সমাপনী কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি ৪৮০ জনের, অনশনে ৩২১
Published: 14th, January 2025 GMT
রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন ৪৮০ জন ক্যাডেট উপপরিদর্শক (এসআই)। ইতোমধ্যে তাদের র্যাঙ্ক ব্যাজ পরানো হয়েছে। বুধবার সকালে অবশেষে তাদের প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হচ্ছে।
এদিকে, একই ব্যাচের ৩২১ জন ক্যাডেট অব্যাহতি পেয়ে আছেন আমরণ অনশনে। নাস্তা না খেয়ে হইচই, ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলার অভিযোগে প্রশিক্ষণ থেকে ডিসচার্জ করা হয়েছে তাদের। চাকরি ফিরে পেতে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে ঢাকায় আমরণ অনশনে বসেছেন তারা।
পুলিশ একাডেমি সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর একাডেমিতে ৮২৩ জন ক্যাডেট এসআইয়ের এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ শুরুর পরই নানা অভিযোগে ডিসচার্জ হন ২২ জন। গেল বছরের ৪ নভেম্বর ৮০১ জনের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে সাবেক কাউন্সিলর হত্যা: আরো ৩ জন গ্রেপ্তার
বরিশালে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
এরই মধ্যে সম্প্রতি চার দফায় মোট ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ফলে এখন টিকে আছেন ৪৮০ জন। তাদের সমাপনী কুচকাওয়াজ হচ্ছে বুধবার। আর অব্যাহতি পাওয়া ৩২১ জন আছেন আমরণ অনশনে। তারা চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
ঢাকায় আন্দোনে থাকা অব্যাহতিপ্রাপ্ত এক এসআই জানান, সোমবার সকাল থেকে তারা সচিবালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেন। বিকেল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। মঙ্গলবারও কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে আশানুরূপ বার্তা পাননি।
পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত এক এসআই জানান, ইতোমধ্যে তাদের র্যাঙ্ক ব্যাজ পরানো হয়েছে। সকালের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের জন্য তারা প্রস্তুতি রেখেছেন।
পুলিশ একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অভিবাদন গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) মো.
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।
তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।
আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেযতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।