বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে দ্বিতীয় ম্যাচ হামজা চৌধুরীর। বাংলাদেশের মাটিতে হয়েছে অভিষেক। ঘরের মাঠে হামজার খেলা দেখতে আসা দর্শকদের শুরুতেই উদযাপনে মাতিয়েছেন তিনি। ম্যাচের ৩ মিনিটের মধ্যে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে নিয়েছেন তিনি।
ম্যাচের শুরু থেকে সুযোগ তৈরি করতে থাকা বাংলাদেশ দল কর্ণার কিক পায়। শট নেন জামাল ভূঁইয়া। বক্সের ঠিক মাঝ বরাবর থেকে লাফিয়ে নিঁখুত এক হেড নিয়ে গোল করেন হামজা।
ভুটানের বিপক্ষে এই ম্যাচে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে ফাহমিদুল ইসলামের। তিনি ভারত ম্যাচের আগে সৌদি আরবের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
বাংলাদেশের শুরুর একাদশ: মিতুল মার্মা (গোলরক্ষক), তপু বর্মন, সাদ উদ্দিন, তারিক কাজী, তাজ উদ্দিন (ডিফেন্ডার), সোহেল রানা, হামজা চৌধুরী, জামাল ভূঁইয়া (মিডফিল্ডার), কাজেম শাহ, ফাহমিদুল ও রাকিব হোসেন (ফরোয়ার্ড)।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মসজিদে আকসা ভ্রমণে নবীজি (সা.)
সুরা বনি ইসরাইল, পবিত্র কোরআনের ১৭তম সুরা, মক্কায় অবতীর্ণ। এর আয়াত সংখ্যা ১১১। ‘ইসরা’ অর্থ রাত্রিকালীন ভ্রমণ, যা নবীজি (সা.)-এর মিরাজের ঘটনাকে নির্দেশ করে। এ ছাড়া বনি ইসরাইলের বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ থাকায় এটি ‘সুরা বনি ইসরাইল’ নামেও পরিচিত। এই সুরায় মিরাজের অলৌকিক ভ্রমণ, সামাজিক সম্প্রীতির জন্য ১৪টি শিষ্টাচার এবং পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
পবিত্র তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায়, যার চারপাশ আমি বরকতময় করেছি, যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনসমূহ দেখাই।(সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)মিরাজ: ঊর্ধ্বজগতের অলৌকিক ভ্রমণ
মহানবী (সা.)-এর মিরাজের ঘটনা নবুওয়াতের ১১তম বছরের ২৭ রজব রাতে সংঘটিত হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল ৫১ বছর। জিবরাইল (আ.) তাঁকে নিয়ে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় যান। পথে জমজমের পানি দিয়ে তাঁর বুক পবিত্র করা হয়। বোরাক নামক বিশেষ বাহনে মসজিদুল আকসায় পৌঁছে তিনি সব নবী-রাসুলের ইমামতিতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। এরপর তিনি সপ্তম আসমান অতিক্রম করে সাতজন নবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত ভ্রমণের পর রফরফ বাহনে তিনি একাকী আরশে আজিমে পৌঁছে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন।
তাঁর বয়স ছিল ৫১ বছর। জিবরাইল (আ.) তাঁকে নিয়ে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় যান।আরও পড়ুনস্বজাতিকে বাঁচাতে চাইল যে কাঠমিস্ত্রি১৬ এপ্রিল ২০২৫এই ভ্রমণে তিনি জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করেন এবং উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে ফিরে আসেন। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘পবিত্র তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায়, যার চারপাশ আমি বরকতময় করেছি, যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনসমূহ দেখাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
সামাজিক সম্প্রীতির ১৪ শিষ্টাচার
সুরার ২৩ থেকে ৩৯ আয়াতে সামাজিক সম্প্রীতি ও নৈতিকতার জন্য ১৪টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ১. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত না করা। ২. পিতামাতার সঙ্গে সদাচার করা। ৩. আত্মীয়দের অধিকার আদায় করা। ৪. মিসকিন ও পথচারীদের অধিকার দেওয়া। ৫. অপচয় থেকে বিরত থাকা। ৬. কৃপণতা না করা। ৭. সন্তান হত্যা না করা। ৮. ব্যভিচারের নিকটবর্তী না হওয়া। ৯. অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা না করা। ১০. এতিমের সম্পদের প্রতি হাত না বাড়ানো। ১১. ওয়াদা পালন করা। ১২. সঠিকভাবে ওজন ও পরিমাপ করা। ১৩. অজ্ঞাত বিষয়ে কথা না বলা। ১৪. পৃথিবীতে দম্ভভরে চলাফেরা না করা।
এই নির্দেশনাগুলো মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার
সুরায় পিতামাতার প্রতি সদাচারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে: ‘তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক না করতে এবং পিতামাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে। তাদের একজন বা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে পৌঁছালে তাদের প্রতি ‘উফ’ বলো না, তাদের ধমক দিয়ো না এবং তাদের সঙ্গে সম্মানজনক কথা বলো।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৩)
এই ভ্রমণে তিনি জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করেন এবং উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে ফিরে আসেন।এই আয়াতে পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধা ও দয়ার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা ইসলামের মৌলিক শিক্ষার অন্যতম।
আরও পড়ুনঅলৌকিক উট১৩ এপ্রিল ২০২৫আল্লাহর সুন্দর সব নাম
সুরায় আল্লাহর সুন্দর নামের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে: ‘তাঁকে আল্লাহ নামে ডাকো বা রহমান নামে ডাকো, তাঁর সব নামই সুন্দর।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১১০)
এ ছাড়া আল্লাহর একত্ববাদ নিশ্চিত করে বলা হয়েছে যে তিনি কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি।
সুরা বনি ইসরাইল মিরাজের অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহর নিদর্শন ও মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা তুলে ধরে। এটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপহার উম্মতের জন্য বয়ে আনে। একই সঙ্গে সামাজিক সম্প্রীতির জন্য ১৪টি শিষ্টাচার এবং পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়ে এটি মানবজীবনের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এই সুরা আমাদের আল্লাহর একত্ববাদে অবিচল থাকতে এবং সামাজিক দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করে।
আরও পড়ুনজিভের জড়তা কাটাতে মুসা (আ.) যে প্রার্থনা করেছিলেন০৮ এপ্রিল ২০২৫