নাটোর শহরে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের (শিমুল) জান্নাতি প্যালেসে আবার আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হন। সেখান থেকে মাইক নিয়ে তাঁরা মিছিল করতে করতে কান্দিভিটুয়ায় সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের বাড়িতে যান। পরে তাঁরা বাড়িটির গ্যারেজে থাকা আগের পোড়ানো একটি গাড়িতে আবার আগুন দেন। একই সময় তিনতলা এ বাড়ির বারান্দায় আগুন জ্বালানো হয়।

৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শফিকুল ইসলামের ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত ছিল। শফিকুল ইসলাম বর্তমানে আত্মগোপনে আছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় ওই বাড়ির আঙিনায় ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নাটোর জেলা শাখার প্রতিনিধি তৌফিক নিয়াজ। তিনি বলেন, এই বাংলায় কোনো স্বৈরাচারের স্থান নেই। স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা যেখানে আছে, তাদের ধ্বংস করা হবে। তারা ফিরে আসতে চাইলে প্রতিহত করা হবে। এরই অংশ হিসেবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সহযোগী শফিকুল ইসলামের অবৈধভাবে গড়া জান্নাতি প্যালেস উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনখুলনায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ‘শেখ বাড়ি’র একটি অংশ১ ঘণ্টা আগে

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুর রহমান বলেন, ‘সাবেক সংসদ সদস্যের বাড়িটি ৫ আগস্ট পোড়ানো হয়েছিল। তাতে বাড়ির অবকাঠামো ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। আবার সেখানে আগুন ধরানো হয়েছে বলে জেনেছি।’

আরও পড়ুনধানমন্ডিতে আজ দুপুর পর্যন্ত কী কী হলো১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ