জানুয়ারির শীতে ২৮ হাজার কোটি টাকার ‘গরম’ দলবদলের বাজারে
Published: 8th, February 2025 GMT
২৩৫ কোটি মার্কিন ডলার!
বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ হাজার ৬৭০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা প্রায়। এটা ছেলেদের ফুটবলে জানুয়ারির শীতকালীন দলবদলে আন্তর্জাতিক ট্রান্সফার বিশ্বব্যাপী ক্লাবগুলোর মোট খরচের অঙ্ক, যা গত বছরের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হওয়া দলবদলের এই খরচের তথ্য জানিয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
আরও পড়ুন৭ গোলের ম্যাচে আর্জেন্টিনার জয়, জিতেছে ব্রাজিলও৪ ঘণ্টা আগেফিফার মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা ভিন্ন ভিন্ন দেশের ক্লাবগুলোর মধ্যে খেলোয়াড় বিকিকিনির হিসাব এটি। জানুয়ারির এই উইন্ডোয় ৫৮৬৩টি আন্তর্জাতিক দলবদল সম্পন্ন হয়েছে। দলবদল সংখ্যায় এটি নতুন রেকর্ড। গত বছরের একই সময়ে হয়েছিল ৪৯৬৩টি আন্তর্জাতিক দলবদল। এবার দলবদল ৯০০টি বা ১৯ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।
ফিফার আন্তর্জাতিক ট্রান্সফার স্ন্যাপশটের হিসাব অনুযায়ী, এবার আন্তর্জাতিক দলবদলে বিশ্বব্যাপী ক্লাবগুলো যত খরচ করেছে, তা আগের চেয়ে ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ বেশি—২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক দলবদলে ১৫৭ কোটি ডলার খরচের রেকর্ড হয়েছিল।
গত মাসে আন্তর্জাতিক দলবদলে খরচের শীর্ষে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো। খরচের পরিমাণ ৬২ কোটি ১৬ লাখ ডলার, যার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি একাই খরচ করেছে ২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। শীতকালীন এই দলবদলে ওমর মারমৌশ, নিকো গঞ্জালেস, আবদুকোদির খুশানভ, ভিতর রেইস ও জুমা বাহকে কিনেছে পেপ গার্দিওলার দল।
কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড জন ডুরান এই উইন্ডোর সবচেয়ে ব্যয়বহুল দলবদল। ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার ডলারে অ্যাস্টন ভিলা থেকে তাঁকে কিনেছে সৌদি প্রো লিগের দল আল নাসর। অ্যাড–অনস হিসেবে এই দলবদলের খরচের অঙ্কটা আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন‘ফার্গি টাইম’ নয়, ইউনাইটেডে এবার ‘অফসাইড টাইম’৪ ঘণ্টা আগেযেসব দেশের ক্লাবগুলো সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে, তার মধ্যে শীর্ষ পাঁচের বাকি চারটি দেশ হচ্ছে—জার্মানি (২৯ কোটি ৫৭ লাখ ডলার), ইতালি (২২ কোটি ৩৮ লাখ ডলার), ফ্রান্স (২০ কোটি ৯৭ লাখ ডলার) ও সৌদি আরব (২০ কোটি ২১ লাখ ডলার)। আর খেলোয়াড় বেচে আয়ের দিক থেকে সবার ওপরে ফ্রান্স। মোট ৩৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের খেলোয়াড় বিক্রি করেছে ফরাসি ক্লাবগুলো। ২২ কোটি ৬২ লাখ ডলার আয় করে এরপরই আছে জার্মান ক্লাবগুলো। ১৮ কোটি ৫২ লাখ ডলার আয় করে তৃতীয় ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো। চারে পর্তুগাল (১৭ কোটি ৬৪ লাখ ডলার) ও পাঁচে ইতালির (১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার) ক্লাবগুলো।
এবারের শীতকালীন দলবদলে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড়ের ঠিকানা হয়েছে ব্রাজিলের ক্লাবগুলো—৪৭১, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আর্জেন্টিনায় ২৫৫ জন।
মেয়েদের ফুটবলেও জানুয়ারির দলবদলের উইন্ডোয় রেকর্ড ৫৮ লাখ ডলার খরচ হয়েছে। দলবদল সম্পন্ন হয়েছে মোট ৪৫৫টি, যা আগের তুলনায় ১৮০ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো মেয়েদের দলবদলে সর্বোচ্চ ২৩ লাখ ডলার খরচ করেছে। সর্বোচ্চ ৩৯ জন খেলোয়াড়ও পেয়েছে ইংলিশ ফুটবলের ক্লাবগুলো।
আরও পড়ুন‘জীবনের সঙ্গী’কে বিদায়ী বার্তা রোনালদোর০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দলবদল র ফ টবল খরচ র র খরচ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের
বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে তিনি ‘স্বৈরাচারের (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন’ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের প্রথম দিনে উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাজা।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এ সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ শব্দ দিয়ে যথাযথভাবে বোঝানো যায় না।
উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এই নৈশভোজে রাজার বক্তৃতায় দুই দেশের গভীর বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় এ সফর চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। এদিন নানা অনুষ্ঠানে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেবেন ব্রিটিশ রানি ক্যামিলা ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস।
রাজকীয় অ্যাপায়ন শেষে ট্রাম্পের আজকের কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনায় রূপ নেবে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সরকারি বাড়ি চেকার্সে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও হবে।
বুধবারের (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় ভোজ ছিল আড়ম্বর ও রাজনীতির সমন্বয়ে সাজানো এক বিশেষ আয়োজন। ভোজে রাজা, রানি ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় উইন্ডসরে।
উইন্ডসর ক্যাসলের মনোরম প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মেলানিয়া রাজকীয় ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সেনাদলের অভিবাদন গ্রহণ করেন তারা।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট ও মেলানিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ এক বৈঠকও করেন।
ভোজসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রিন্স উইলিয়ামের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি হবেন ‘অসাধারণ সফল নেতা’। প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনকে তিনি আখ্যা দেন ‘উজ্জ্বল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুন্দরী’ হিসেবে।
ট্রাম্পের ঐতিহাসিক এ দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর প্রমাণ করেছে রাজা ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। সফরে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তও দেখা গেছে।
এরপর রাজপ্রাসাদে ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে একযোগে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকে একই রকম তোপধ্বনি হয়।
ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩০০ সদস্য। ছিল শতাধিক ঘোড়া।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
বিবিসি বলছে, রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।
যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর হলো একধরনের নরম শক্তির কূটনীতি, যা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য রাজকীয় আকর্ষণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর শুরু হওয়ার সাথে সাথে, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের একটি বড় প্রযুক্তি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাইক্রোসফট থেকে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা দেখা যাবে।
ট্রাম্পের সফরের আগে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণাও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ