জলাবদ্ধতা এখন শুধু বড় শহরগুলোর সমস্যা নয়, জেলা-উপজেলা শহরেও এ সমস্যা এখন প্রকট হয়ে উঠেছে। সেখানকার খালগুলোও একের পর এক দখল ও দূষণের শিকার হতে থাকার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে একসময় প্রবাহিত ছিল শতবর্ষী একটি খাল। শহরের পানিনিষ্কাশনের প্রধান একটি মাধ্যম ছিল এটি। আজ সেই খাল প্রভাবশালী মহলের ব্যক্তিগত স্বার্থের বলি হয়ে তার অস্তিত্ব হারাচ্ছে। আর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার কারণে এ ঘটনা ঘটছে, যা খুবই দুঃখজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মুন্সিগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত শতবর্ষী একটি খাল ভরাট করে নালা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে খালটি একটি অংশ অস্তিত্ব হারিয়েছে। অবশিষ্ট অংশও দখল হওয়ার পথে। অভিযোগ উঠেছে, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান খালের একটি অংশ দখল করে বহুতল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। সে বাড়ি রক্ষা করতেই পৌরসভা কর্তৃপক্ষ খালটি ভরাট করে নালা নির্মাণ করে। ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল ৮৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯৪০ টাকা ব্যয়ে খালটির ওপর ১৫০ মিটার আরসিসি নালা নির্মাণ করা শুরু হয়। সরকারি টাকা ব্যবহার করে ব্যক্তিবিশেষের সুবিধার জন্য পরিবেশের এমন ক্ষতি করা এক চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয়।

খালটি দিয়ে একসময় বড় বড় নৌকা চলত। খালের পানি গোসল, রান্নাবান্নাসহ গৃহস্থালির সব ধরনের কাজে ব্যবহৃত হতো। খালটি দিয়ে মুন্সিগঞ্জ শহর ও কলেজপাড়া এলাকার বন্যা-বৃষ্টির পানি নামত। দুই বছর আগেও বর্ষায় কাদাযুক্ত ঘোলা জোয়ারে পানি ঢুকত খালটিতে। তবে খালের উৎসমুখসহ বিভিন্ন স্থান দখলে খালটি এখন ডোবায় পরিণত হয়েছে। যে যার মতো ভরাট ও দখল করেছে। খালটি ভরাট ও দখল হওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের প্রধান সড়কগুলোতে হাঁটুসমান পানি জমে যায়। সুপারমার্কেট, বাজার, হাসপাতাল, থানা সড়কসহ সব গুরুত্বপূর্ণ এলাকা জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে।

সহকারী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেনের বক্তব্য, এ প্রকল্পের কাজ বিগত সরকারের আমলে সবার সিদ্ধান্তে শুরু হয়েছিল এবং তাঁর কাজ শুধু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। কিন্তু দেখা গেল, বিগত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করে গেছেন তাঁরা। প্রকল্পটি বাতিল করার কোনো সদিচ্ছাও প্রকাশ পায়নি।

মুন্সিগঞ্জের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী শহরের শতবর্ষী খাল এভাবে হারিয়ে যাবে, তা কোনোভাবে মানা যায় না। আমরা আশা করব, নালাসহ সব অবৈধ ও পরিবেশবিরোধী স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালটি পুনরুদ্ধার করা হবে। শহরের পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা সচল করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর শহর র প

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাবের পোশাকে ২৫ লাখ টাকা ছিনতাই

সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাবের পোশাক পরে মোবাইল টেলিকম ব্যাংকিং ব্যবসার ২৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. সজীব হোসেন (২৭) র‌্যাব-১১ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

শনিবার (৮ নভেম্বর) সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এরআগে শুক্রবার দুুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের চিটাগাংরোড অংশে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযোগে সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে সজীব হোসেন কালো রঙের একটি অফিস ব্যাগের মধ্যে ২৫ লাখ টাকা নিয়ে গুলিস্তান হতে স্বদেশ পরিবহনে চড়ে মদনপুরস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

সড়কপথে দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২ টায় মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের চিটাগাংরোড সংলগ্ন সাজেদা ফাউন্ডেশনের সামনে পৌঁছালে সাদা রঙের একটি হাইএস মাইক্রোবাস ভুক্তভোগীকে বহন করা বাসটির গতিরোধ করে সামনে ব্যারিকেড দেন। 

এসময় মাইক্রোবাসে থাকা অজ্ঞাত পরিচয়ের চার ছিনতাইকারী ভুক্তভোগীকে বাস থেকে হাতকড়া পরিয়ে নামিয়ে নিজেদের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। ওই ছিনতাইকারীদের মধ্যকার দুইজন র‌্যাবের কটি ও দুইজন সিভিল পোশাকে ছিল। পরবর্তীতে সজীবের চোখে গামছা বেঁধে মারধর করে এবং তার সঙ্গে থাকা অর্থ ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

সজীব হোসেন জানান, দুর্বৃত্তরা আমাকে মারধর করার পর দুপুর ১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক ক্যানালপাড় এলাকায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রাখে পালিয়ে যান। পরে আমার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এসে আমাকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, একজন এসে ২৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি এসআই জহিরুল তদন্ত করবে। অভিযোগকারী এতো টাকা কোথায় পেলো এবং ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।

র‌্যাব-১১ এর কোম্পানি কমান্ডার মো. নাঈম উল হক বলেছেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে ইতোমধ্যে আমাদের একটি টিম কাজ করে যাচ্ছে। আমরা তদন্ত করছি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ