সানড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল: স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে বিজয়ী হলেন যারা
Published: 29th, January 2025 GMT
গত ২৩ জানুযারি যুক্তরাষ্টে বসেছে বিশ্বের অন্যতম স্বাধীন চলচ্চিত্র উৎসব সানড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এর ৪১তম আসর। দেশটির পার্বত্য রাজ্য ইউটাহ এর পার্ক সিটি ও সল্ট লেক সিটিতে হচ্ছে এই আসর। ২৩ জানুয়ারি শুরু হয় এই আয়োজন । এতে প্রদর্শিত হয়েছে শতাধিক ছোট-বড় সিনেমা। গতকাল (২৮ জানুয়ারি) উৎসব কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম। এদিন পার্ক সিটির দ্য পার্ক-এ আয়োজিত পুরস্কার প্রদান পার্টিতে নির্বাচিত ৫৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নির্মাতারা অংশ নেন। এতে সবাইকে ছাপিয়ে আন্তর্জাতিক নন-ফিকশন বিভাগে স্বল্পদৈর্ঘ্য গ্র্যান্ড জুরি পুরস্কার লাভ করে যুক্তরাজ্যের থিও পানাগোপোলস। সিনেমাটির নাম ‘দ্য ফ্লাওয়ার্স স্ট্যান্ড সাইলেন্টলি, উইটনেসিং’।
বিজয়ীদের তালিকায় আরও যারা আছেন
জুরি পুরস্কার ইউএস ফিকশন: ‘ট্রকাস দুরাস’
পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার: জাজমিন গার্সিয়া
প্রযোজক: স্যালি সু জিন ওহ, মাইতে অ্যাভিনা, স্কট ও’ডোনেল
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র
জুরি পুরস্কার আন্তর্জাতিক ফিকশন: ‘গ্র্যান্ডমা নাই হু প্লেইড ফেভারিটস’
পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার: চেংকিয়া
প্রযোজক: ড্যানিয়েল ম্যাটেস ও কারেন মাদার
দেশ: কম্বোডিয়া ও ফ্রান্স
জুরি পুরস্কার নন-ফিকশন: ‘উই ওয়ার দ্য সিনারি’
পরিচালক: ক্রিস্টোফার র্যাডক্লিফ
প্রযোজক: ক্যাথি লিন চে ও জেস এক্স.
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র
জুরি পুরস্কার অ্যানিমেশন: ‘কমো সি লা টিয়েরা সে লাস হুবিয়েরা ট্র্যাগাদো’
পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার: নাটালিয়া লিওন
প্রযোজক: লুস ক্যামিলি
দেশ: ফ্রান্স
বিশেষ জুরি পুরস্কার, অ্যানিমেশন পরিচালনা: ‘দ্য ইটিং অব এন অরেঞ্জ’
পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার: মে কিনড্রেড-বুথবি
দেশ: যুক্তরাজ্য
বিশেষ জুরি পুরস্কার, পরিচালনা: ‘টাইগার’
পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার: লরেন ওয়াটার্স
প্রযোজক: ডানা টাইগার
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র
পুরস্কার ঘোষণা ও প্রদান করা হলেও সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্যগুলোর বেশিরভাগই ৩০ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।রবার্ট রেডফোর্ডের প্রতিষ্ঠিত সানড্যান্স ইনস্টিটিউট স্বাধীন নির্মাতাদের সহায়তা প্রদান করে এবং নতুন কণ্ঠস্বরকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে সাহায্য করে।
১৯৮৫ সাল থেকে সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসব স্বাধীন নির্মাতাদের জন্য সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এবারের আয়োজনের পর্দা উঠেছিলো ২৩ জানুয়ারি। নামার কথা রয়েছে ২ ফেব্রুয়ারি। সে পর্যন্ত পার্ক সিটি ও সল্ট লেক সিটিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিনেমার আয়োজনগুলো।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ কশন
এছাড়াও পড়ুন:
তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।
মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।
সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।
প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।
আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।
মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।