কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে মুঠোফোনের সিম কার্ড দেওয়া হচ্ছে। আজ সোমবার কর্মসূচির প্রথম দিন সিম কার্ড পেয়েছেন ১০০ রোহিঙ্গা নেতা। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দৈনিক অন্তত ৫০০ জন রোহিঙ্গাকে সিম দেওয়া হবে।

আজ দুপুরে উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে সিম কার্ড বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের সংগঠন ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাংয়ের (ইউসিআর) সভাপতি এবং নির্বাহী কমিটির সদস্যদের কাছে সিম কার্ড হস্তান্তর করেন।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে আরআরআরসি কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম ধাপে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরের ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে সিম দেওয়া হবে। এরপর অন্য রোহিঙ্গাদের সিম বিতরণ করা হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরবর্তী কয়েক মাসে এসেছে অন্তত ৮ লাখ রোহিঙ্গা। এত দিন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি মুঠোফোন কোম্পানির সিম ব্যবহারের অনুমতি ছিল না।

আরআরআরসির কমিশার মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের হাতে থাকা (ব্যবহৃত) সব অবৈধ সিম ব্লক করা হবে। আশ্রয়শিবিরে বৈধ সিম ব্যবহারের অনুমতি পাচ্ছেন ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে রোহিঙ্গারা। ফলে আইনের শাসন বজায় রাখা, অপরাধমূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ এবং অবৈধ সিম ব্যবহার করে পরিচালিত অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব হবে। প্রযুক্তিগত নজরদারি বৃদ্ধির ফলে আশ্রয়শিবিরে মাদক চোরাচালান ও সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ হবে।

রোহিঙ্গা নেতা কামাল হোসেন বলেন, ১০-১৫ বছর ধরে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সিম কিনে মুঠোফোনে ব্যবহার করছেন। আশ্রয় শিবিরে ইন্টারনেটও পাওয়া যায়। ফলে অবৈধ ব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। অবৈধ সিম ব্লক করে রোহিঙ্গাদের বৈধ সিম প্রদান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

যেভাবে মিলবে সিম

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) আওতাধীন দেশের চারটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠান রোহিঙ্গাদের সিম দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিম নিতে হলে যেকোনো ব্যক্তির প্রথমে জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখাতে হয়। তারপর বায়োমেট্রিক নিবন্ধন প্রয়োজন হয়। যেহেতু রোহিঙ্গাদের সে ধরনের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাই তাদের সিম দেওয়ার ক্ষেত্রে বিকল্প উপায় ব্যবহার করা হচ্ছে। মোবাইল অপারেটররা রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ভিন্ন নম্বর সিরিজ রেখেছে। জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) কাছে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন নম্বর রয়েছে। যেটাকে সাধারণত ‘প্রগ্রেস আইডি’ বলা হয়। সে আইডির বিপরীতে ১৮ বছরের বেশি বয়সী রোহিঙ্গাদের সিম দেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের বৈধ সিম কার্ড দিল সরকার 

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের হাতে প্রথমবারের মতো বৈধ টেলিটক সিম কার্ড তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর ফলে অবৈধ সিম ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধ করার প্রবণতা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে প্রথম দফায় উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাংয়ের (ইউসিআর) সভাপতি ও নির্বাহী কমিটির সদস্যদের হাতে বৈধ টেলিটক সিম কার্ড বিতরণ করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান।

আরআরআরসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার সিম কার্ড বিতরণ করা হবে। পরে ধীরে ধীরে অন্যান্য রোহিঙ্গা শিবিরেও এ কার্যক্রম বিস্তৃত করা হবে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেছেন, “রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত সব অবৈধ সিম কার্ড বন্ধ করে কেবল বৈধ সিম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে। এটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ প্রতিরোধ ও অবৈধ যোগাযোগ বন্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

ঢাকা/তারেকুর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের বৈধ সিম কার্ড দিল সরকার