এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ভর্তির জন্য ‘বিশেষ নিয়ম’
Published: 25th, January 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে কলা, আইন ও সামাজিকবিজ্ঞান ইউনিটে মুক্তিযোদ্ধা কোটার মেধাক্রমে অনেকের চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন সামিরা মালিয়াত। ২৫২৬ মেধাক্রমেই যেখানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আসন শেষ হয়, সেখানে সামিরার ছিল ‘রাজকপাল’! তাঁকে ভর্তি করানোর জন্য নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘বিশেষ নিয়ম’ বানিয়ে ৩৭০৩ মেধাক্রম থেকে শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগে তাঁকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয়।
অথচ সামিরার আগে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আরও ৪৯ জন মেধাক্রমে ছিলেন। তাদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সামিরার আগে আরও একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেধাক্রমে ছিলেন। তাঁকেও করা হয়েছিল বঞ্চিত। পরে অবশ্য ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সামিরা মালিয়াত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলা, আইন ও সামাজিকবিজ্ঞান ইউনিটের মানবিক শাখায় পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এখানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আসন ছিল ৮৭টি। ফল প্রকাশের পর উপাচার্যের সভাপতিত্বে ‘কোটাধারীদের বিষয় মনোনয়ন’ সংক্রান্ত এক সভায় সবাইকে বিষয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেই সভায় এ ইউনিটে ২৫২৬ মেধাক্রম পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আসন শেষ হয়ে যায়। এরপর আসন ফাঁকা থাকলে সেটি সাধারণ মেধাতালিকা থেকে ভর্তি করানোর নিয়ম।
তবে ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর নতুন প্রশাসন এসে গত অক্টোবরের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সামিরাকে ‘বিশেষ নিয়মে’ ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়। একাডেমিক কাউন্সিলে অনেক শিক্ষক এটি নিয়ে বিরোধিতা করলেও আমলে নেওয়া হয়নি। গত ডিসেম্বরে সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিস থেকে ওই ছাত্রীর ভর্তির কাগজপত্রও ইস্যু করা হয়।
ভর্তির নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, ৩৭০৩ ক্রম থেকে মেধার ভিত্তিতে বিষয় নির্ধারণের সুযোগ নেই। তাই কোটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনির ওপরে অগ্রাধিকার দিতে সামিরার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মোল্লা তদবির করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে নির্ধারিত আসনের ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১ শতাংশ দলিত ও হরিজন সম্প্রদায়ের কোটা, ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা, ১ শতাংশ নৃগোষ্ঠী কোটা মিলিয়ে মোট ৮ শতাংশ কোটা রয়েছে। নির্ধারিত আসনের বাইরে যতজন পৌষ্য কোটায় উত্তীর্ণ হন, সবাইকে অতিরিক্ত হিসেবে ভর্তি করা হয়।
ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সাধারণভাবে মেধাতালিকার বাইরে বিষয় মনোনয়নের জন্য মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধীসহ প্রতিটি কোটার আলাদা মেধাক্রম হয়। এরপর উপাচার্যের সভাপতিত্বে সব ডিনকে নিয়ে কোটার বিষয়ে সভা হয়। সেখানে প্রতিটি কোটার মেধাক্রম অনুযায়ী দেওয়া হয় বিষয় মনোনয়ন। এরপর কোটার আসন ফাঁকা থাকলে তা পূরণ করা হয় সাধারণ মেধাতালিকা থেকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে কোনো কোটার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি নিয়মের পরিবর্তন আনে, তাহলে সেটি সবার জন্য প্রযোজ্য করতে হবে।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.
উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদের কার্যালয়ে দু’দিন গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি সমকালের এ প্রতিবেদক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।