পেপ গার্দিওলার সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না। টানা চারটি প্রিমিয়ার লিগ জেতা এই কোচ চলতি মৌসুমে শিরোপা হারানোর পথে আছেন। মাঠের এমন দুরবস্থার সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে মাঠের বাইরের সমস্যাও। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্ত জানিয়েছে, গার্দিওলা ও তাঁর স্ত্রী ক্রিস্টিনা সেরা তাঁদের ৩০ বছরের সম্পর্কের ইতি টেনেছেন।

ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত সাংবাদিক ও লেখক ক্রিস্টিনার সঙ্গে ১৯৯৪ সাল থেকে যৌথযাত্রা শুরু হয় গার্দিওলার। এরপর বার্সেলোনায় তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২০১৪ সালে। কিন্তু বিয়ের ১০ বছরের মাথায় নিজেদের পথ আলাদা করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই দুজন।

আরও পড়ুনক্লার্কের সংসার ভাঙার খরচ ৩৩৯ কোটি টাকা১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

গার্দিওলা-ক্রিস্টিনা দম্পতি তিন সন্তানের বাবা-মা। তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় মারিয়ার বয়স ২৪, ছেলে মারিয়াসের ২২ এবং সবার ছোট মেয়ে ভালেন্তিনার বয়স ১৭।

জানা গেছে, ছোট মেয়ে ভালেন্তিনাকে নিয়ে পারিবারিক ফ্যাশন কোম্পানিকে সাহায্য করার জন্য ৫ বছর আগে বার্সেলোনায় ফিরে যান ক্রিস্টিনা। আর ম্যানচেস্টার সিটির দায়িত্ব পালন করা গার্দিওলা থেকে যান ম্যানচেস্টারেই। ফলে সর্বশেষ ৫ বছর মূলত আলাদাই থেকেছেন তাঁরা।

তবে একই দেশে না থাকলেও বিভিন্ন সময় একসঙ্গে দেখা গেছে তাঁদের; পাশাপাশি স্ত্রীকে সময় দিতে নিয়মিত বিরতিতে ছুটি কাটাতে বার্সেলোনা ভ্রমণে যেতেন গার্দিওলাও। তবে সেই দিনও অবশ্য গত হতে যাচ্ছে। এবার তো পাকাপাকিভাবে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্তই নিয়ে নিলেন তাঁরা।

স্পোর্ত জানিয়েছে, নিজেদের দাম্পত্যের ইতি টানার সিদ্ধান্ত গার্দিওলা ও ক্রিস্টিনা নিয়েছেন গত ডিসেম্বরে। তাঁদের নিজস্ব বলয়ের অল্প কিছু মানুষই শুধু এই বিচ্ছেদ সম্পর্ক জানতেন। তবে সেই বিশ্বস্ত বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা খবরটি বাইরে প্রকাশ না করার অনুরোধও জানান এই দুজন।

এর আগে ২০২৩ সালের জুনে চ্যাম্পিয়নস লিগে ইন্টার মিলানকে হারিয়ে ম্যানচেস্টার সিটির ঐতিহাসিক ট্রেবল জেতার সময়ও ইস্তাম্বুলে গার্দিওলার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ক্রিস্টিনা। পরে গত জুলাইয়ে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায় অল ইংল্যান্ড ক্লাবে বসে উইম্বলডন উপভোগ করার সময়। এর মধ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে স্ত্রীকে নিয়ে বেশ কিছু প্রশংসাবাক্যও শোনান গার্দিওলা।

আরও পড়ুনসিটি কি আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে পারবে, গার্দিওলা শঙ্কায়২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ম্যান সিটি কোচ সে সময় বলেছিলেন, ‘অনেক বিষয়ে আমার স্ত্রী সেরা। বিশেষ করে ফ্যাশনে। সে–ই সাধারণত আমাকে বলে, এটা পোরো না বা ওটা পরো। আমিও সেই পরামর্শ মেনে চলি।

আমি এটা বোঝার মতো স্মার্ট যে যখন কেউ আমার কোনো বিষয়ে আমার চেয়ে ভালো জানে, তবে তার পরামর্শ মানা উচিত।’ স্পোর্ত জানিয়েছে, আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও দুজনের সম্পর্ক এখনো আন্তরিক, স্থিতিশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ আছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।

আরো পড়ুন:

নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”

খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”

পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”

প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”

তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”

গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।

শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।

ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের কাছে তেল বিক্রি করতে পারে পাকিস্তান, খোঁচা দিলেন ট্রাম্প
  • কেটি পেরি ও জাস্টিন ট্রুডোর ডিনার, গুঞ্জন
  • শিক্ষার্থী সাজিদ স্মরণে ইবিতে ব্যতিক্রমী আয়োজন
  • ৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী