রংপুরকে হারানোর রসদ জানালেন তাসকিন
Published: 23rd, January 2025 GMT
রংপুর রাইডার্সের জয়ের ট্রেন ছুটছিল এক্সপ্রেস গতিতে। একের পর এক জয় তুলে প্রতিপক্ষকে এলোমেলো করে দিচ্ছিল তারা। তাদের সেই ট্রেন এসে থামল রাজশাহীর গন্তব্যে।
দুর্বার রাজশাহী বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রামে রংপুরকে ২৪ রানে হারিয়েছে। নিজেদের হারের ব্যাখ্যায় রংপুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছে, ‘‘ঘিরে লিয়েছে মামুর ব্যাটারা- পচা শামুকে কেটেছে পা!’’ রাজশাহীও কম না, ‘‘রং মুছে গেছে দেয়ালের। দুর্বার যখন ফর্মে, প্রতিপক্ষ তখন অন্ধকারে!’’ কথার লড়াই জমেছে ম্যাচের পর।
রাজশাহী ম্যাচটাকে কিভাবে জমালো সেটাই প্রশ্নের। মাঠের বাইরে নানা ইস্যুতে দুর্বার রাজশাহী প্রবল সমালোচিত। রংপুর সুখী পরিবার। তাদের হারানোর কাজটা চাট্টেখানি কথা ছিল না। নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে নামা তাসকিন আহমেদ জানালেন সাফল্যের রসদ—
আরো পড়ুন:
রংপুরের ‘ওয়েক আপ কল’
‘পদ্মার জলে’ ডুবলো রংপুর
‘‘সহজ ছিল না। কারণ, শেষ ম্যাচটা আমরা বাজেভাবে হেরেছিলাম। সবাই সবাইকে সাপোর্ট করেছে দারুণভাবে। চেষ্টা করেছে প্রক্রিয়ায় থেকে যদি জেতা সম্ভব হয়। ওভারঅল ব্যাটিং-বোলিং দারুণ একটা পারফরম্যান্স ছিল। এটা টিম গেম। এরকম দলকে হারাতে দুইটি বিভাগ যদি পারফর্ম না করে তাহলে কঠিন হয়ে যায়। তুলনা করলে ওদের থেকে আমাদের দলটা দুর্বল। কিন্তু দলগতভাবে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি।’’
১০ ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট রাজশাহীর। আজকের ম্যাচটি তাদের ছিল ডু অর ডাই। হারলে প্লে’অফের আশা শেষ এরকম। জয়ে বেঁচে আছে সুযোগ। পরের দুই ম্যাচ একই ধারাবাহিকতায় জিতে সেরা চারে যেতে চান তাসকিন—
‘‘আমাদের আজকের মাচ নিডেড উইন গেম ছিল। আলহামদুলিল্লাহ আমরা জিতে টুর্নামেন্টে এখনও টিকে আছি। এখনও দুইটি ম্যাচ আছে আমাদের। ভালোভাবে শেষ করা…আমাদের তো লক্ষ্য প্লে’অফ খেলা। সামনের দুইটি ম্যাচ ভালো ক্রিকেট খেলা এবং দলকে নিয়ে প্লে অফে যাওয়া।’’
২০ উইকেট নিয়ে তাসকিন আগেই ছিলেন শীর্ষে। আজ আরও পকেটে পুরেছেন ২ উইকেট।
বিপিএলের দ্বিতীয় আসর থেকে নিয়মিত অংশগ্রহণ করা তাসকিন এবার ২০ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয়বার এক আসরে ২০ উইকেট ছোঁয়ার রেকর্ড স্পর্শ করেছেন। এর আগে তাসকিন ২০১৯ সালে ২২ উইকেট পেয়েছিলেন সিলেট সিক্সার্সের হয়ে। এছাড়া রুবেল হোসেন ও সাকিব দুইবার করে ২০ উইকেটের বেশি পেয়েছেন।
তাসকিনের সামনে এবার বড় কিছুর অপেক্ষা। বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হতে হলে আর ২ উইকেট পেলেই হবে তার। সাকিব আল হাসানের ২৩ উইকেটকে ছাড়িয়ে যেতে তাসকিনের প্রয়োজন ২ উইকেট। সেদিকে অবশ্য তার মনোযোগ নেই, ‘‘একই প্রক্রিয়ায় আছি (বোলিং পরিকল্পনা)। এটা আসলে একটা অভ্যাস। মাঠ ও মাঠের বাইরে একই প্রক্রিয়ায় থাকার চেষ্টা করেছি। ভালো খারাপ মিলিয়ে চলছে। মূল বিষয়টি হলো, ভালো বোলিং করতে পারাটা। উইকেট কখনো বেশি হবে কখনো কম। কিন্তু প্রক্রিয়া অনুসরণ করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ