তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদ সমূলে উৎপাটন করতে বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কারের ভিত্তি গড়ে দিয়ে যেতে চায়।

আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত ‘জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত সাংবাদিক এবং অসুস্থ/অসচ্ছল সাংবাদিকদের কল্যাণ অনুদান ও সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তির চেক বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাসসের

উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদ্যমান কাঠামো থেকে গেলে যে সরকারই আসুক, ফ্যাসিবাদ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে, আমরা তা হতে দেব না। রাষ্ট্রসংস্কার এ জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এর জন্য সময় লাগবে। সেই কাঠামো তৈরি হবার পর যে সরকারই আসুক, তারা কাঠামোকে ধরে রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনে আমরা ধাপে ধাপে এগিয়েছি। কোটা সংস্কার, নির্যাতন ও হত্যার বিচার এবং ফ্যাসিবাদের বিচার করতে হবে। এসব ঘটনার আসামি শেখ হাসিনার অবশ্যই বিচার করা হবে। দমন-পীড়ন নয় বরং বিচারের মাধ্যমে দেশে ন্যায়প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

নাহিদ বলেন, ‘গত ১৫ বছরে কার কি ভূমিকা ছিলো তা ভুলে না গিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে। জুলাই আমাদের ঐক্যের শিক্ষা দেয়, শিক্ষা দেয় যে, সমাজে অনেক ভিন্নমত থাকবে, এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু দেশ, জনগণ ও জাতির সংকটের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।’

সচেতন ও বস্তুনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য গণমাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ সময়ে বাংলাদেশকে নিয়ে বিভিন্নভাবে অনেকে ভ্রান্ত বা ভুল তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা বলছে, আমাদের গণমাধ্যম স্বাধীন নয়। সরকারের ওপর থেকে আপনাদের ওপর কোনো ধরনের চাপ নেই। আপনারা সত্যটা প্রচার করুন।’

নাহিদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সব সমালোচনাকে স্বাগত জানান। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে চাই। কিন্তু তাই বলে ফ্যাসিবাদের দোসররা যদি সুযোগ নিতে চায়, ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন করতে চায়, তবে আমরা কঠোর হব।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সময়ে সব প্রতিষ্ঠানেই দলীয়করণ ছিল এবং গণমাধ্যমগুলোর অনেকেই তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবুও অনেকে ঝুঁকি নিয়ে সত্যের ও ন্যায়ের পক্ষে থেকেছেন। যে সময়টা ইন্টারনেট ছিল না, সেইসময় তাদের কারণে প্রকৃত অবস্থাটা জানা গেছে।’

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও সংবাদ প্রচার করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকার জন্য শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র ও শ্রমিকদের সঙ্গে তারাও লড়াই করেছেন। তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পাঁচটি শহীদ পরিবারকে আজকে আমরা একসঙ্গে পেয়েছি, তাদের জন্য ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় কিছু করতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য আনন্দ ও গর্বের বিষয়। আমরা আশা করি, এই বৃত্তি প্রদানের কাজ অব্যাহত থাকবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা ফারজানা।

শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন ট্রাস্ট সদস্য এখন টিভির সাংবাদিক সাজিদ আরাফাত, বিএফইউজে নির্বাহী সদস্য শাহীন হাসনাত, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ূব ভূঁইয়া, বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, ডিইউজের সভাপতি মো.

শহিদুল ইসলাম, শহীদ সাংবাদিক মো. তাহির জামান প্রিয়’র মা শামসি আরা জামানসহ আরও অনেকে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সাংবাদিক মো. মেহেদী হাসান, মো. শাকিল হোসেন, আবু তাহের মোহম্মদ তোরাব, সোহেল আখঞ্জি, তাহির জামান প্রিয় ও প্রদীপ কুমার ভৌমিকের পরিবারের সদস্যরা এবং অনুদানপ্রাপ্ত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠান শেষে তথ্য উপদেষ্টা উপস্থিত অনুদানপ্রাপ্ত সবার হাতে চেক তুলে দেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম উপদ ষ ট র জন য চ র কর সদস য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্র্যাব স্টার অ্যাওয়ার্ড পেলেন এরশাদ হাসান

শ্রেষ্ঠ মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা হিসেবে ‘ট্র্যাব স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেলেন নাট্যকর্মী মো. এরশাদ হাসান। ২৮ জুলাই, জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।   

টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্র্যাব) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি বিভিন্ন শাখায় গুণীজনদের সম্মাননা দেওয়া হয়। 

পুরস্কারপ্রাপ্তির পর অনুভূতি ব্যক্ত করে এরশাদ হাসান বলেন, “এই স্বীকৃতি শুধু আনন্দের নয়, আরো দায়িত্ব ও অনুপ্রেরণার‌।” 

আরো পড়ুন:

রতন থিয়াম মারা গেছেন

‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’ নাটকের ৩৮তম মঞ্চায়ন

দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে মঞ্চ ও টেলিভিশনে অভিনয়, নাট্য সংগঠন এবং নির্দেশনার মাধ্যমে অবিচল কর্মযাত্রায় এরশাদ হাসান নিজেকে একজন পরিশ্রমী ও বহুমুখী শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, নায়লা আজাদ নূপুরসহ বরেণ্যদের নির্দেশনায় অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি টিভি নাটকেও শরীফুল (ললিতা), হেকমত, শীতল সাঁই, সঞ্জয়, রহমতসহ বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন এরশাদ। 

খল অভিনেতা শিবা সানু, রুমানা ইসলাম মুক্তি, মো. আশরাফুল হক ডন, অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু, গীতিকার ইথুন বাবু, কণ্ঠশিল্পী মৌসুমী চৌধুরী, অভিনেতা চঞ্চল খান, সাইদ হোসেনসহ অনেকে এই সম্মাননা পেয়েছেন। 

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান তানি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটিএন বাংলার উপদেষ্টা (অনুষ্ঠান ও সম্প্রচার) তাশিক আহমেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) সভাপতি কামরুল হাসান দর্পণ, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড ও উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন আনোয়ারা বেগম নিপা। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুহৃদ জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক, টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্র্যাব) এবং সভাপতিত্ব করেন কাদের মনসুর, সভাপতি, টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্র্যাব স্টার অ্যাওয়ার্ড পেলেন এরশাদ হাসান