ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
Published: 25th, January 2025 GMT
ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রের (টিএসসি) কাছে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা',‘দালালি না আজাদি, আজাদি আজাদি', ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ' ইত্যাদি স্লোগান দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে ঢাবির যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী রিফতি বলেন, “নাজমাকে যেভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং এরপর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে যেন কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি না অনুসরণ করা হয়, তার দাবি জানাচ্ছি।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মইনুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড কেবল ভারতেই সম্ভব। যে দেশ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, নারীদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, মসজিদ ভেঙে মন্দির তৈরি করে; সেই দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠাতে হবে।”
সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের স্বাধীনতা ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলে দিতে চাই, আপনারা যদি নাজমা হত্যাকাণ্ডের বিচারে পদক্ষেপ না নেন, তাহলে জনগণ কিন্তু সেটা মেনে নেবে না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য তারিকুল ইসলাম বলেন, “ভারতের হাতে বাংলাদেশি খুন কোনো নতুন ঘটনা নয়। ভারত বাংলাদেশের মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করে একের পর এক খুন করেই গেছে। অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে তারা এ দেশকে করদরাজ্য বানিয়ে রেখেছিল। গত ৫৪ বছরে ভারতের আধিপত্যের কারণে যত খুন হয়েছে, সবগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেছেন, “ভারত বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখাতে চেয়েছে। তারা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে ভারতে ঘৃণা উৎপাদন করেছে। এই হত্যাকাণ্ড তারই ফল। ভারতের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি।”
তিনি ভারতের জনগণের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আপনারা দেখেন, কীভাবে বর্ডারে আমাদের ভাইকে হত্যা করা হচ্ছে, আমাদের ওপরে কেমন আধিপত্য চালাচ্ছে।”
যতদিন বাংলাদেশ সফল রাষ্ট্র না হবে, রাজপথে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আরিফ সোহেল।
ঢাকা/সৌরভ/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক