জন্ম থেকেই হাঁটতে অক্ষম গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার চিংগড়ি গ্রামের ভ্যান চালক সুধাংশু মন্ডলের ছেলে সংগ্রাম মন্ডল (১৫)। ভাড়ায় ভ্যান চালিয়ে উপার্জন করা টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালান সংগ্রামের বাবা সুধাংশু মন্ডল। নুন আনতে পানতা ফুরায়। সংসারের এ অবস্থায় ছেলেকে একটা হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার সামর্থ্য হয়নি তার।

শুধু সংগ্রাম মন্ডলই নয়, তার মত হাঁটাচলা করতে অক্ষম ও দরিদ্র এমন আরও ১৪ জনকে খুঁজে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

মঈনুল হক।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসব হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়। হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেবাশীষ বাছাড়, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্যে কেন্দ্র, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কনসালটেন্ট ডা. নাজমুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদারসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন‌। 

বিনামূল্যে ও অপ্রত্যাশিতভাবে এসব হুইল চেয়ার পাওয়ায় আনন্দে আত্মহারা হাঁটাচলা করতে না পারা প্রতিবন্ধীরা।

পাটগাতী গ্রামের আমিনুর শেখ বলেন, “জন্ম থেকেই হাঁটতে পারে না আমার ১৩ বছর বয়সী মেয়ে সোহারা খানম। পরের জমিতে কামলা খেটে নিজের সংসারই কোনো রকমে চলে, হুইল চেয়ার কিনবো কীভাবে! সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে ইউএনও স্যার আমার মেয়েকে একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।”
কাকইবুনিয়া গ্রামের রিপন কুমার রায় (বিবেক) বলেন, “উপজেলার পাটগাতি বাজারে দীর্ঘদিন আর্ট শিল্পী হিসেবে কাজ করেছি। প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্যারালাইজড (পক্ষাঘাতগ্রস্ত) হয়ে ঘরেই পড়ে ছিলাম। স্ত্রী ও মেয়ে বাড়িতে আর্ট শিল্পীর কাজ করে সামান্য কিছু রোজগার করে, যা দিয়ে কোনোমতে চলে সংসার। কয়েকদিন আগে একটি হুইল চেয়ার পাওয়ার জন্য উপজেলায় আবেদন করি। আজ হুইল চেয়ার আমি অনেক খুশি। এখন একটু চলাফেরা করতে পারব।”

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বলেন, “মানুষের দুঃখ কষ্ট দূর করতে সরকার থেকে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু অনেক সময় প্রকৃত অসহায় ও দরিদ্র মানুষেরা সরকারি সেবাগুলো পায় না। সরকারের একজন কর্মচারী হয়ে আমার দায়িত্ব মানুষের জন্য কিছু করা। তাই হাঁটাচলা করতে অক্ষম ও প্রকৃত দরিদ্র মানুষদের বাছাই করে হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/বাদল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ