রাজশাহীর চেয়ে গাজীপুরে নারী নির্যাতন বেশি: আসকের গবেষণা
Published: 5th, February 2025 GMT
গাজীপুরে ৫৯ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার, যা রাজশাহীতে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। দুই জেলায় গড়ে ৪৯ দশমিক ২০ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার। এ তথ্য উঠে এসেছে যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ব্যাপকতাভিত্তিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে।
বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সহিংসতার প্রতিকার বিধানে নীতি পরিবর্তন ও পরিপূর্ণ আইন প্রণয়নে অ্যাডভোকেসির উদ্দেশ্যে এ গবেষণা চালানো হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রোগ্রাম অফিসার নার্গিস সুলতানা। সভাপতিত্ব করেন আসকের নির্বাহী কমিটির সদস্য রোকসানা খন্দকার। স্বাগত বক্তব্য দেন আসকের উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ।
অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল তুলে ধরেন ডেটাস্কেপ কনসালট্যান্ট মোশাররেফ হোসেন। তিনি জানান, ব্র্যাকের সহযোগিতায় আসক গাজীপুর ও রাজশাহীতে অ্যাওয়ারনেস অ্যাকশন অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ফর জেন্ডার ইকুয়াল অ্যান্ড সেফ স্পেসেস ফর উইম্যান অ্যান্ড গার্ল-অগ্নি প্রকল্পের আওতায় গবেষণা চালায়। ৩১১ নারী-পুরুষের ওপর দুই সপ্তাহ ধরে গবেষণা চলে। এতে দেখা যায়, ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশের জেন্ডারবেজড ভায়োলেন্স (জেবিভি) সম্পর্কিত জ্ঞান আছে। দুই জেলায় ৫৯ দশমিক ২০ শতাংশ নারী জেবিভির শিকার। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ৩৬ শতাংশ নারী নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি, ৭৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ নির্যাতনের শিকার। সচেতনতার অভাবে যেমন, শিক্ষার অভাবে ৭৭ দশমিক ৪০ শতাংশ নারী যৌন সহিংসতার শিকার হন। সচেতনতার অভাবে ৬৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ সহিংসতার শিকার হন। সংস্কৃতিগত প্রতিবন্ধকতার জন্য ২৪ দশমিক ৮০ শতাংশ সহিংসতার শিকার হন। কমিউনিটির মধ্যে আলোচনার অভাবে ১৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ সহিংসতার শিকার হন।
নার্গিস সুলতানা বলেন, অনেক নারী নির্যাতন সহ্য করে চাকরিতে টিকে থাকে। কাউকে কিছু বলতে পারে না। সহ্য করতে না পারলে চাকরি ছেড়ে দেয়। অনেক স্থানে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে কমিটি আছে। কিন্তু কার্যকর নয়। এ বিষয়টি আমলে আনতে হবে। পরিবার থেকে শিশুদের গুড টাচ, ব্যাড টাচ শিখিয়ে দিতে হবে।
রোকসানা সুলতানা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করতে গিয়ে মনে হয়, কিছু নারী পিছিয়ে পড়ছে, যা আমলে আনা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কর্মক্ষেত্রে নারীকে সুরক্ষা দিতে পারছি না। বেসরকারি সংস্থায় অনুদানকারী কমে গেছে। এখন কাজটাকে কীভাবে এগিয়ে নিতে হবে, তা ভাবতে হবে।
মাবরুক মোহাম্মদ বলেন, সহিংসতা বন্ধ করতে না পারার কারণ হচ্ছে, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে নির্যাতনের বিষয়গুলো ঢুকে আছে। সমাজে নারী নির্যাতনের ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে। আর যদি সহিংসতার ঘটনা ঘটে, তাহলে যেন প্রতিকার পাওয়া যায়, সেই পদক্ষেপ নিতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইন ও স ল শ ক ন দ র আসক দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।
ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।
অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।
ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়