বিপিএলে নাঈম ইসলাম দল পাওয়ার পর অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। আরো অবাক হয়েছিলেন চিটাগং কিংস তাকে প্রথম ম‌্যাচেই একাদশে নামিয়ে ওপেনিংয়ে ব‌্যাটিং করতে পাঠানোয়।

বয়স ৩৮ পেরিয়েছে। পুরোনো নাঈম আর নেই। তবুও টিকে আছেন ২২ গজে। শুরুটা নাঈমের মনোঃপুত হয়নি। দৃষ্টিকটু ব‌্যাটিং ইনিংস থেমে যায় ১২ রানে। পরের ম‌্যাচে তাই বাদ পড়তে হয়েছে তাকে। এরপর দল জয়ের ধারাবাহিকতায় থাকায় নাঈমেরও সুযোগ মেলেনি। কিন্তু ঘরের মাঠে টানা দুই হারে চিটাগংয়ের পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হয়।

দলের মালিক সামির কাদের চৌধুরী পুরোনো সৈনিক নাঈমকে সুযোগ দিতে টিম ম‌্যানেজমেন্টকে অনুরোধ করেন। মালিকের বিশ্বাস, টিম ম‌্যানেজেমেন্টের আস্থায় সুযোগ পেয়ে নাঈম ফিরে ১৯ রানের ইনিংস খেলেন। এবার করলেন বাজিমাত।

৪১ বলে ৫৬ রানের ইনিংসের পর বল হাতে ৩ ওভারে ৬ রানে নেন ২ উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে নাঈম দেখালেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি। তার জ্বলে উঠার দিনে দুর্বার রাজশাহীকে ১১১ রানে উড়িয়ে জয়ে ফিরে চিটাগং কিংস।

ম‌্যাচটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল নাঈমের মুখ থেকেই শুনুন, ‘‘টানা দুই হারের পর আমাদের আজ ম‌্যাচটা ডু অর ডাই ছিল। আমরা যেই ছন্দে ছিলাম সেটা আবার ফিরিয়ে আনার দরকার ছিল। কেননা এখন সবাই দল গুছিয়ে উঠেছে। সবাই পারফর্ম করতে শুরু করেছে। এমন সময়ে যদি জয় হাতছাড়া হয় তাহলে সামনে যাওয়া কঠিন হয়ে যায়।’’   

দল জয়ে ফিরেছে। নাঈম রেখেছেন অবদান। পরিসংখ‌্যান বলছে, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর টি-টোয়েন্টিতে ফিফটি পেয়েছেন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। বিপিএলে দ্বিতীয় আসরে পেয়েছিলেন ম‌্যাচ সেরার পুরস্কার। এক যুগ পর তার হাতে আবার উঠেছে স্বীকৃতি। তাতে দারুণ উচ্ছ্বসিত নাঈম, ‘‘খুবই ভালো লাগছে। দলের জয়ে আপনি যখন ব‌্যাটিং, বোলিং দুই বিভাগে অবদান রাখতে পারবেন তখন খুব খুব ভালো অনুভব হয়।’’

ফ্রাঞ্চাইজির মালিককে ধন‌্যবাদ দিয়ে নাঈম বলেছেন, ‘‘প্রথম ম‌্যাচে ওপেনিং করেছিলাম। চিটাগংয়ের প্রত‌্যাশা মাফিক তেমন কিছু করতে পারিনি। কয়েকটা ম‌্যাচ এজন‌্য অফ ছিলাম। এখন ফিরে এসে একটা ভালো ইনিংস খেললাম। আমাদের দলের মালিক সামির ভাই উনি চেয়েছেন আমি খেলি। তার চাওয়াতেই আমি খেলেছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। সামির ভাইয়ের কাছে থ‌্যাংকফুল। আমাকে এই সুযোগটি দিয়েছেন ও বিপিএলে উনার টিমে পিক করেছে।’’

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ