তাঁর কণ্ঠে মুগ্ধ সারা পৃথিবী। বলিউডকে একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন সোনু নিগম। সম্প্রতি পুনেতে একটি লাইভ পারফর্ম্যান্সের সময় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন এই নন্দিত শিল্পী। নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি শেয়ার করেছেন। প্রথমে বিষয়টিতে খুব একটা গুরুত্ব দেননি শিল্পী। তবে পরে আর গান গাইতে পারছিলেন না যন্ত্রণায়। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে কনসার্ট থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি যে পিঠের ব্যথায় একেবারে কাতর, তা তাঁর শেয়ার করা ভিডিওতেই স্পষ্ট। চিকিৎসার জন্য গাড়িতে তোলার সময় ব্যথায় কেঁদে ফেলেন। এরপর তড়িঘড়ি করে তাঁকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। ‘ব্যাক পেইন’ কতটা গুরুতর ছিল, সেই যন্ত্রণার মুহূর্ত সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন গায়ক। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘জীবনের সবচেয়ে কঠিন দিন আমার কাছে। মনে হচ্ছে যেন মেরুদণ্ডে সুঁচ ফোটানো হচ্ছে।’ তারপরই যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা গেছে তাঁকে। 

বিছানায় বিশ্রাম নিতে নিতে গায়ক বলেন, ‘স্টেজে পারফর্ম করার সময় আমি প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছি। যাইহোক, আমি কোনোভাবে সামলে উঠতে পেরেছি এবং আমার অনুষ্ঠান সেরেছি। আমি খুশি যে, আমার পারফরম্যান্স ভালো ছিল।’ 

অসুস্থতার সময় সোনু নিগমকে তাঁর টিমের সদস্যরা সাহায্য করেছেন। নিজের পায়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলেন না তিনি। তবুও চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি তিনি।  সোনুর এই অবস্থা দেখে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ভক্তরা। প্রিয় গায়কের পোস্টের কমেন্ট বক্সে কেউ লিখেছেন, ‘সোনু জি, ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন, আপনি আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা।’ কেউ বলেন, ‘নিজের যতœ নিও সোনুজি।’ শ্রোতাদের প্রত্যাশা পূরণ করা কর্তব্য বলেই মনে করেন সোনু। তাই ব্যথা নিয়েও ভক্তদের জন্য সেরাটা দিতে পেরে তিনি খুশি। পুনেতে পারফর্ম করার আগে সোনু আরও একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে, শিল্পী মাটিতে শুয়ে রেওয়াজ করছেন। ব্যথা নিয়েও তাঁর গানের চর্চায় কোনও কমতি নেই। ভক্তরাও প্রশংসায় ভরিয়েছেন শিল্পীকে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন ন গম কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ