ব্লুটুথ প্রযুক্তি এখন ল্যাপটপ থেকে স্মার্টওয়াচ ছাড়াও অন্য ডিভাইসের সংযোগ সহজ করেছে। তবুও ব্লুটুথের সম্ভাব্য ঝুঁকি বোঝা সবার জন্যই প্রয়োজন। ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য সুরক্ষিত রাখতে ঝুঁকির বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকলে বিপদ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সহজ। ব্লুটুথের বহুমাত্রিক ব্যবহারের কারণে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তা ঝুঁকি তার মধ্যে অন্যতম।
স্মার্টফোন ও প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের কারণে সাইবার হামলার সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ‘ব্লুজ্যাকিং’ হলো সাইবার আক্রমণের অন্যতম রূপ; যেখানে অপরিচিত ব্যক্তিরা ব্লুটুথ সংযোগ ডিভাইসে অনপ্রবেশ করে অযাচিত মেসেজ বা ফাইল শেয়ার করে; যার মাধ্যমে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে ও সংবেদনশীল তথ্য অন্যদের কাছে প্রকাশ করা হয়।
ব্লুটুথ সচল ডিভাইস থেকে ডেটা অননুমোদিত ব্লুসারফিং পদ্ধতিতে হাতিয়ে নেওয়া হয়; যার মধ্যে মেসেজ বা মাল্টিমিডিয়া ফাইল অন্তর্ভুক্ত। সংযুক্তরা বিষয়টি থেকে একেবারেই অজ্ঞ থাকেন। ফলে সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় না।
ব্লুবাগিং হলো সাইবার হামলার আরেকটি আধুনিক রূপ। যেখানে হ্যাকাররা ব্লুটুথ ডিভাইসে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ফলে ভুক্তভোগীর অনুমতি ছাড়াই কল ও মেসেজ অনুপ্রবেশ করে সহজেই তথ্য সংগ্রহ করে হ্যাকাররা।
ব্লুটুথ ডিভাইসে পরিষেবা আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব। অনুমোদনহীন সংযোগের অনুরোধ গ্রহণ করলে ডিভাইসে ম্যালওয়্যার রেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এতে ডিভাইস ব্যবহারে বাধার সৃষ্টি হয়। হুট করে সিস্টেম ক্র্যাশও হতে পারে। ব্লুটুথ সংকেত সীমিত দূরত্বে কাজ করে। কিছু বিশেষ আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে আক্রমণকারী ডেটা বা কথোপকথন হ্যাক করতে পারে। ব্লুটুথের মাধ্যমে পাঠানো অপরিচিত তথ্য বা আহ্বান অবশ্যই সংবেদনশীল হিসেবে আমলে নিতে হবে।
বিশেষ এমআইটিএম পদ্ধতির কৌশলে আক্রমণকারীরা ব্লুটুথ ডিভাইসে আন্তঃযোগাযোগে বিঘ্ন সৃষ্টি করে; যার মাধ্যমে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া সহজ হয়। এ কারণে তথ্যের গোপনীয়তা শিথিল হয়ে পড়ে। ক্ষতিকারক ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার ডেটা ডিভাইসে স্বয়ংক্রিয় আপলোড হয়ে স্মার্টফোনের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে দেয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।