জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আশ্বাস পেয়ে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে আগামী বুধবার অনুষ্ঠেয় মন্ত্রণালয়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ‘শাটডাউনের’ আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ের সামনে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করা এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা দেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার সকাল থেকে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

এ কে এম রাকিব বলেন, ‘বুধবার মন্ত্রণালয়ের সভায় প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হবে বলে আশ্বাস পেয়েছি। এ ছাড়া অস্থায়ী আবাসনের বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের তিনটি দাবির মধ্যে দুটি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।’ তিনি বলেন, অনশন প্রত্যাহার করা হলেও ক্যাম্পাস শাটডাউন থাকবে। বুধবারের সভার সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করেই তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, কিছুক্ষণ আগে একটা চিঠি এসেছে। সেই চিঠিতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। বুধবার মন্ত্রণালয়ের সভা হবে। সেখানে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর করা হবে। এ ছাড়া সেখানে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতার বিষয়ে আলোচনা হবে।

এই তিন দফা দাবিতে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে আটটা থেকে শিক্ষার্থীরা গণ-অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। গতকাল রাতে অনশনরত অবস্থায় শিক্ষার্থীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের অনেককে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আজ সকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন। ক্যাম্পাসের মূল ফটক, প্রশাসনিক ভবন ও বিভিন্ন অনুষদের ভবনে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দেন। বলেন, বিকেল চারটার মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না এলে তাঁরা সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করবেন।

এরই ধারাবাহিকতায় বিকেল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অনশনকারী অসুস্থ শিক্ষার্থীরা রিকশায় এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা হেঁটে যাত্রা করেন। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সচিবালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

আরও পড়ুন৩১ ঘণ্টা ধরে অনশনে জবির শিক্ষার্থীরা, কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা৪ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।

স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ
  • বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে