মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অ্যান্ড এক্সিবিশন (ডব্লিউ-আই-সি-ই) ২০২৫ এ স্বর্ণপদক অর্জন করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী।

ওই শিক্ষার্থী হলেন, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষবর্ষের মো. তোহা বিন আছাদ।

আরো পড়ুন:

একাডেমিক অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন বেরোবির ৪৭০ শিক্ষার্থী

খুবিতে নারীর সুরক্ষা-বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার সম্মাননা প্রদা

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে প্রতিযোগিতা শেষে তা হাতে এ পদক তুলে দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এ আসরে বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশ থেকে দেড় হাজারের মতো প্রতিযোগী বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে অংশ নেয়। সেখানে তোহা ও তার সহযাত্রী জাহিদ হাসান জিহাদ এবং তাদের দল ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ প্রকল্প নিয়ে অংশ নেন এবং আই-টি অ্যান্ড রোবোটিক্স-ক্যাটাগরিতে স্বর্ণপদক জয় করেন।

উদ্ভাবনী কাজে আগ্রহী এই তরুণ গবেষণামুখী শিক্ষার্থী সবসময়ই স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখার। তারই ধারাবাহিকতায় হেক্সাগার্ড রোভার প্রকল্পটি একটি উদ্ভাবনী রোবোটিক সিস্টেম, যা দুর্যোগকালীন উদ্ধারকাজ, নজরদারি এবং দুর্গম এলাকায় নিরাপত্তা কার্যক্রমে সহায়ক হতে পারে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবন রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

স্বর্ণপদক জয়ের অনুভূতি জানাতে গিয়ে দ্বীপ বলেন, “স্বর্ণপদক অর্জনের সেই মুহূর্ত ভাষায় প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন। বাংলাদেশের পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে যখন ঘোষণা করা হলো আমরা স্বর্ণপদক পেয়েছি, তখন মনে হয়েছিল—এটাই জীবনের অন্যতম গর্বের অর্জন। আমার পরিবার আনন্দে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আমার শিক্ষকরাও গভীর গর্ব অনুভব করেছেন এবং বলেছেন, এ অর্জন যবিপ্রবির জন্যও একটি সাফল্য। এটি শুধু একটি পদক নয় বরং বাংলাদেশের তরুণদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমি বিশ্বাস করি, এই সাফল্য আগামীতে দেশের আরো তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে।”

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ওপেন ওয়ার্ল্ডে পদক জয়ের অভিজ্ঞতার কথা জানাল বাংলাদেশের পদকজয়ীরা

রাশিয়ার সোচি শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ৬ প্রতিযোগী অর্জন করেছে একটি স্বর্ণপদক, দুটি রৌপ্যপদক, একটি ব্রোঞ্জ ও সম্মানসূচক স্বীকৃতি।

চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডে বিশ্বের ২০টি দেশের ৯০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পদকজয়ীরা তাঁদের অনুভূতির কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সংগঠনের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

বাংলাদেশ দলের হয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেন যশোরের পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মখদুম আমিন ফাহিম। অনুভূতি প্রকাশ করে এই শিক্ষার্থী বলেছে, ‘এমন কিছু যেটা কখনো কেউ অর্জন করতে পারেনি। দেশের জন্য সেটা বয়ে নিয়ে আসা সত্যিই অসাধারণ অনুভূতির।’ এই অর্জনের কৃতিত্ব ফাহিম নিজের বিদ্যালয়, পরিবার এবং বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনকে দিয়েছে।

প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নতুনদের উদ্বুদ্ধ করে মখদুম আমিন ফাহিম বলে, অ্যাস্ট্রোনমিতে ভালো করতে গেলে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে ভালো জ্ঞান থাকা বাধ্যতামূলক। থাকতে হবে লেগে থাকার মানসিকতা।

রৌপ্যপদক জেতা ঢাকার হিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এ লেভেল শিক্ষার্থী সপ্তর্ষি রহমান ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রাদিত রাইয়ানের কণ্ঠেও ছিল আনন্দের সুর।

এর আগে অনেক পুরস্কার পেলেও এবারের রৌপ্যপদক অর্জনকে বিশেষ বলে মন্তব্য করেছে সপ্তর্ষি রহমান। সে জানিয়েছে, ‘ওপেন ওয়ার্ল্ডের পুরস্কারটা একটু স্পেশাল। কারণ এই অর্জন শুধুই নিজের নয়, বরং এতে নিজ দেশকেও তুলে ধরা হয়েছে।’ এই অর্জন পুরো বাংলাদেশের বলে মনে করে সপ্তর্ষি।

মো. রাদিত রাইয়ান বলেছে, ‘প্রতিটি পরীক্ষার আগে এই অনুভূতি ছিল, দেশের জন্য কিছু করতে হবে। এমন একটা স্থানে নিজ দেশকে উপস্থাপন করতে পারাটা আনন্দদায়ক।’ অন্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে নিজ দেশের সংস্কৃতি বিনিময় করার অভিজ্ঞাতাও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছে এই শিক্ষার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের হোসেন জিসান এবং সম্মানসূচক স্বীকৃতি পাওয়া খুলনার সাউথ হেরাল্ড ইংলিশ স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়ন্তন রায়।

চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের বাছাইপ্রক্রিয়া

রাশিয়ায় অংশগ্রহণের আগে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের ২০তম আসর আয়োজন করে। প্রাথমিকভাবে দেশের জেলা ও বিভাগীয় স্তরে দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই রাউন্ড থেকে বাছাইকৃত ৩০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের আয়োজন করে। সর্বশেষ পর্যায়ে ৩০ জনকে নিয়ে ক্লোজড ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ক্লোজড ক্যাম্প শেষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৬ জনকে রাশিয়ার প্রতিযোগিতার জন্য বাছাই করা হয়।

বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন বলেন, এবারের প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করানোটা কঠিন ছিল। তবে শিক্ষার্থীদের সাফল্যে তাঁরা নতুন করে কাজের উদ্যম খুঁজে পেয়েছেন।

চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড ২০২৫–এ অংশ নেওয়া ছয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে দলনেতা বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন (মাঝে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওপেন ওয়ার্ল্ডে পদক জয়ের অভিজ্ঞতার কথা জানাল বাংলাদেশের পদকজয়ীরা