নির্বাচ‌নের জন‌্য প্রস্তুত মন্তব‌্য ক‌রে নির‌পেক্ষ সরকা‌রের অধী‌নে জাতীয় নির্বাচনের দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছেন জাতীয় পা‌র্টি একাং‌শের চেয়ারম‌্যান গোলাম মোহম্মদ কা‌দের।

শনিবার (৪ অক্টোবর) ঢাকা রি‌পোর্টার্স ইউ‌নি‌টিতে জাতীয় ম‌হিলা পা‌র্টির ব‌র্ধিত সভায় তি‌নি এ দা‌বি ক‌রেন।

আরো পড়ুন:

‘বিভ্রান্তি ছড়ালে জিএম কা‌দে‌রের বিরু‌দ্ধে আইনগত ব্যবস্থা’

বিএনপি-জামায়াতসহ নিবন্ধনহীন দলও সরকারি সুযোগ ভোগ কর‌ছে: জিএম কাদের

চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হেনা খান পন্নীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছি‌লেন জিএম কাদের। বি‌শেষ অতিথি ছি‌লেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

এ সময় বক্তব‌্য রা‌খেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান  রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, শেরীফা কাদের, রেজাউল ইসলাম ভূঁঞা, আলমগীর সিকদার লোটন, ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস, মো.

মমতাজ উদ্দিন, নুরুন নাহার বেগম।

জি এম কাদের ব‌লেন, “আমরা নির্বাচ‌নের প্রস্তু‌তি নি‌চ্ছি।  আমরা বল‌তে চাই, যে প‌রি‌স্থি‌তি সাম‌নে দাঁড়ি‌য়ে আছে, তা‌তে আমা‌দের সাম‌নের দি‌কে খেয়াল কর‌তে হ‌বে। প‌রিস্কারভা‌বে আমা‌দের দা‌বি থাক‌বে, আমরা চাই, নির‌পেক্ষ সরকা‌রের অধী‌নে নির্বাচন হোক। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন শুধুমাত্র নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই সম্ভব।”

শেখ হাসিনা খারাপ নির্বাচন করেছেন, এখনও ভালো নির্বাচনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না মন্তব‌্য ক‌রে জিএম কা‌দের ব‌লেন, “আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নামে প্রহসন হতে যাচ্ছে। সরকারি দলের সঙ্গে আধা সরকারি দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে। তাই এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না, দেশ স্থিতিশীল হবে না।”

জাপা সব সময় হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে গেছে জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টি কখনো দোসর ছিল না। যারা দোসরের কাজ করেছে, তারা দল থেকে চলে গেছে।”

উপস্থিত ছিলেন চেয়াম্যানের উপদেষ্টা লাকী বেগম,  খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, আক্তার হোসেন দেওয়ান, এম এ সোবহান, মো. হুমায়ুন খান, যুগ্ম মহাসচিব শামীম আহমেদ রিজভী, দ্বীন ইসলাম শেখ, মীর শামসুল আলম লিপটন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান এবং দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ এম ক দ র প ক ষ সরক এম ক দ র জ এম ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসু: ছাত্রদলের প্যানেল থেকে লড়বেন জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ অনিক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে আলোচিত এক নাম অনিক কুমার দাস। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ মাস জীবন-মৃত্যুর লড়াই পেরিয়ে ওঠা এই শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে।

অনিক ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সম্মুখসারির কর্মী। ১৬ জুলাই ঢাকার সিএমএম কোর্টের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার খাদ্যনালী ভেদ করে শরীরের অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেলে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়।

আরো পড়ুন:

তারেক রহমানের জন্মদিনে ছাত্রদলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

কিন্তু ৩১ জুলাই তাকে হাসপাতাল থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হলে অবস্থার আরো অবনতি হয়। ১১ আগস্ট ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে অনিক বলেন, “আন্দোলনের প্রথমদিন থেকেই উন্মুক্ত লাইব্রেরি থেকে আমরা কার্যক্রম শুরু করি। পরে ১১ জুলাই সিনিয়রদের সরে যাওয়ার ঘোষণার পর আমরা কয়েকজন নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট ভেঙে শাহবাগে পৌঁছাই। ১৪ ও ১৫ জুলাই পুলিশের ব্যারিকেড পেরিয়ে টিএসসিতে অবস্থান নিই, সেদিন ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলারও শিকার হই।”

তিনি বলেন, “১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে এগোতেই সিএমএম আদালতের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বন্দুক দিয়ে হামলা করে। পাল্টা ধাওয়া দিতে গেলে একটি গুলি এসে আমার পেটে লাগে। এরপর টানা ৩ মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছি।”

ছাত্রদলের প্যানেলে যুক্ত হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা, জবিকে নিয়ে তাদের ইতিবাচক চিন্তা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার তাকে অনুপ্রাণিত করেছে।

নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে অনিক বলেন, “এটা সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশ্বাসের বিষয়। আমি সবসময় তাদের ন্যায্য দাবির পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি, বাকিটা তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।”

বিজয়ী হলে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাই হবে প্রথম দায়িত্ব। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ২০২৪-এর ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাবো, যেন ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচারী শক্তি শিক্ষাজীবন বিপন্ন করতে না পারে।”

গত ৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

১৯–২০ নভেম্বর ছিল বাছাই, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৪–২৬ নভেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে। 

৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর চলবে প্রচারণা। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ২২–২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে ফলাফল।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ