প্রবীণ রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদের অবস্থা সংকটাপন্ন। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ায় বিব্রত পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, তিনি এখন পর্যন্ত বেঁচে আছেন।

মৃত্যু নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধ করেছেন তোফায়েল আহমেদের জামাতা ডা.

তৌহিদুজ্জামান তুহিন। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তোফায়েল আহমেদের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁর অবস্থার তেমন পরিবর্তন নেই। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্র কাজ করছে। পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তাঁরা।

পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, ৮২ বছর বয়সী তোফায়েল আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন। ২০২৪ সালের শুরু থেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে বাসা থেকে বের হওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে কয়েক দফায় হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

তোফায়েল আহমেদ ১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি ছিলেন। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মাত্র ২৭ বছর বয়সে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি নয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাধিকবার মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা রেখে দেশজুড়ে পরিচিতি পান তোফায়েল আহমেদ। তিনি আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত ফ য় ল আহম দ র র অবস থ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

লেভানদোভস্কির হ্যাটট্রিক, দারুণ জয়ে রিয়ালের সাথে ব্যবধান কমাল বার

রিয়াল মাদ্রিদের ড্রয়ের সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে বার্সেলোনা। রবার্ট লেভানদোভস্কির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে কাতালানরা রবিবার রাতে (০৯ নভেম্বর) ৪-২ ব্যবধানে হারিয়েছে সেল্টা ভিগোকে। আর এই জয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে তারা মাদ্রিদের ঠিক পরেই অবস্থান নিয়েছে। পয়েন্ট ব্যবধান কমে হয়েছে মাত্র তিন।

এক মাসের ইনজুরির বিরতি শেষে গত সপ্তাহেই বদলি হিসেবে মাঠে ফিরেছিলেন লেভানদোভস্কি। আর এই ম্যাচেই যেন জানিয়ে দিলেন- তিনি ফিরে এসেছেন নিজের পুরোনো ছন্দে। সেপ্টেম্বরের পর এই প্রথম গোল পেলেন, তাও একসঙ্গে তিনটি!

তার প্রথম গোল আসে ম্যাচের ১০ মিনিটেই। ফেরমিন লোপেজের শটে হাত ছোঁয়ান মার্কোস আলোনসো, পেনাল্টি পায় বার্সা। রাদু ঠিক দিকেই ঝাঁপিয়েছিলেন। কিন্তু লেভানদোভস্কির জোরালো শট ঠেকানো অসম্ভব ছিল।

পেনাল্টির এক মিনিটেরও কম সময় পরই র‍্যাশফোর্ডের পা থেকে আরেকটি সুযোগ আসে। কিন্তু তার শট ফিরিয়ে দেন রাদু। আর মাত্র ১৯ সেকেন্ড পরই সেই সুযোগ কাজে লাগায় সেল্টা। বার্সার উচ্চ রক্ষণভাগ পেরিয়ে বোরহা ইগলেসিয়াসের থ্রু পাসে এগিয়ে গিয়ে গোল করেন সের্হিও কারেইরা। কিন্তু ৩৭ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় বার্সা। ডান দিক থেকে র‍্যাশফোর্ডের নিখুঁত ক্রসে গোলমুখে দাঁড়িয়ে থাকা লেভানদোভস্কি শুধু ছোঁয়াটুকু দেন, বল জড়িয়ে যায় জালে।

তবে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে আবারও সমতায় ফেরে সেল্টা। এবার বক্সের বাইরে থেকে ইগলেসিয়াসের নেওয়া শটে কোনোভাবেই হাত লাগাতে পারেননি বার্সার গোলরক্ষক শেজনি। কিন্তু হাফটাইমের আগেই আবার এগিয়ে যায় বার্সা। র‍্যাশফোর্ডের ক্রস ডিফ্লেক্ট হয়ে যায় ইয়ামালের সামনে। আর ১৭ বছর বয়সী এই বিস্ময়বালক ঠান্ডা মাথায় বল পাঠিয়ে দেন জালের ভেতর।

বিরতির পর র‍্যাশফোর্ড ও দানি ওলমো- দু’জনেই চেষ্টা চালিয়ে যান। অবশেষে ৭৩ মিনিটে আসে সেই মুহূর্ত। র‍্যাশফোর্ডের ইনসুইং কর্নারে নিখুঁত হেডে বল জালে পাঠান লেভানদোভস্কি। পূর্ণ করেন নিজের হ্যাটট্রিক।

এই মৌসুমে এটাই তার নবম গোল, আর বার্সার জার্সিতে এক বছরেরও বেশি সময় পর প্রথম হ্যাটট্রিক। ইংলিশ তারকা র‍্যাশফোর্ডের এটি ছিল মৌসুমের ষষ্ঠ অ্যাসিস্ট। লা লিগায় ইয়ামাল বা ভিনিসিউস জুনিয়রের চেয়েও ভালো রেকর্ড।

ম্যাচের একদম শেষ দিকে ফ্রেংকি ডি ইয়ং দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন, যা বার্সার এই দুর্দান্ত জয়ের একমাত্র দুঃখের দিক। তবুও দিনের শেষ হাসিটা বার্সেলোনারই। মাদ্রিদের হোঁচট, লেভার জাদু আর র‍্যাশফোর্ডের ছোঁয়ায় কাতালানরা যেন ঘোষণা দিল- লা লিগার লড়াই জমিয়ে তুলেছে তারা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ