হাসিনা সরকার গণমাধ্যমকে ভয়ানকভাবে ব্যবহার করেছে: প্রেস সচিব
Published: 17th, January 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার গণমাধ্যমকে ভয়ানকভাবে ব্যবহার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, “গত ১৫ বছরে সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ রাখায় গোয়েন্দা সংস্থারও ভূমিকা ছিল। ফোনকল এলে সাংবাদিকের চাকরি চলে যেত। নিউজ নামিয়ে ফেলতে হতো। ভবিষ্যতে আর কেউ যাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।”
‘গণমাধ্যম সংস্কার প্রস্তাব: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় শফিকুল আলম এসব কথা বলেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম চাই’ নামের একটি সংগঠন এই সভার আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য আর্থিক নিরাপত্তা দরকার: কামাল আহমেদ
জাতীয় উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংবাদিকতার প্রত্যয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম’ এর যাত্রা
শফিকুল আলম বলেন, “সব গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য বিগত সরকারের ছিল। ডিজিএফআইয়ের একটা ফোনকল, এনএসআইয়ের একটা ফোনকল বা ডিবির একটা ফোনকল অথবা মন্ত্রীর একটা ফোনকল যথেষ্ট ছিল। কীভাবে তারা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করত তার অনেক গল্প শুনেছি।”
ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় যারা সাফাই গেয়ে কলাম লিখেছিলেন তাদের লেখা সংগ্রহ করে বই বানানোর পরামর্শ দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “কারো নামে ঘৃণা ছড়াবেন না। কাউকে শাস্তি দেওয়াও আমাদের উদ্দেশ্য নয়। গবেষণা করেন, যারা বয়ান তৈরি করেছিলেন তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে চাই।”
খুন করাটা জায়েজ-সেই বয়ানও বিগত সরকার তৈরি করেছিল উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের বীজ আবার যাতে রোপিত না হয়, সেজন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।”
কপিরাইট (মেধাস্বত্ব) আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “কপিরাইট আইনের প্রয়োগ খুবই জরুরি। সব সাংবাদিককে এ বিষয়ে জোরালো কথা বলতে হবে।”
তিনি বলেন, “আপনি দুই মাস খেটে একটা প্রতিবেদন করলেন, সেই প্রতিবেদন এক মিনিটে আরেকটা সংবাদ প্রতিষ্ঠান বা একশ প্রতিষ্ঠান চুরি করে ফেলল। আপনি সুন্দর ছবি তুললেন, বড় পত্রিকা বিনা অনুমতিতে ছাপিয়ে দিল। একটা ভালো প্রতিবেদন করলে এক শটা প্রতিষ্ঠান চুরি করে। যারা চুরি করে তাদের বন্ধ করে দেওয়া উচিত।”
আলোচনা সভায় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আপনারা সমালোচনা করতে থাকেন। কিন্তু সমালোচনার আড়ালে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে আবার পুনর্বাসন করার চেষ্টা করলে আপত্তি আছে। এটাকে প্রতিহত করতে হবে।”
কেন সাংবাদিকেরা তাদের অবস্থানে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি মতাদর্শ প্রকাশ করবেন-এ প্রশ্ন তোলেন আকবর হোসেন। তিনি বলেন, “মতাদর্শ প্রকাশ করতে হলে সাংবাদিকতা ছেড়ে দেন, তারপর করেন। যেমন আমি সাংবাদিকতা ছেড়ে দিয়েছি। মিডিয়া হাউজকে (সংবাদ প্রতিষ্ঠান) ব্যবহার করে অ্যাকটিভিজম করবেন, সেখানে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গেলে বলবেন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাই, এটা কি গ্রহণযোগ্য?”
আলোচনা সভায় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম সংস্কারে ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। আয়োজক সংগঠনের মুখপাত্র প্লাবন তারিকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন দ্য বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন, উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মাহবুব আলম, আইনজীবী মোল্লা মো.
সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ কত র একট সরক র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক
গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।
ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন।
লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।
ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।
ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা/রফিক/টিপু