দুবাইয়ের আকাশ আজ ভিন্ন এক উত্তেজনায় থরথর করছে। মরুর বুকে আলোকোজ্জ্বল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম রূপ নিচ্ছে এক মহারণের মঞ্চে। আজ রাত সাড়ে আটটায় মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ আর পাকিস্তান। আনুষ্ঠানিকভাবে নাম দেওয়া না হলেও ম্যাচটি আসলে এক অলিখিত সেমিফাইনাল। কারণ, জিতলেই ফাইনাল, হারলেই বিদায়।

ভারত ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছে ফাইনালের টিকিট। তাই আজকের ম্যাচের জয়ী দল সরাসরি তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠবে শিরোপার লড়াইয়ে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত

বিসিবি নির্বাচন: তামিমের কাউন্সিলরশিপসহ ৩০ আপত্তি জমা

সংখ্যার হিসাব ঘাটলে পাকিস্তান এগিয়ে অনেক দূর। দুই দলের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ২৫ দেখায় পাকিস্তান জয় পেয়েছে ২০ বার। বাংলাদেশের সাফল্য মাত্র ৫টিতে। নিরপেক্ষ ভেন্যুতেও পাকিস্তানের দাপট বেশি। ৮ জয় বনাম বাংলাদেশের একটিমাত্র সাফল্য। তবে সাম্প্রতিক পাঁচ লড়াইয়ে ব্যবধান কিছুটা হলেও কমেছে: পাকিস্তান জিতেছে ৩টিতে, বাংলাদেশ জিতেছে ২টিতে।

সবশেষ লড়াইটা কিন্তু মনে কষ্টই জাগায়। গত ২৫ জুলাই পাকিস্তান হারিয়েছে বাংলাদেশকে ৭৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।

ভারতের বিপক্ষে ব্যর্থতার পর এই ম্যাচে টাইগার একাদশে আসতে পারে একাধিক পরিবর্তন। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরতে পারেন নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাস। একইসঙ্গে সুযোগ পেতে পারেন পেসার তাসকিন আহমেদ আর অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুরুটা দারুণ হলেও ভারতের কাছে হারের পর এই ম্যাচটাই এখন বাঁচা-মরার লড়াই।

অন্যদিকে পাকিস্তানও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই এসেছে এশিয়া কাপে। ভারতের কাছে হেরে সুপার ফোর শুরু করলেও লঙ্কানদের বিপক্ষে জিতে তারা ফিরেছে জয়ের ছন্দে। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শাহিন শাহ আফ্রিদি বলেছেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে ভালো ক্রিকেট খেলছে। ওদের হারাতে হলে নিজেদের প্রতিটি বিভাগেই সেরা খেলতে হবে।”

আজকের লড়াই যেন নিছক একটি ম্যাচ নয়- এ যেন স্বপ্ন, আবেগ আর অদম্য লড়াইয়ের প্রতীক। মরুর বুকে ঝলমলে আলোর নিচে আজ গর্জে উঠবে দুই দলের স্বপ্নযাত্রা। এক পাশে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা ও দাপট। অন্য পাশে বাংলাদেশের তরুণ তেজ আর নতুন ইতিহাস লেখার আকাঙ্ক্ষা।

রাতের আকাশে যখন সাদা বল উড়বে, প্রতিটি শট, প্রতিটি ডেলিভারি হয়ে উঠবে একেকটি কবিতার চরণ। জয় যে কেবল পরিসংখ্যানের মুকুট নয়, জয় মানে এক জাতির উল্লাস, আরেক জাতির আক্ষেপ। সেই কবিতার শেষ পঙ্‌ক্তি কে লিখবে- বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তান? উত্তর মিলবে আজ রাতেই, দুবাইয়ের মরু-মঞ্চে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে। 

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা

পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন

সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”

সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”

তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”

তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ