Prothomalo:
2025-05-01@03:04:52 GMT

ই–সিগারেট কি নিরাপদ

Published: 7th, February 2025 GMT

ইদানীং নতুন প্রজন্মের মধ্যে ই-সিগারেট, ভেপ, হিটেট টোব্যাকো পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। লোকজনকে এ বলে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে যে, ‘ই-সিগারেট প্রচলিত সিগারেটের বিকল্প, ধূমপান ত্যাগে কার্যকর। সবচেয়ে বিভ্রান্তির কথা হলো, ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর।’

কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিকোটিনযুক্ত ই-সিগারেট আসক্তি বাড়ায় ও স্বাস্থ্যহানিকর। দীর্ঘ মেয়াদে এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব সম্পর্কে এখনো জানা না গেলেও এটা প্রতিষ্ঠিত যে এগুলো বিষাক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি, যার মধ্যে কিছু উপাদান ক্যানসার, ফুসফুস ও হার্টের রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ই-সিগারেটের ব্যবহার বুদ্ধি বিকাশের প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত করে। এটি অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ভ্রূণের বিকাশ নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। এমনকি পথচারীদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ ই-সিগারেট থেকে নির্গত ধোঁয়া।

সবচেয়ে বিভ্রান্তির কথা হলো, ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর।

অন্যান্য ক্ষতি

ই-সিগারেট একটি কৃত্রিম সিগারেট, যা আগুন ধরানো ছাড়াই টান দিলে ধোঁয়া বের হয়। এটি নেশা উদ্দীপক ও মাদকাসক্তি তৈরি করে। ভেপিং ব্যবহারকারীদের শরীরে ডোপামিনের নিঃসরণ বাড়ে, যা মস্তিষ্কে প্রশান্তিদায়ক অনুভূতি তৈরি করে। ফলে একধরনের আসক্তি হয়।

ই-সিগারেটের তরল মিশ্রণ গরম হয়ে উৎপাদিত ফরমালডিহাইড শরীরে রক্ত সঞ্চালন ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ই-সিগারেটের ধোঁয়া থেকে যেসব রাসায়নিক পদার্থ বের হয়, তা অন্যান্য স্বাভাবিক তামাকজাত দ্রব্যের মধ্যেও রয়েছে। তাই এর ক্ষতিকর প্রভাব আসল সিগারেটের চেয়ে কম নয়।

ই-সিগারেট থেকে নির্গত ফ্রি র‍্যাডিকলস ফুসফুসের কোষগুলোতে বিষক্রিয়া তৈরি করে। ই-সিগারেটের হিটিং এলিমেন্ট এর তরল দ্রবণকে অ্যারোসলে রূপান্তরিত করে। এতে উৎপন্ন বাষ্প নিশ্বাসের মধ্য দিয়ে শরীরে ঢুকে সরাসরি ফুসফুস, রক্তপ্রবাহ ও শরীরের অন্যান্য কোষও আক্রমণ করে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ১০ গুণ ক্ষতিকর। ভেপ, ই-সিগারেট ব্যবহারকারীরা স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের শিকার হতে পারেন।

শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্যও বিপজ্জনক ই-সিগারেটের নিকোটিন। এই নিকোটিন শুধু শ্বাসনালির মিউকাসের ক্ষতি করে না, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলে।

ই-সিগারেটে ব্যবহৃত শক্তিশালী ব্যাটারি দিয়ে তাপ উৎপন্ন হয়। ব্যাটারির বিস্ফোরণে ব্যবহারকারীর মারাত্মকÿ ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, এমনকি মৃত্যুপর্যন্ত হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যে তরুণেরা ই-সিগারেট ব্যবহার করেন, পরবর্তী সময়ে তাঁদের সাধারণ সিগারেট ব্যবহার করার সম্ভাবনা প্রায় তিন গুণ। আবার অনেকে ই-সিগারেটের সঙ্গে ধূমপানও করেন, যা ভয়ানক বিপদ ডেকে আনে। সাধারণ ধূমপায়ীদের তুলনায় দ্বৈত রকমের সিগারেট ব্যবহারকারীদের হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি ৫০০ শতাংশ বেশি।

শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভারতসহ বিশ্বের ১২১টি দেশ ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ও বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে ৩৯টি দেশ। তাই এ বিষয়ে আমাদেরও সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।

ড.

অরূপ রতন চৌধুরী, প্রফেসর ও অনারারি সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডেন্টিস্ট্রি বিভাগ, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গ র ট ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান

ভুলক্রমে সীমানায় ঢুকে পড়ায় পাকিস্তানি রেঞ্জারদের হাতে আটক হয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি বিএসএফের অনুরোধেও কর্ণপাত করছে না পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকে পঠানকোট বিএসএফ দপ্তরে স্বামীর সর্বশেষ খবর জানিত ছুটে গেছেন পুর্নমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও পরিবার। 

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে পেহেলগাও সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার ভুল করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে আটক হন বিএসএফ সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রিষড়া পৌরসভার ১৩ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। পুর্নম পাঠানকোটের ফিরোজপুর বর্ডারে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি চব্বিশ ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ কনস্টেবল। 

বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব পালনকালে কড়া রোদে ক্লান্ত হয়ে পড়লে গাছের নিচে আশ্রয় নেন পুর্নম। এ সময় তিনি ভুল করে বর্ডার পেরিয়ে গেলে পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে আটক হন। এ দিকে ঘটনার পর তিনবার পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছে বিএসএফ। কিন্তু তারা পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে দেয়নি। 

স্বামীর এমন দুঃসংবাদে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী। শেষবার হোলির সময় ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন পুর্নম। গত ৩১ মার্চ কাজে যোগ দেন তিনি।  

পুর্নমের বাবা ভোলানাথ সাউ জানান, ছেলেকে নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। কোনো খবর পাচ্ছেন না। বিএসএফ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা মিটিংয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বলে তাকে জানানো হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে ছেলেকে মুক্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন। 

সীমান্তরক্ষীদের ভুল করে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এ ক্ষেত্রে দুই বাহিনীর বৈঠকের পরে তাদের মুক্তিও দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি ভিন্ন। পাক রেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। গত শুক্রবার পর্যন্ত এই ইস্যুতে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসেছেন বিএসএফ এবং পাক রেঞ্জার্সের প্রতিনিধি দল। কিন্তু মিমাংসা হয়নি।   

এরপরই রবিবার পুর্নমের বাড়ি যান বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা পুর্নমকে মুক্ত করে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন। যদিও মৌখিক কথায় আর ভরসা রাখতে রাজি নন রজনী। এ কারণে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আজ সোমবার পাঠানকোটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সেখানে তথ্য না পেলে দিল্লি গিয়ে স্বামীর খবর জানতে চাইবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

বিএসএফের পরিচালক জেনারেল দলজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন ঘটনার পরে ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণরেখায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে আনতে সব রকমের চেষ্টা চলছে। এমনকি পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে কমান্ডার স্তরে বৈঠকের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

সুচরিতা/তারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘একদিন দেখি পশুরমতো ঘরের কোণে বসে কাঁপছে ববি’
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা, এক বছরের কারাদণ্ড
  • ‘শি জিনপিং ফোন করেছিলেন’ ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান