বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত এইচ. ই ইয়াও ওয়েন বলেছেন, গত বছর জুলাই আগস্টের আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চীন ঢাকায় একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকা ও আশপাশের শহরের বর্জ্য প্রকল্প স্থাপন করছে। আগামীতে বাংলাদেশের জনগণ আরও সস্তায় বিদ্যৎ ব্যবহার করতে পারবে।

রোববার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুরে ওয়ামি স্ট্রাস্ট মাঠে চীন ও জামায়াত ইসলামির উদ্যোগে আয়োজিত খাদ্যসামগ্রী ও কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তবে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামির আমির ড শফিকুর রহমান।

অনুষ্ঠানে চীনা রাষ্ট্রদূত এইচ ই ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন সরকারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের জনগণের জন্য কিছু শীতের কম্বল ও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি। শীতকালীন তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ায় অনেকের জীবন মাত্রা দুরুহ হয়ে পড়েছে। এই কম্বল শীত নিবারণে সহায়ক হবে।

তিনি আরও বলেন, জামায়াতের আমিরকে ধন্যবাদ জানাই, বাংলাদেশের মানুষকে সহায়তা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি এই ওয়ামি স্কুল পরির্দশন করে খুশি হয়েছি। এই স্কুলে অনেক এতিম শিক্ষাথী জামায়াত ইসলামির মাধ্যমে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই এতিম শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানে চীনের পক্ষ থেকে সহায়তা দিবো। আমরা চীন রাষ্ট্রে ভবিষতে এতিম ও শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাব আমাদের চীনের জীবনযাত্রা দেখার জন্য। চীন বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করে থাকে চীনে কোটির উপরে মুসলমান রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ জামায়াতের আমির পরিদর্শন করে তাদের জীবনমান পরিদর্শন করেছেন।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন বাংলাদেশ কুটনীতিক সম্পর্ক ভাল রয়েছে। দুই দেশে আরও বন্ধন মজবুত করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। যার বার্তা বাংলাদেশের জনগণের কাছে পৌঁছে দিবো। তিনি আগামীতে চীনের বর্ষপূতিতে বাংলাদেশের জনগণকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কম্বলসহ খাদ্যসামগ্রী সহায়তা করতে পেরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্য জামায়াতের ইসলামির আমির ড শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশের যতগুলো বড় প্রকল্প রয়েছে, তার অধিকাংশগুলোতে চীনের সহায়তা রয়েছে। বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুতে চীনের আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা পার্টনারশিপ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যা বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। 

জামায়াতের আমির ড.

শফিকুর রহমান ও চীনা রাষ্ট্রদূত এইচ ই ইয়াও ওয়েন সহস্রাধিক অসহায় লোকজনের মাঝে কম্বল ও খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন। এ সময় অনুষ্ঠানে গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সফিউদ্দিন আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় শিবিরের সাবেক সভাপতি সালাউদ্দিন আইয়ুবী, কালিয়াকৈর উপজেলা জামায়াতের আমির মো. বেলাল উদ্দিন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন

যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।

যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে

২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।

শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’

গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি পুনর্বহাল
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
  • ক্রিকেট ম্যাচের দায়িত্ব পালন করতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা, আহত ২৭ নারী পুলিশ সদস্য
  • ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫