলোচনার পাশাপাশি মাঠের আন্দোলনে যাওয়া স্ববিরোধিতা। এমন কোনো নজির স্থাপন করা যাবে না, যা দুদিন টিকবে না। একই বিষয়ে যাতে দুই বছর পর আবার আন্দোলন করা না লাগে।
হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আপনাদের আগের এবং বর্তমান চাহিদা.
ইসলামপন্থী কয়েকটি দলের সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন, ইসলামের জন্য একটা আলাদা বাক্স বসিয়ে দাও (নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের সব ভোট এক বাক্সে আনার চেষ্টা), তো আমরা কি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেলাম নাকি ভাই সাহেব? আপনারা কি খারিজ হয়ে গেছেন? ইসলামের জন্য বাক্স নয়, এটা রাজনীতির বাক্স। রাজনীতি দিয়ে ইসলামের শক্তিকে বিভক্ত করা ঠিক নয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ৯০ থেকে ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে মানুষদের বিভক্ত রাখতে পারলে কাদের লাভ, সেটা বুঝতে হবে। সবাই যেন ঐক্যবদ্ধ থাকে। ইসলাম নিয়ে কেউ যেন বিভাজনের, বিভ্রান্তিকর রাজনীতি না করে।
আওয়ামী লীগের রক্তে কোনো দিন গণতন্ত্র ছিল না উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাদের ডিএনএ–তে গণতন্ত্র নেই। জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত তারা বাংলাদেশের পক্ষে রাজনীতি করেনি। যাদের পক্ষে তারা কাজ করেছে, তারা আজ তাদের আশ্রয় দিয়েছে। তাদের উৎপত্তি সেখানে, বিনাশও সেখানে হবে বলে আশা করা যায়।
সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, হেফাজতের এই চার নেতা (আহমাদ শফী, জুনায়েদ বাবুনগরী, নূর হুসাইন কাসেমী ও নূরুল ইসলাম জিহাদী) সঠিক তরিকার (ধারা) ওপর ছিলেন। সবাইকে তাদের তরিকার ওপর থাকার চেষ্টা করতে হবে। যারা বলে সাহাবায়ে কেরামদের অনুসরণ করা জরুরি নয়, তাদের কথা অনুসরণ করে চললে জাহান্নাম ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে হেফাজতে ইসলাম আবার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
উলামায়ে কেরামের মাঝে ইসলামবিরোধী শক্তি বিভক্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে উল্লেখ করে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাদের উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ইসলামের বিধিনিষেধগুলো মানার কারণে দেশের মানুষকে যাতে আর অন্যায়, জুলুমের শিকার হতে না হয়, সেই শপথ নিয়েই বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন শায়খুল হাদীস পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মাওলানা মাহফুজুল হক। সঞ্চালনা করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসান জুনায়েদ, সহ–সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক এবং প্রচার সম্পাদক আল আবিদ শাকির। এতে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করীম কাসেমী ও আজিজুল হক ইসলামাবাদী, আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ ব এনপ র ইসল ম র আল ল ম র জন ত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবি উপাচার্য-প্রক্টরসহ ৩ জনকে আইনি নোটিশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলে নিজের সিট ফিরে পাওয়াসহ তিন দফা দাবিতে উপাচার্য, প্রক্টর ও হলটির প্রাধ্যক্ষ বরাবর আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক শিক্ষার্থী।
ওই শিক্ষার্থী হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আলোচিত ভিপি পদপ্রার্থী জালাল আহমদ ওরফে জ্বালাময়ী জালাল।
আরো পড়ুন:
রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, উত্তাল রাতের ক্যাম্পাস
চাকসু: ৩ পদ শূন্য রেখে বামপন্থিদের ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট বেল্লাল হোসাইন (মুন্সী বেল্লাল) স্বাক্ষরিত এক আইনি নোটিশে তিনি ঢাবি প্রশাসনের কাছে তিন দফা দাবি জানান।
জালাল আহমদ অভিযোগ করে জানান, হলে বহিরাগত ও মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। এ সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের মদদে তার ওপর মব হামলাও চালানো হয়। কিন্তু তদন্ত ছাড়াই হল প্রাধ্যক্ষ তাকে বহিষ্কার করেন এবং প্রশাসন তার নামে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করে।
এর আগে, হলের রুমমেটকে মারধর এবং ভাঙা টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করার ঘটনায় জালাল আহমদ ওরফে জ্বালাময়ী জালালের বিরুদ্ধে ‘হত্যাচেষ্টা’ মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন এবং ২৭ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর আদালত জামিন মঞ্জুর করলে কারাগার থেকে মুক্ত হন জালাল।
ওই শিক্ষার্থীর দাবিগুলো হলো— হামলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি ও প্রশাসনের ক্ষমা প্রার্থনা; অবৈধভাবে বাতিল হওয়া তার বৈধ সিট ফেরত দেওয়া; বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বহিরাগত ও মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্ছেদ করা।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী