কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় টমেটোর আবাদ বেড়েছে। অধিক লাভজনক হওয়ায় একই জমিতে টমেটো ও করলা চাষ কৃষকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। এ পদ্ধতিতে এক বিঘা জমি আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় ৭০ হাজার টাকা। 
খরচ বাদে মৌসুমে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় করতে পারেন কৃষক। 
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এক সময় টমেটো শুধু শীতকালীন ফসল ছিল। এখন ফলছে সারাবছর। কৃষিবিজ্ঞানীরা জিন কালচারের মাধ্যমে এখন গ্রীষ্মকালীন টমেটোর জাত উদ্ভাবন করেছেন। গ্রীষ্মকালে টমেটোর জমির পরিমাণ থাকে অনেক কম। এ সময় উৎপাদনও কম হয়। 
গত রোববার করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বহু কৃষক তাদের জমিতে এবার টমেটো আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। কোনো কোনো গাছের একটি ছড়াতেই ৩০টি টমেটো ঝুলে আছে। কোনো কোনো চাষি জমিতে টমেটোর সঙ্গে 
করলার আবাদ করেছেন। এ কারণে একই জমিতে মাচার ওপর করলা ও নিচে শোভা পাচ্ছে কাঁচা-পাকা টমেটো। 
স্থানীয় কৃষক আবু হানিফ তুহিন জানালেন, তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর তিন বছর ধরে তিনি কৃষি কাজে নেমেছেন। এক বিঘা জমিতে ‘সাজ’ জাতের টমেটোর আবাদ করেছেন। দু-তিন দিন পরপর অন্তত ২০ মণ করে টমেটো আহরণ করতে পারেন। পুরো মৌসুমে অন্তত ৫০০ মণ টমেটো বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। মৌসুমের শেষ দিকে দাম কমে যায়। তখন ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়। 
তুহিন আরও বলেন, টমেটো বাগানের ওপর মাচা তৈরি করে তাতে করলার চারা উঠিয়ে দিয়েছেন। ফসল আহরণ করতে আরও কয়েকদিন লাগবে। টমেটো আর করলা আবাদে ৭০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। খরচ বাদ দিয়ে ৩ লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছেন। অন্য কোনো ফসলে এত লাভ হয় না বলেও জানান তিনি। 
একই গ্রামের কৃষক নাঈম মিয়া জানালেন, তিনি এবার ১০ শতাংশ জমিতে টমেটো ও করলার আবাদ করেছেন। ভালো ফলন হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে আবাদ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলায় এবার টমেটোর আবাদ হয়েছে ৮২০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে করিমগঞ্জে আবাদ হয়েছে ১২০ হেক্টর জমিতে। টমেটো ও করলার আবাদ কৃষকদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: করল র

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নৌবাহিনীর অভিযানে ৯৯ কোটি টাকার মাছ ও জাল জব্দ

বঙ্গোপসাগরে ৫৮ দিনব্যাপী ‘মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রম–২০২৫’ চলাকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৬ হাজার ৩২৮ কেজি মাছ, অবৈধ জাল, বোটসহ প্রায় ৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকার মৎস্যসম্পদ ও উপকরণ জব্দ করেছে।

বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ‘মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রম-২০২৫’ চলাকালে সব ধরনের মাছ ধরার নৌযানের জন্য বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। এ সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২৭৫টি অভিযান চালিয়ে ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ১১০ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল, ২ হাজার ৭৪৪টি বিভিন্ন ধরনের জাল, ৫০৫ জন জেলেসহ ৫৭টি বোট এবং ১৬ হাজার ৩২৮ কেজি মাছ জব্দ করে। জব্দ করা সরঞ্জামের বাজারমূল্য প্রায় ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

নৌবাহিনীর এ অভিযান চলাকালে জব্দ মাছ স্থানীয় এতিমখানাগুলোতে বিতরণ করা হয় এবং অবৈধ জাল স্থানীয় প্রশাসন, মৎস্য কর্মকর্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়। এ ছাড়া আটক মাছ ধরার নৌকা ও জেলেদের স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অভিযান চলাকালে নৌবাহিনীর চারটি যুদ্ধজাহাজ ও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্যাট্রল বোট বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলীয় অঞ্চলে নিয়মিত টহলে নিয়োজিত ছিল। এ ছাড়া বেআইনিভাবে মাছ শিকার প্রতিহত করতে অত্যাধুনিক মেরিটাইম প্যাট্রল এয়ারক্র্যাফট দিয়ে বঙ্গোপসাগরে নজরদারি চালানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের সামুদ্রিক মাছের প্রজনন, উৎপাদন ও সংরক্ষণে টেকসই আহরণ নিশ্চিত করতে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে নৌবাহিনী স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করছে। এই অভিযানের ফলে দেশের জলসীমায় মৎস্যসম্পদের প্রাচুর্য বাড়বে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগরে ইলিশ মিলছে কম, চড়া দাম আড়তে
  • নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নৌবাহিনীর অভিযানে ৯৯ কোটি টাকার মাছ ও জাল জব্দ