আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু বই। বাড়িতে, গাড়িতে, ভ্রমণে সঙ্গী থাকে বই। বই নিয়ে গল্প করতেও পছন্দ করি। বইবিষয়ক আলোচনা কীভাবে আরও বাড়ানো যায়– সে চিন্তা থেকেই একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ার তাগিদ অনুভব করি। সেই চিন্তা থেকে শুরু হয় ‘অআকখ’-এর যাত্রা। আমাদের ট্যাগলাইন ‘বইয়ের খবর পাঠকের কাছে’। যেখানে বইপ্রেমীরা বই নিয়ে কথা বলবেন, তর্ক-আড্ডায় বইয়ের খবর পৌঁছে যাবে পাঠকের কাছে।
বইমেলায় স্টল কর্মীর কাজ করতে গিয়ে উপলব্ধি করি– লোকজন বই কিনতে চান। কোন বই কোথায় পাওয়া যাবে। কোন বই পড়া তাঁর জন্য ভালো হবে। আগে থেকে বুঝতে পারেন না। তখন বন্ধুদের আড্ডায় প্রসঙ্গ ওঠে, মেলায় এমন কিছু করা যেন পাঠক সহজে নিজের পছন্দের বইটি খুঁজে পান। এ কাজে সঙ্গী হন শেখ ফাতিমা পাপিয়া।
গত বছর বইমেলায় আমরা তরুণ লেখকদের নিয়ে একটি বিশেষ আয়োজন করি। বইমেলায় যাদের প্রথম বই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, তাদের বইয়ের গল্প এবং বই লেখার গল্প তুলে আনি। এতে অনেক লেখক উপকৃত হয়েছেন এবং তাদের বইয়ের কথা পাঠক জানতে পেরেছেন। তরুণ লেখক খুঁজে বের করা, যাচাই-বাছাই করা, ভিডিও সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং তা প্রচার করা– এ কাজ খুব একটা সহজ ছিল না।
সাক্ষাৎকারের বাইরেও আমরা এক ধরনের আড্ডা সিরিজ আয়োজন করি মেলায়। গল্পে গল্পে বইয়ের কথা। লেখকের সঙ্গে পাঠক বই নিয়ে গল্প করবেন। প্রতিদিন একজন লেখকের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ করে তা প্রচার করতাম; যা মেলায় বেশ সাড়া ফেলে। তরুণ, প্রবীণ ও প্রসিদ্ধ– সব ধরনের লেখক নিয়ে এ বিশেষ আয়োজন আমরা করেছি ২০২৪ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। গত বছর বইমেলার ৩১ দিনে ৩১ জন লেখকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি আমরা। একইসঙ্গে পাঠক এবং প্রকাশকদের কথা, বইমেলা নিয়ে তাদের প্রত্যাশার কথাও আমরা তুলে ধরেছি। প্রতিদিন বিভিন্ন বইয়ের তথ্য, বই নিয়ে আড্ডা, কোন বই কোথায় পাওয়া যাবে– এসব তথ্যসহ নানা বিষয়ে মেলার মাঠে আমাদের আয়োজন ছিল। প্রতিদিন প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা, আগত দর্শনার্থীদের বই খুঁজে পেতে সহায়তা করা ছিল আমাদের নিয়মিত কাজ।
গত বছর আমরা ঝোঁকের মাথায় কাজটি শুরু করেছিলাম। আমাদের আশপাশের শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতা ছাড়া এই বিশাল কার্যক্রম সফল করা সম্ভব ছিল না। আমাদের সঙ্গে যুক্ত আছেন বিভিন্ন ক্যাম্পাসের অনেক তরুণ। আরও আছেন অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী- শুভানুধ্যায়ী। যারা শুরু থেকেই পাশে ছিলেন, তারা পরামর্শ দিয়েও নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। সেই সাহস নিয়ে গত বছরের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যকে সঙ্গী করে নতুন উদ্যমে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৫-এ কাজ করবে ‘অআকখ’। বাংলা একাডেমির অনুমোদনক্রমে এ বছর একটি সাহিত্য মিডিয়া স্টল (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২১৮ নম্বর স্টল) পেয়েছি আমরা। সাহিত্য মিডিয়া হিসেবে আমাদের যাত্রা ও কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছি। বাংলা সাহিত্যকে ঘিরে আমাদের এ যাত্রায় যারাই যুক্ত হতে চান, তাদের স্বাগত ও আমন্ত্রণ জানাই। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গত বছর বই ন য় দ র বই বইম ল বইয় র
এছাড়াও পড়ুন:
চারঘাটের নন্দনগাছীতে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এতে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ।
এ সময় আন্দোলনকারীরা স্টেশন সংস্কার ও আন্তনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। বেলা একটার দিকে কর্মসূচি শেষ হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। দাবির মধ্যে ছিল সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের সংস্কার।
১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ জনবল ছিল ১২ জন। বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। শুধু দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অবরোধে অংশ নেওয়া লোকজন ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে ট্রেন থামানোর দাবিতে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদীগামী একটি মেইল ট্রেন এলে স্টেশনে প্রবেশের আগেই জাতীয় পতাকা ও লাল পতাকা নিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন আন্দোলনকারী। তাঁরা ট্রেনের চালকের রুমে গিয়ে ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেন। তাঁরা কেউ রেললাইনে, কেউ ট্রেনের ছাদে উঠে আবার কেউ প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেন। প্রায় ১০-১২ মিনিট পর ট্রেনটিকে যেতে দেওয়া হয়।
এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আসে চিলাহাটি থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর ট্রেন বরেন্দ্র এক্সপ্রেস। নন্দনগাছী রেলস্টেশনে ট্রেনটির নির্ধারিত যাত্রাবিরতি নেই। তবে দাবি আদায়ের জন্য রেললাইনে সাধারণ লোকজন অবস্থান নেওয়ায় ট্রেন দুটি সেখানে থামতে বাধ্য হয়। প্রায় ১৫ মিনিট ট্রেনটিকে আটকে থাকার পর আবু সাইদ চাঁদের সহযোগিতায় ট্রেনটি সেখান থেকে রাজশাহীর দিকে রওনা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে