জাতীয় নির্বাচনে এলেই বড় দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের একাধিক আসনে প্রার্থী হওয়ার আলোচনা গতি পায়। দলকে জেতাতে দলীয় প্রধানদের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ভোটে জয় পাওয়ার এই ধারা বাংলাদেশে বহু পুরোনো। তবে এই ব্যবস্থা আর রাখতে চায় না নির্বাচন সংস্কার কমিশন। তাদের জমা দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবে একজন প্রার্থীর আর একাধিক আসনে ভোটে না দাঁড়ানোর কথাই বলা হয়েছে।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, মোট ১৬টি ক্ষেত্রে ১৫০টি সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

আরো পড়ুন:

ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি 

বেশি সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট: প্রেস সচিব

বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- কোনো আসনে ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে সেখানে ভোট বাতিল হয়ে যাবে। ‘না’ ভোটেরও ব্যবস্থা থাকবে। ৪০ শতাংশের বেশি ভোট না পড়লে অথবা ‘না ভোট’ বেশি হলে উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচন বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে আবার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

বদিউল আলমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৫০টি সুপারিশের মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ দুইবারের এই পদে থাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুইবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্য করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই ব্যক্তি একই সঙ্গে যাতে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা না হতে পারেন, সেই বিধান চালু করারও সুপারিশ করেছে কমিশন।

জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা আরো ১০০ বাড়িয়ে ৪০০ করার প্রস্তাব করা হয়েছে সুপারিশে। যার মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে।

সংস্কার কমিশন সংসদকে দুই কক্ষবিশিষ্ট করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন উভয় কক্ষের ভোটে। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস করার প্রস্তাব দিয়ে সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে নির্বাচনে ইভিএম বাতিল করা হবে। 

প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ ও অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি চালুরও সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প র শ কর ছ ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি

শোবিজের একঝাঁক একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।

সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”

ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”

সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”

“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
  • প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি
  • গাজীপুরে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ, হাতুড়িপেটায় একজন নিহত
  • সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি