‘আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে’ শুনেই সাংবাদিককে ডেকে প্রশ্ন নিলেন উপদেষ্টা
Published: 8th, October 2025 GMT
ধীরে ধীরে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে-এমন মন্তব্য শুনেই সাংবাদিককে ডেকে মাইকে প্রশ্নটি আবার করতে বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পরে হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে সেই প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) ২০টি নতুন গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে ৩ পাহাড়ি নিহত, মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য আহত
রাকসু-চাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি নতুন ২০টি গাড়ির চাবি ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পুলিশের যানবাহনের স্বল্পতা দীর্ঘদিনের সমস্যা। সম্প্রতি সরকারিভাবে ২০০টি গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। এরপরও প্রয়োজন অনুযায়ী গাড়ির ঘাটতি রয়ে যাবে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে ফাইন্যান্স ও শিল্প উপদেষ্টার সহায়তায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, চলতি বছর আরো বেশ কিছু গাড়ি ক্রয় করা সম্ভব হবে।”
তিনি জানান, ঢাকার ৫০টি থানার মধ্যে ২৫টি এখনও ভাড়া ভবনে চলছে। সম্প্রতি পাঁচটি নতুন থানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে এবং আরো দুটি থানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এ সময় এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ডিএমপি কমিশনার স্বল্প জনবল নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে কিছু মহল নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য ঝটিকা মিছিল ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড করছে-এগুলো কেন ঠেকানো যাচ্ছে না?”
প্রশ্নটি শুনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা থেমে যান। এরপর তিনি সাংবাদিককে ডেকে বলেন, “ভাই, প্রশ্নটা মাইকে করুন— সবাই শুনুক।”
সাংবাদিক প্রশ্নটি পুনরায় করলে উপদেষ্টা হেসে বলেন, “আপনি দেখেন, ভাই! একটা ভালো কথা বলতে বলতেও শেষে খারাপ কথা মুখে চলে আসে— অভ্যাসটা কিন্তু দূর হতে সময় লাগে।”
তার এ মন্তব্যে অনুষ্ঠানস্থলে হাসির রোল পড়ে। পরে তিনি বলেন, “আপনার কথাটা সত্য। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সত্যিই উন্নতি করছে। ঝটিকা মিছিলের সংখ্যাও কমছে। সম্প্রতি ২৪৪ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তারের পর এ ধরনের ঘটনার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। গণমাধ্যম যদি ইতিবাচকভাবে সহযোগিতা করে, তাহলে এসব একসময় সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।”
তিনি আরো বলেন, “সবাই যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন এই ধরনের অপরাধ আরো কমে যাবে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে ঠিকই, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত থাকবে। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে কাজ করলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।”
জনগণকে ‘সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার’ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “জনগণ নির্বাচনের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। এখনই চায়ের দোকানে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আপনারা (গণমাধ্যম) প্রচার করলে এই আলোচনা আরো বাড়বে, আর সচেতনতাও বৃদ্ধি পাবে।”
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট প রস ত অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তিন ভাগে মোতায়েনের পরিকল্পনা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিন ভাগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচনের সময় তাঁরা এ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠক শেষে ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
ইসি সচিব বলেন, একটি ভাগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে ‘স্ট্যাটিক’ দায়িত্ব পালন করবেন। আরেকটি ভাগে থাকবে মোবাইল ফোর্স। তারা ভ্রাম্যমাণ বা স্থায়ী চেকপোস্টে দায়িত্বে পালন করবে। আরেকটি ভাগে থাকবে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ফোর্স। ইসি থেকে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে ‘লিড মিনিস্ট্রি’ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, ইসি সার্বিকভাবে মনিটরিং ও সমন্বয়ের বিষয়টা দেখবে। ইসি কেন্দ্রীয়ভাবে একটি মনিটরিং সেল করবে।
সেনাবাহিনীর বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল পাওয়ার (ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা) আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। তারা সেটা পালন করবে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব সমপদমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব সমপদমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ১১ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।