খুলনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গণপিটুনিতে আলমগীর হোসেন (৩৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে ফুলতলা উপজেলার জামিরা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আলমগীর ডুমুরিয়া উপজেলার টোলনা গ্রামের হায়দার আলী মোল্লার ছেলে। তাঁর মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। আজ রোববার সকাল পর্যন্ত ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল বিকেলে পাঁচ–ছয়জন মুখোশধারী মোটরসাইকেলে করে জামিরা বাজারের দুটি দোকানে গিয়ে চাঁদা দাবি করে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে তারা বাজারের মাদ্রাসা রোডে জামিরা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মোল্লাকে খুঁজতে থাকে। এ সময় তাঁকে না পেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গালাগাল করে। ঘটনার সময় হুমায়ুন কবির বাজারের মাছ আড়তে অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে তাঁর অনুসারীরা দোকানপাট বন্ধ করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, বিক্ষুব্ধ ওই ব্যক্তিরা বিকেলে পাশের টোলনা গ্রামের বাড়ি থেকে আলমগীরকে ধরে জামিরা চৌরাস্তা মোড়ে নিয়ে যান এবং গণপিটুনি দেন। খবর পেয়ে ফুলতলা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। একপর্যায়ে আলমগীর কিছু বলতে শুরু করলে পুলিশের সামনেই আবারও তাঁকে পিটুনি দেওয়া হয়।

ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলমগীরকে বাড়ি এনে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে জেনেছি। অসংখ্য মানুষ তাঁকে মারপিট করছিল। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়ছিল।’

ওসি জেল্লাল হোসেন আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিহত ব্যক্তি তাঁদের কাছে চাঁদা দাবি করেছিলেন। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি। কাউকেও আটক করা হয়নি। গণপিটুনি ঠেকানো গেল না কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘আমরা কয়েকজন পুলিশ আর তারা হাজার হাজার মানুষ। ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা গিয়েছি। এরই মধ্যে ঘটনাটি ঘটে যায়। আমরা তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণপ ট ন আলমগ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসেনি: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ দেশে যা কিছু ভালো, সবকিছু দিয়েছে বিএনপি। তাই নানা নির্যাতন-নিপীড়ন করেও দলটিকে কেউ বিলীন করতে পারেনি। এই দল ফিনিক্স পাখির মতো। একে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু সফল হয়নি। বরং ষড়যন্ত্রকারীরাই পালিয়ে গেছে। বিএনপি সেই দল, যারা উড়ে এসে জুড়ে বসেনি।

আজ শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের পুরোনো স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে এই নেতা বলেন, বর্তমানে দেশে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে এবং মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে বিএনপিকে। যাদের কাল জন্ম হয়েছে এবং যারা একাত্তর সালে ভিন্ন অবস্থানে কিংবা ভিন্ন জায়গায় ছিল—তারাও বিএনপিকে নিয়ে নানা কথা বলে। যা কিছু ভালো, তার সবকিছু বাংলাদেশে দিয়েছে এই বিএনপি। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিএনপি এই পর্যায়ে এসেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে যে সুযোগ এসেছে এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে—তা কাজে লাগাতে হবে। বিএনপি এ জন্য প্রস্তুত।

দেশ গঠনে বিএনপির অবদান তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, শহীদ জিয়া ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। এর আগে শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র চারটি পত্রিকা চালু রেখে সব পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দেন। তরুণদের এ কথাটা জানা দরকার। শহীদ জিয়ার স্বপ্ন ছিল একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করেন। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে আসেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ, কোষাধ্যক্ষ এম রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ওয়ারেছ আলী ও আরেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসেনি: মির্জা ফখরুল 
  • বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসেনি: মির্জা ফখরুল