বিশেষ সুবিধায় খেলাপি ঋণ পুনর্গঠনে আবারও সুযোগ দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ৫০ কোটি টাকা ও তার বেশি অঙ্কের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য একটি বাছাই কমিটি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সাবেক ব্যাংকার, ব্যবসায়ী ও সরকারি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের এ কমিটি কাজ করবে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণ যেমন– কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নিম্ন প্রবৃদ্ধি, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সর্বোপরি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে সৃষ্ট অভিঘাত মোকাবিলা করে অর্থনীতি চলমান রাখা এবং ব্যাংক খাত সুসংহত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের মাধ্যমে সচল ও লাভজনক পর্যায়ে উন্নীত করে ব্যাংকের ঋণ আদায় নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার সুপারিশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠন করেছে। কমিটির কার্যপরিধিতে ৫০ কোটি ও তদূর্ধ্ব অঙ্কের খেলাপি হওয়া ঋণ অন্তর্ভুক্ত হবে। ঋণগ্রহীতা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কিনা এবং সমস্যাসংকুল প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও নীতি সহায়তার মাধ্যমে ব্যবসায় ফেরানোর সুযোগ রয়েছে কিনা, তা যাছাই করে কমিটি সুপারিশ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন সাবেক ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব ড.

দেলোয়ার হোসেন, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডার সভাপতি আবদুল হক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিআরপিডি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী। 
জানা গেছে, এবার আর আগের মতো ঢালাও সুবিধা মিলবে না। এতদিন নানা কৌশলে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হচ্ছিল। সেটি বন্ধ হওয়ায় এখন দ্রুত বাড়ছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা হয়েছে। মোট ঋণের যা প্রায় ১৭ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা বা ৯ শতাংশ।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঋণ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ