সবুজ বনবনানীর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। বিভিন্ন বনাঞ্চলে ঘুরে বেড়ানো আমাদের অনেকেরই শখ। কেমন হয় যদি আপনার পড়াশোনার বিষয়ই হয় বন? পড়াশোনার সুবাদেই ঘুরতে পারেন দেশের প্রায় সব বনাঞ্চলে? এর জন্য আপনাকে বেছে নিতে হবে বনবিদ্যা বিষয়টি।
বনবিদ্যায় পড়াশোনায় সুযোগ থাকে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলার।
কোথায় পড়বেন
বর্তমানে বাংলাদেশের ৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বন নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি)।
পড়াশোনার বৈচিত্র্য
বনবিদ্যা মানে শুধুই গাছ নিয়ে পড়া এমন নয়, এটি একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি সাবজেক্ট। বনবিদ্যায় ফরেস্ট ইকোলজি, বোটানি, ডেন্ড্রোলজি, ট্রি ফিজিওলজি, জিওলজি, জেনেটিক্স, সিলভিকালচার, বায়োডাইভার্সিটি, ওয়াইল্ড লাইফ ম্যানেজমেন্ট, ফরেস্ট বায়োএনার্জি ছাড়াও উড ফিজিক্স ও মেকানিক্স, স মিলিং, স ডক্টরিং, উড কেমিস্ট্রি, ফরেস্ট ইকোনমিক্স, কৃষি বনবিদ্যা, পাল্প-পেপার টেকনোলজি, উড মডিফিকেশন, ফরেস্ট ল, ফরেস্ট প্যাথলজি পড়ানো হয়। এ ছাড়া সাধারণত কম্পিউটার সায়েন্স, গণিত, সার্ভেয়িং, রিমোট সেন্সিং, জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম, টি সায়েন্স, পরিসংখ্যান, অ্যাকাউন্টিং বিষয়গুলোও এ বিভাগে পড়ানো হয়ে থাকে। চার বছরের বিএসসি অনার্স কোর্সটি মোট আট সেমিস্টার/টার্মে শেষ হয়। আটটি সেমিস্টারে মোট ১৬০ এর বেশি ক্রেডিট অর্জন করতে হয়। প্রতি সেমিস্টারে যেতে হয় কোন না কোন বনাঞ্চলে।
বিদেশে পড়ার সুযোগ
বনবিদ্যায় পড়ালেখা করে বিদেশে পড়তে যাওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই বনবিদ্যার ওপর অনার্স, মাস্টার্স, পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে। বনবিদ্যায় স্নাতক অসংখ্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৃত্তি নিয়ে পড়ালেখা করছেন।
চাকরির সুযোগ
সরকারি পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন, স্পেস রিসার্চ অ্যান্ড রিমোট সেন্সিং অর্গানাইজেশন অব বাংলাদেশের ফরেস্ট্রি সেক্টর, আইইউসিএন, জাতীয় উদ্যান, ইকোপার্ক, সাফারি পার্ক, বন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিটিউটে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
এর বাইরে বনবিদ্যা স্নাতকদের জন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।