বড় বড় ব্যবসায়ীরা ধ্বংসাত্মক কাজের পরিকল্পনা করছেন: অলি আহমেদ
Published: 13th, January 2025 GMT
এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, হাসিনার লোটা বাহিনীর বড় বড় ব্যবসায়ীরা টেলিফোন ব্যবহার করে হাসিনার সঙ্গে কথা বলছেন, ভারতের সঙ্গে কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের যারা লোটা বাহিনী সচিবালয়ে আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। বিভিন্ন জায়গায় যারা আত্মগোপনে আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন, গুপ্ত হত্যা, ক্ষতিকর কাজ করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা ধ্বংসাত্মক কাজের পরিকল্পনা করছেন।
সোমবার মগবাজারে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
অলি আহমেদ বলেন, হাসিনার লোটা বাহিনীর সদস্য আমলা আর ব্যবসায়ীরা যারা হাসিনাকে বলেছিল এখনও আছি, বিগত দিনেও ছিলাম আর ভবিষ্যতেও থাকবো তাদের রাজনীতিবিদরা শেল্টার দিচ্ছে, তাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। তাদের পাশে অফিস করছে। নির্লজ্জভাবে এ কাজগুলো করছি। কিন্তু এই আমলা আর বড় বড় ব্যবসায়ীরা যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এ দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই। ব্যবসায়ীরা হাসিনাকে বলেছিল, মরার পরেও তারা পাশে থাকবেন তাদের শুধু জেলে নিলে হবে না, তাদেরকে আধাঘণ্টা উল্টানোর ব্যবস্থা করে তাদের কাছে লুণ্ঠনের টাকা ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ টাকা জনগণের আর এটি উদ্ধারের দায়িত্ব সরকারের।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের রেষারেষি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কর্নেল অলি বলেন, এটা দুঃখজনক। জাতীয় রাজনীতি করলে সব কথার উত্তর প্রকাশ্যে দিতে হয় না। নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা চলছে। নতুন দল আসুক কিন্তু রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নয়।
ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী সব চুক্তি স্থগিতের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কারো তদারকিতে বাংলাদেশ চলবে না। জনগণকে অসহায় অবস্থায় রেখে যেতে চাই না। কোনো দল বা মন্ত্রীর সেবা দাস হয়ে কাজ করব না।
এলডিপির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আপাতত বিএনপির সঙ্গে আছি। বিএনপিকে বলবো সমমনা দলগুলোকে ডেকে একটা সমন্বিত কর্মসূচি দেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিয়ে বলেন এই সময়ের মধ্যে আপনারা কাজ সম্পন্ন না করলে আপনাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নামব।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।