ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছর অনুষ্ঠিত হলে ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ উত্তরদাতা ভোট দিতে যাবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আর সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেই ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতার।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং-এর ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ নিয়ে দ্বিতীয় দফার প্রথম পর্বের জরিপে এই ফলাফল উঠে এসেছে। আজ রোববার সকালে রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ইনোভেশন কনসাল্টিং-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াত সারোয়ার। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়। এতে অংশ নেয় ১০ হাজার ৪১৩ জন ভোটার।

জরিপে ফলাফলে দেখা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা। ৬৯ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে। ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা বিশ্বাস করেন, তাঁরা নির্ভয়ে ও নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন। তবে ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, গত ৬ মাসে চাঁদাবাজি বেড়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, পিআর পদ্ধতির বিষয়ে প্রবীণ প্রজন্মের তুলনায় নবীন প্রজন্ম অধিক সচেতন। আর এ বিষয়ে তাদের মনোভাব অধিক ইতিবাচক।

জরিপ অনুযায়ী, ভোটের সময় পুলিশ-প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রবীণ প্রজন্মের তুলনায় জেন-জি প্রজন্ম কম ইতিবাচক। অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছেন ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা। তবে স্বল্পশিক্ষিত উত্তরদাতাদের তুলনায় উচ্চশিক্ষিতরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজে কম সন্তুষ্ট। চাঁদাবাজি বেড়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। এ ছাড়া তাঁরা পিআর ব্যবস্থা সম্পর্কে বেশি সচেতন ও ইতিবাচক।

জরিপে উঠে এসেছে, সাধারণ উত্তরদাতাদের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে কম আগ্রহী। নির্বাচনের সময় নিয়েও তাঁদের দ্বিমত বেশি। চাঁদাবাজি বেড়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছেন ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে উচ্চশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইতিবাচক ধারণার হার কম। অন্যদিকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতার বিষয়ে তুলনামূলক কম ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ক প রজন ম কর ছ ন ফল ফল দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আশা সেনাবাহিনীর

অন্তর্বর্তী সরকার যে রূপরেখা তৈরি করেছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন হবে, তা সেনাবাহিনীও চাইছে। তারা মনে করছে, নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীল অবস্থা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। ওই সময়ে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর বলেন, ‘গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী মাঠে দায়িত্ব পালন করছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা ক্যান্টনমেন্টে ফিরে আসি।’

গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাওয়া সেনাবাহিনীকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সেনাবাহিনী এখন আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ। যে দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে, সেটা সেনাবাহিনী পালন করবে।’

সেনা কর্মকর্তা মাইনুর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে একটু ফিরে তাকান। ১৫ বছর যে আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যায়নি, সেনাবাহিনী এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালীর বন্যা, বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধসহ ... আমরা না থাকলে অবনতি কতটা হতো সেটি কেউ ধারণাও করতে পারবেন না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ