গাজীপুরে বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা নিয়ন্ত্রিত ভাওয়াল রেঞ্জে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দিনব্যাপী গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর বিটের বাঘের বাজার শিরিরচালা হিজড়া পট্টি এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।

গত ৫ আগস্টের পর দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতির সুযোগে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভূমি দস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। তারা বনের খাস জমি দখল করে অবৈধভাবে বাড়ি-ঘর নির্মাণ শুরু করে। ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের মাহনা-ভবানীপুর মৌজার ভবানীপুর বিট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ১১.

৭২ একর বনভূমি ইতোমধ্যে দখল হয়ে গেছে। 

এসব জমিতে কয়েক হাজার নতুন ঘর নির্মাণ করা হয়েছে, যা বেশিরভাগই উচ্চবিত্ত শ্রেণির লোকদের দ্বারা নির্মিত। এসব স্থাপনা ভাড়া দেওয়া বা বিক্রির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

এ অভিযানে শিরিরচালা এলাকার মোট তিন একর সংরক্ষিত বনভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়। সেখানে অবৈধভাবে নির্মিত দ্বিতল ভবন, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ধরনের ৩০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।

জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ এবং বন বিভাগের যৌথ প্রচেষ্টায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।

বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা কার্যালয়ের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, “৫ আগস্টের পর বনের জমিতে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনা পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে। ইতোমধ্যে এই রেঞ্জের অধীন আরও দুটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”

তিনি ভূমি দস্যুদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যারা এখনো বনের জমি দখল করে আছেন, তারা দ্রুত স্বেচ্ছায় এসব স্থাপনা সরিয়ে নিন। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। এক ইঞ্চি বনের জমিও আর অবৈধভাবে দখল করে রাখতে দেওয়া হবে না।”

ঢাকা/রফিক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সচিবালয় অভিমুখে মিছিল, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে যাওয়ায় পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ একাধিক সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে ও লাঠিপেটা করে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

আজ রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে প্রেসক্লাব সংলগ্ন সচিবালয়ের ৫ নম্বর ফটকের কাছে এ ঘটনা ঘটে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনার জন্য সচিবালয়ের ভেতরে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

সকাল থেকেই ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের মধ্যে যাঁদের আবেদন করার বয়স শেষ হয়ে গেছে, তাঁরা আবেদনকারীর বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে তাঁদের একবার আবেদন করার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। বেলা দেড়টার দিকে তাঁরা সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সচিবালয় এলাকা গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অঞ্চল। এখানে ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। মিছিলকারীরা তা অমান্য করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের হালকা শক্তি প্রয়োগ করতে হয়েছে।’

আজকের ঘটনায় পাঁচ থেকে ছয়জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ডিসি মাসুদ বলেন, ‘মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের এক থেকে দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে হয়েছে। এতে আমাদের দু-একজন পুলিশ সদস্যও সামান্য আহত হয়েছেন।’

আন্দোলনকারীদের একজন রাজ্জাকুল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানালেও সরকার আমাদের দাবি মেনে নিচ্ছে না। এখন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে, অথচ আমাদের ১৭তম ব্যাচের সমস্যার সমাধান করছে না।’

এই আন্দোলনকারী বলেন, দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। তাই তিন দফা দাবি দিয়ে তাঁরা সচিবালয়ের দিকে যান। কিন্তু পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।

নিবন্ধনধারীদের তিনটি প্রধান দাবি হলো

১. আপিল বিভাগের রায় অনুসারে সনদের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে করোনা মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছরের আওতায় এনে ১৭তম ব্যাচের প্রার্থীদের জন্য বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অন্তত একবার আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।

২. ১৭তম ব্যাচের বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এনটিআরসিএর ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।

৩. আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএর রূপরেখা বাস্তবায়ন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ