গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা বাতিলের দাবি
Published: 12th, January 2025 GMT
শিল্প কারখানায় নতুন করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকে আত্মঘাতী হিসেবে দেখছে ইন্ডাষ্ট্রি এক্সিকিউটিভ ফোরাম (আইইএফ)। এ পরিকল্পনা বাতিল করা এবং চলমান গ্যাস সংকট নিরসন করে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। শনিবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়।
আইইএফ হচ্ছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহীদের প্ল্যাটফর্ম। আজই এ ফোরামের আত্মপ্রকাশ হয়। শিল্প ও শ্রমিক কর্মকর্তাদের স্বার্থে কাজ করবে এ ফোরাম। বস্ত্র ও পোশাক, সিরামিক খাতসহ বৃহৎ অন্যান্য শিল্প খাতের প্রতিনিধিরা রয়েছেন এ ফোরামে।
‘শিল্পোৎপাদন, সাশ্রয়ী জ্বালানি, কর্মসংস্থান ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন যমুনা গ্রুপের হুরাইন হাইটেক ফেব্রিকের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মো.
বর্তমানে শিল্প কারখানার বড় সংকট হিসেবে গ্যাস পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন বক্তারা। তারা বলেন, ২০১৯ সাল থেকে দ্রুত এবং ঘনঘন গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় ২০২২ এর জুনে ১৫ দশমিক ৫২ শতাংশ, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৮৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২০২৪ এর ফেব্রুয়ারিতে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মে মাসে ২ দশমিক ৪৪ বাড়ানো হয়। সে সময়ে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের প্রতিশ্রুতি, শিল্পের প্রতিষ্ঠানের চাহিদা, পণ্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বাধ্যবাধকতা এবং সর্বোপরি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে শিল্প মালিকেরা মূল্যবৃদ্ধি মেনে নেন। যদিও এ কারণে উৎপাদনের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দেশের অনেক শিল্প কারখানা বন্ধ হয়েছে। কিছু কারখানা বন্ধের পথে রয়েছে।
সভায় গ্যাস সমস্যা সমাধানে আইইএফ বেশকিছু প্রস্তাবনা সরকারের বিবেচনার জন্য তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- গ্যাস বিক্রি করে মুনাফার চেষ্টা না করা, এলএনজি আমদানি থেকে শুল্ক-কর প্রত্যাহার। দ্রুততম সময়ে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করে মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পর্যালোচনা করা ও গ্যাসরে ওপর চাপ কমাতে শিল্পে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার নিশ্চিত করা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
দেশের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে গত কয়েক বছর ধরে স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করছে সরকার।
এরই অংশ হিসেবে পৃথক তিনটি কোটেশনের মাধ্যমে আগামী মে, জুন ও জুলাই মাসের জন্য এই তিন কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব তিনটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল
নতুন বছরের আগ মুহূর্তে কেরোসিন-ডিজেলের দাম কমল
সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে ১ কার্গো (২২-২৩ মে ২০২৫ সময়ে ২০তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার মে মাসের জন্য ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তব আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৫টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এই এক কার্গো এলএনজি সংগ্রহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.১৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা।
সূত্র জানায়, একই প্রক্রিয়ায় জুন মাসের অন্য এক কার্গো এলএনজির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এবং প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপ্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড এই ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.২৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪০ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার ১২৮ টাকা।
সভায় জুলাই মাসের জন্য ও এক কার্গো এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৬টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের প্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমবিটিইউ প্রতি এমবিবিইটএইউ ১১.৩৫৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ