শাকসু নির্বাচনে কমিশন গঠনে গড়িমসির অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের একাংশের অবস্থান কর্মসূচি আজ
Published: 25th, September 2025 GMT
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (শাকসু) নির্বাচন আগামী নভেম্বরের প্রথমার্ধে আয়োজনের পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের। ১৪ সেপ্টেম্বর এ ঘোষণার পরপরই নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলছিলেন উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। এর প্রায় ১০ দিন পার হয়ে গেলেও কমিশন গঠনের ব্যাপারে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করার দাবিতে বেলা ১১টায় অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, দুটি কারণে নির্বাচন কমিশন এত দিন গঠন করা সম্ভব হয়নি। প্রথমত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্ধারণ করতে পারছে না প্রশাসন; দ্বিতীয়ত, ছাত্রদলের লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড চেয়ে ও দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সময় চেয়েছে। পাশাপাশি আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় সিন্ডিকেটের বৈঠক রয়েছে। এর আগেই শিক্ষার্থীরা কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী ও সহ-উপাচার্য সাজেদুল করিমের সঙ্গে গতকাল বুধবার বিকেল থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।
আরও পড়ুনশাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমতি নিয়ে দলীয় কর্মসূচি আয়োজন করা যাবে২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫প্রশাসন কোনো একটি পক্ষের দাবিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে গড়িমসি করছে কি না, এমন প্রশ্ন তুলে গতকাল ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালকের কাছে একদল শিক্ষার্থী অভিযোগ দেন। জানতে চাইলে গতকাল রাতে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক এছাক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আমার কাছে আসছিল, অভিযোগ দিচ্ছে যে কেন নির্বাচন কমিশন গঠন হচ্ছে না? শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ জানিয়েছে, কোনো পক্ষের ইন্ধনে এমন হচ্ছে কি না। আমি শিক্ষার্থীদের এই অভিযোগ ও উদ্বেগ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশন কখন হবে, তা কর্তৃপক্ষ জানে।’
নির্বাচন কমিশন গঠন না হওয়ায় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ থেকে শাকসুর সুর্নিদিষ্ট কোনো রোডম্যাপও প্রকাশ করা হচ্ছে না। কোনো একটি দলীয় গোষ্ঠীর স্বার্থে নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করছে।’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আজাদ শিকদার বলেন, ‘এখনো কমিশন গঠন না হওয়া নিয়ে প্রশাসনের ব্যাখ্যা কী? দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন না হলে আমরা মাঠে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আমরা প্রশাসনের গড়িমসিকে সন্দেহের চোখে দেখছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক পলাশ বখতিয়ার আজ বেলা ১১টায় অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘আমরা চাই আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই প্রশাসন নির্বাচন কমিশন গঠন করুক।’ অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতি স্থগিত ছিল। কোনো দৃশ্যমান ছাত্রসংগঠন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তাই পরীক্ষার পর আলোচনা সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময় দিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন কখন গঠন হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা
পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন
সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”
সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”
তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী