ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে কলা, আইন ও সামাজিকবিজ্ঞান ইউনিটে মুক্তিযোদ্ধা কোটার মেধাক্রমে অনেকের চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন সামিরা মালিয়াত। ২৫২৬ মেধাক্রমেই যেখানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আসন শেষ হয়, সেখানে সামিরার ছিল ‘রাজকপাল’! তাঁকে ভর্তি করানোর জন্য নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘বিশেষ নিয়ম’ বানিয়ে ৩৭০৩ মেধাক্রম থেকে শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগে তাঁকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয়।

অথচ সামিরার আগে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আরও ৪৯ জন মেধাক্রমে ছিলেন। তাদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সামিরার আগে আরও একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেধাক্রমে ছিলেন। তাঁকেও করা হয়েছিল বঞ্চিত। পরে অবশ্য ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। 
অনুসন্ধানে জানা যায়, সামিরা মালিয়াত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলা, আইন ও সামাজিকবিজ্ঞান ইউনিটের মানবিক শাখায় পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এখানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আসন ছিল ৮৭টি। ফল প্রকাশের পর উপাচার্যের সভাপতিত্বে ‘কোটাধারীদের বিষয় মনোনয়ন’ সংক্রান্ত এক সভায় সবাইকে বিষয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেই সভায় এ ইউনিটে ২৫২৬ মেধাক্রম পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আসন শেষ হয়ে যায়। এরপর আসন ফাঁকা থাকলে সেটি সাধারণ মেধাতালিকা থেকে ভর্তি করানোর নিয়ম। 

তবে ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর নতুন প্রশাসন এসে গত অক্টোবরের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সামিরাকে ‘বিশেষ নিয়মে’ ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়। একাডেমিক কাউন্সিলে অনেক শিক্ষক এটি নিয়ে বিরোধিতা করলেও আমলে নেওয়া হয়নি। গত ডিসেম্বরে সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিস থেকে ওই ছাত্রীর ভর্তির কাগজপত্রও ইস্যু করা হয়। 
ভর্তির নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, ৩৭০৩ ক্রম থেকে মেধার ভিত্তিতে বিষয় নির্ধারণের সুযোগ নেই। তাই কোটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনির ওপরে অগ্রাধিকার দিতে সামিরার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মোল্লা তদবির করেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে নির্ধারিত আসনের ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১ শতাংশ দলিত ও হরিজন সম্প্রদায়ের কোটা, ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা, ১ শতাংশ নৃগোষ্ঠী কোটা মিলিয়ে মোট ৮ শতাংশ কোটা রয়েছে। নির্ধারিত আসনের বাইরে যতজন পৌষ্য কোটায় উত্তীর্ণ হন, সবাইকে অতিরিক্ত হিসেবে ভর্তি করা হয়। 
ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সাধারণভাবে মেধাতালিকার বাইরে বিষয় মনোনয়নের জন্য মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধীসহ প্রতিটি কোটার আলাদা মেধাক্রম হয়। এরপর উপাচার্যের সভাপতিত্বে সব ডিনকে নিয়ে কোটার বিষয়ে সভা হয়। সেখানে প্রতিটি কোটার মেধাক্রম অনুযায়ী দেওয়া হয় বিষয় মনোনয়ন। এরপর কোটার আসন ফাঁকা থাকলে তা পূরণ করা হয় সাধারণ মেধাতালিকা থেকে। 
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে কোনো কোটার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি নিয়মের পরিবর্তন আনে, তাহলে সেটি সবার জন্য প্রযোজ্য করতে হবে। 
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.

মামুন আহমেদ বলেন, ওই ছাত্রীকে তাঁর প্রার্থিত বিষয়ে ভর্তির অনুমতি দিলে অন্য শিক্ষার্থীর প্রতি বৈষম্য করা হয় না। 
উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদের কার্যালয়ে দু’দিন গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি সমকালের এ প্রতিবেদক। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা

চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।

জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”

একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”  

আরো পড়ুন:

বধূবেশে অভিষেক কন্যা

জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট

মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।” 

কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।” 

সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়। 

পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না। 

এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা