সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নিয়োগ পরীক্ষার নানা সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন গত বছর। পিএসসি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা আর চায় না। তাই এবার আলাদা প্রেস কেনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রথম আলোকে এ কথা জানান পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।

মোবাশ্বের মোনেম বলেন, ‘আমরা ক্রমাগতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিএসসির কর্মকাণ্ডকে আধুনিকায়ন এবং নির্ভরযোগ্য করে তুলব। পিএসসির অফিস চত্বরেই একটি আধুনিক প্রেস নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে পারলে প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনাগুলো ঘটবে না বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

আরও পড়ুনপিএসসির ৬ সদস্যের নিয়োগ বাতিল১৯ ঘণ্টা আগে

মোবাশ্বের মোনেম বলেন, ‘এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে আমি যোগদানের পরপরই লক্ষ করি যে ২১তম বিসিএস পরীক্ষা থেকে শুরু করে ৪৬তম বিসিএসের সব তথ্য ও উপাত্ত কেবল পিএসসিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় এটি আমার কাছে অত্যন্ত বিপজ্জনক মনে হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এসব তথ্য একাধিক স্থানে রাখার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুনডিপিডিসিতে চাকরি, ৩ ক্যাটাগরিতে পদ ৪৭, দ্রুত আবেদন করুন১ ঘণ্টা আগে

পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ইনোভেশন ও ট্রান্সফরমেশনে আগ্রহী একজন মানুষ। পিএসসির বিদ্যমান সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এ প্রতিষ্ঠানকে একটি প্রত্যাশিত উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন, আমি তা করব। এ ক্ষেত্রে কমিশনের বিজ্ঞ সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে এবং আমাকে সার্বক্ষণিক সাহায্য-সহযোগিতা করে চলেছেন। আপনি জেনে খুশি হবেন যে ইতিমধ্যেই এই লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি দল গঠন করা হয়েছে। এই টিম পাঁচ বছর মেয়াদি একটি কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এখানে পিএসসির একটি সুনির্দিষ্ট ভিশন নির্ধারণ করা হবে এবং সেই ভিশন অর্জনে কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে। এ কৌশলগত পরিকল্পনাটি হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পিএসসির রোডম্যাপ, প্রতিবছর এই রোডম্যাপের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরও পড়ুনআইএসডিবি-বিআইএসইডব্লিউতে ২ লাখ সমমূল্যের কোর্স, বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ-কর্মসংস্থান, আবেদন করুন দ্রুত২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না

বিশ্বরাজনীতিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি একটি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ইস্যু। পশ্চিমা শক্তিগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান নাকি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আজ পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি, যা এ দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করে। অন্যদিকে ইরান শুরু থেকেই বলে আসছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

প্রশ্ন হলো, যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাইত, তাহলে গত দুই দশকে তা তৈরি করেনি কেন? আর যদি তা না-ই চায়, তাহলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাচ্ছে কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে ইরানের ধর্মীয় অবস্থান, কৌশলগত চিন্তা, রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির দ্বিচারিতা একত্রে বিশ্লেষণ করতে হবে।

আরও পড়ুনইরান এবার বড় যুদ্ধের জন্য যেভাবে প্রস্তুত হবে০৬ জুলাই ২০২৫ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ও নৈতিক অবস্থান

২০০৩ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটি ঐতিহাসিক ফতোয়া জারি করেন। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি, মজুত কিংবা ব্যবহার ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।’ এ সিদ্ধান্ত শুধুই ধর্মীয় নয়, বরং একটি নৈতিক অবস্থানও, যেখানে নিরীহ মানুষ হত্যাকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। পারমাণবিক বোমা শুধু সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে না, বরং শহর, জনপদ ও লাখ লাখ নিরীহ মানুষের প্রাণ হরণ করে। ইসলামের যুদ্ধনীতিতে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

ইরান মনে করে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার শুধু মানবতার বিরুদ্ধে নয়, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিরুদ্ধে চরম অন্যায়। হিরোশিমা-নাগাসাকির দৃষ্টান্ত এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ দেয়।

কৌশলগত ও সামরিক বাস্তবতা

অনেকের ধারণা, পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেই একটি দেশ নিরাপদ থাকে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলেও ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানে অংশ নিতে বাধ্য হয়। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে। এমনকি রাশিয়া, যাদের বিশ্বের সর্বোচ্চ পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সঙ্গে কৌশলগতভাবে চাপে পড়েছে। ইসরায়েলও অঘোষিত পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও ইরানের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’-এ বড় ধরনের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।

এ বাস্তবতা ইরানকে বুঝিয়ে দিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র নয়, কার্যকর প্রতিরোধক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। তাই তারা শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন এবং কৌশলগত অস্ত্র নির্মাণে জোর দিয়েছে।

সামরিক মহড়া চলাকালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের অজ্ঞাত স্থান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি ছবিটি প্রকাশ করে ইরান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাল্টা শুল্ক কমিয়ে আনা আশাব্যঞ্জক, তবে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই
  • কৌশলগত নেতৃত্ব বিকাশে জোর সেনাপ্রধানের
  • ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না