কুবিতে ই-লাইব্রেরি আছে, জানেন না শিক্ষার্থীরা
Published: 18th, January 2025 GMT
বর্তমান বিশ্বে বইয়ের সংখ্যা এতবেশি যে, তা কোনো একটি নির্দিষ্ট কক্ষে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব না। তবে ডিজিটালাইজেশনের ফলে অনেক উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে বইয়ের এ সমস্যার সমাধানের জন্য তৈরি হয়েছে ই-লাইব্রেরি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি আছে। এর পাশাপাশি আছে একটি ই-লাইব্রেরিও। কিন্তু সে সম্পর্কে জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ই-লাইব্রেরি সম্পর্কে তারা অবগত না। প্রশাসন এ সম্পর্কে তেমন কোন প্রচারণা করেনি বলেও দাবি করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইয়াজ লালন বলেন, “না, এ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। প্রশাসন থেকেও তো কিছুই জানানো হয়নি।”
লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ লিয়ন বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-লাইব্রেরি সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই। তবে আমার মতে ই-লাইব্রেরি থাকলে যেকোন সময় যেকোন প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক বই পেতে পারব।”
একই শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেহা মীম বলেন, “না, আমি এ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।”
ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মো. মুহিউদ্দীন আলম বলেন, “আমাদের এ ই-লাইব্রেরির সিস্টেমটা কিছুদিন একটু সমস্যার কারণে বন্ধ ছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন হয়েছে এটি চলছে। শিক্ষার্থীরা চাইলেই যথাযথ উপায়ে সাইটে গিয়ে ই-লাইব্রেরির সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবে। আমাদের লাইব্রেরিতে যে কম্পিউটারগুলো আছে সেগুলো থেকে তারা চাইলেই এই সুবিধা নিতে পারবে।”
ই-লাইব্রেরির এক্সেসের বিষয় তিনি বলেন, “তারা নিজেদের ডিভাইসে ই-লাইব্রেরির সুবিধা নিতে হলে www.openathens.net এই সাইটে গিয়ে login ক্লিক করবে। পরবর্তীতে login to MyAthens অপশনে ক্লিক করে নিজের প্রতিষ্ঠানের নাম খোঁজার জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম লিখে Comilla University সিলেক্ট করতে হবে। পরবর্তী পেইজে তাদের কাছে একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড চাওয়া হবে। সেখানে তারা User ID এর জায়গায় coue-resource এবং Password এর মধ্যে cou.library2006 লিখে লগইন বাটনে ক্লিক করলেই ই-লাইব্রেরির সাইটে লগইন করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ই-লাইব্রেরির মাঝে বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, টেইলর অ্যান্ড ফ্রেঞ্চিস, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসের মতো বেশ কয়েকটি প্রথম সারির পাবলিকেশন আছে। আমরা প্রয়োজনে আরও সংযোজন করবো।”
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।