গাড়ির সুরক্ষা দেবে জিপিএস ট্র্যাকার
Published: 1st, February 2025 GMT
সারাদেশে, বিশেষ করে রাজধানীতে গাড়ির সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে; সঙ্গে বাড়ছে গাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা। গাড়ি চুরি, এসির অযথা ব্যবহার, ফুয়েল চুরি ও ড্রাইভারদের সন্দেহজনক কার্যকলাপ– সবই গাড়ির মালিকদের নিত্যদিনের দুশ্চিন্তার কারণ। এমন অবস্থায় গাড়ির মালিককে দুশ্চিন্তা থেকে কিছুটা রেহাই দিতে প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছে জিপিএস ট্র্যাকার প্রহরী।
অন্যরকম ইলেকট্রনিকসের উদ্যোগে ও রকমারি ডটকম-এর চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগের নেতৃত্বে ‘শখের গাড়ি, যত্নে রাখি’ প্রতিশ্রুতিতে কাজ করছে ট্র্যাকারটি। গাড়ির মালিকদের চিহ্নিত কিছু সমস্যা সমাধানে পরিষেবার উন্নয়ন করা হয়। বর্তমানে ট্র্যাকারটি ১২ হাজারের বেশি গাড়ির সুরক্ষায় নিয়োজিত। যার মধ্যে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের হাজারের বেশি গাড়ি নিবন্ধিত।
সারাদেশে গত তিন মাসে গাড়ি চুরির সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে, যা গাড়ির মালিকদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। সাধারণত গাড়ি চুরি বা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে পুলিশি সহায়তা, জিজ্ঞাসাবাদ ও আনুমানিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতিতে বেশ কিছু সমস্যা বিদ্যমান। তদন্ত ও প্রক্রিয়াকরণে বহু সময় নষ্ট হয়, তথ্যের সঠিকতা ও দ্রুত প্রতিকার পাওয়া যায় না। আবার গাড়ির সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা দুরূহ হয়ে যায়।
জানা গেছে, নিজস্ব গবেষণার মাধ্যমে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, প্রোডাকশন, ওয়েব পোর্টাল ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। জিপিএস ট্র্যাকার গ্রাহককে যে কোনো সময় গাড়ির সঠিক অবস্থান সরাসরি প্রদর্শন করে। ফলে গাড়ির মালিকরা যে কোনো স্থানে থেকে নিজের গাড়ি তদারকি করতে পারেন। বিশেষ কিছু ফিচার হলো আনলিমিটেড জিও ফেন্স, ডেস্টিনেশন অ্যালার্ট, প্যানিক অ্যালার্ট, এসি অন-অফ নোটিফিকেশন, এসি ইউজেস রিপোর্ট, ডকুমেন্টেশন রিমাইন্ডার, ড্রাইভার প্রোফাইল।
নির্মাতারা জানান, ট্র্যাকারে বিশেষ ফিচারের মধ্যে লাউড হর্ন, ডোর অ্যালার্ট ও ইন-অ্যাপ ড্রাইভার কলিং উল্লেখযোগ্য। ট্র্যাকারটি বিটিআরসি নিবন্ধনকৃত আইএসও সনদপ্রাপ্ত এবং ভিটিএসপিএবি নিবন্ধিত। ২৪ ঘণ্টার গ্রাহকসেবায় কাজ করছে প্রশিক্ষিত কারিগরি দল। ইনস্টলেশন থেকে বিক্রয়োত্তর সেবার প্রতিটি ধাপেই পরিষেবা নিশ্চিতে উদ্যোক্তারা কাজ করছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।