আমরা যারা ইটপাথরের শহরে উদয়-অস্ত ছুটে চলা জীবনে অভ্যস্ত, তাদের এই গতানুগতিক গণ্ডির বাইরে খুব-একটা যাওয়া হয়ে ওঠে না। সময়-সুযোগ কোনোটাই তেমন মেলে না। শহরে দালান-কোঠার ফাঁক দিয়ে রাতে আকাশে চাঁদ ওঠে, সেই চাঁদ জ্যোৎস্না ঝরায়, তার সৌন্দর্য কখনো দেখা হয় না। শহরে নদী নেই। এখানে পাখি ডাকে না। আছে নামি-দামি আলো ঝলমলে রেস্তোরাঁ কিন্তু সেখানে প্রাণের স্পন্দন নেই, স্বস্তি মেলে না।
আমরা যারা অনলাইন গণমাধ্যমে কাজ করি, তাদের কাজের ধরনটা-ই এমন, সেখানে রাত-দিনের খুব ফারাক থাকে না। এই গণমাধ্যম একবার শুরু হয় কিন্তু বিরতি হয় না। চলতেই থাকে। পেশার বাইরেও জীবন আছে, সেই জীবনের আবেদন-নিবেদন আছে, সেটা আমাদের ভুলেই যেতে হয়।
এর মধ্যে ফুসরত বের করে আমরা মিলেছিলাম প্রাণের মেলায়; ঢাকার সাভার শহরের অদূরে বংশী নদীর পাড়ে ‘নীলা বর্ষা রিভার কুইন রিসোর্টে’। অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকম-এর ‘বনভোজন ও প্রতিনিধি সম্মেলনে’ আনন্দ আয়োজনে মেতেছিলাম সারা দিন। তবে পাঠককে প্রতিমুহূর্তে সংবাদ জানানো কিন্তু থেমে থাকেনি। সেটিও চলেছে, তবে স্বল্প পরিসরে ওই রিসোর্ট বসেই।
দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী, কাক ডাকা ভোরে সবাইকে অফিসে পৌঁছে বাস ধরতে হয়। সেই বাস ছুটে চলে ঢাকা শহরের কোলাহল পেরিয়ে গ্রামের পানে। কখনো শহর পেরিয়ে দিগন্ত-বিস্তৃত মাঠ, আবার মাঠ পেরিয়ে উপশহর, এরপর আবার গ্রাম। এভাবে চলতে চলতে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আমরা পৌঁছে যায় বংশী নদীর ‘মানু মিয়ার ঘাটে’। নদীর দুই পাড়ে সবুজ বনানী। ফসলের মাঠ। নদী জলে কানায় কানায় পূর্ণ তবে স্রোতহীন, স্থবির। বয়ে চলার কলকল শব্দ নেই। তবে শব্দ করে পণ্যবাহী ছোট ছোট জাহাজ, যাত্রীবাহী নৌকা চলে। একে একে নৌকায় করে নদী পার হয়ে আমরা পৌঁছে যায় রিসোর্টে।
এবারের বনভোজনে বড় প্রাপ্তি ছিল রাইজিংবিডি ডটকম-এর প্রতিনিধি সম্মেলন। সারা দেশ থেকে জেলা বা উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা আনন্দ আয়োজনে যোগ দেন। তাদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে বনভোজন ভিন্নমাত্রা পায়। তাদের স্বাগত জানানোর জন্য আগের দিবাগত রাতে বার্তা সম্পাদক রাসেল পারভেজ এবং প্রধান প্রতিবেদক হাসান মাহমুদের নেতৃত্বে একটি দল রিসোর্টে অবস্থান করেন। অধিকাংশ প্রতিনিধি ভোরে অফিসে জড়ো হয়ে বাস ধরেন। তবে পার্শ্ববর্তী জেলা বা যাতায়াতের সুবিধায় অনেকে সরাসরি রিসোর্টে গিয়ে যোগ দেন। অনেকে পথে যানজটের কবলে পড়ে পৌঁছান দুপুরে। যত ব্যস্ততা থাকুক বা দুর্ভোগ পোহাতে হোক, তা উপেক্ষা করে তারা প্রাণের ডাকে সাড়া দিয়ে ঠিকই পৌঁছান। খুলনার নুরুজ্জামান ফকির এবং সাতক্ষীরা শাহীন গোলদার এতটাই আগে পৌঁছান যে, তখনো রাত পেরিয়ে ভোরের আভাস মেলেনি। মাঝিরা খেয়া পারাপারও শুরু করেনি। অগত্যা ভোর পর্যন্ত তাদের খেয়াঘাট পাহারা দিতে হয়।
সকালে নাস্তা শেষে খেলোয়াড়েরা মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আর সাইফ বরকতুল্লাহ বসে পড়েন ল্যাপটপ নিয়ে। দিনের খবর পাঠককে জানানোর দায়িত্ব ডেস্কের এই গুরুত্বপূর্ণ মানুষটির কাঁধে। তিনি তা যথার্থই সামলেছেন। তবে একথাও ঠিক, অতি সিম্পল ও সুদর্শন এই যুবক খেলার মাঠে সুঠাম দেহের অধিকারী প্রতিপক্ষের মনে কাঁপুনি ধরাতে পারতেন না। সেই চেষ্টাও তিনি করেননি।
বল পাসিং দিয়ে খেলার ইভেন্ট শুরু হয়। এ খেলায় অংশ নিতে কেউ বাদ যাননি। খেলা শুরু হলে দেখা গেল, সবাই জিততে চান। কেউ-ই হারতে চান না। এজন্য কেউ কেউ ‘নয়-ছয়’ করার চেষ্টাও করেন। তবে নোয়াখালী থেকে আসা সুজন মাওলা এবং তরুণীদের ক্রাশ নাজমুল হোসেনের কঠোর নজরদারিতে সেই অভিপ্রায় অবশ্য ভেস্তে যায়। খেলা শেষে দেখা গেল, কোকিলকণ্ঠী ইয়াসমিন সুমী কীভাবে যেন প্রথম হয়ে গেছেন। কী আর করা! বিচারকদের সিদ্ধান্ত সবাইকে মেনে নিতেই হয়।
ইবনুল কাইয়ুম সনি যে নৃত্যের সেরাদের সেরা, তা আবারো প্রমাণ করলেন। গতবারের বনভোজনে ফেরার পথে বাসে তার গেঞ্জিখোলা নৃত্য কেউ আজও ভুলতে পারেনি। এবার অবশ্য তিনি নৃত্য করলেন খেলার মাঠে ফুটবলে কিক করার সময়। বল কিক করে গোল দিতে পারায় তার কী যে উদাম নৃত্য! দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে আসা সাংবাদিকেরাও সাক্ষী হয়ে থাকলেন। তবে সনি কিন্তু এই ইভেন্টে পুরস্কার জিততে পারেননি। তিনি হিটের সময় টিকতে পারলেও জায়গামত ব্যর্থ হন।
এতসব আনন্দ আয়োজন যখন চলছে, তখন চোখে পড়লো রিসোর্টের এক কোণে ভারাক্রান্ত মনে গলা জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছেন বাংলা সিনেমার ভিলেন খ্যাত গিয়াস উদ্দিন সিজার এবং ‘শরীরটা ভ্যালা না’ খ্যাত সুঠাম দেহের ইসমাইল হোসেন। এত আনন্দ আয়োজন, কিছুই যেন তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। তারা বনভোজনের গেঞ্জিও পরেননি। হতে পারে, গেঞ্জি না পাওয়ায় তাদের মন খারাপ। বিতরণের দায়িত্বে থাকা রাহাত সাইফুল জানান, গেঞ্জির অভাব নেই। সমস্যা সাইজে। স্পেশাল অর্ডার দিয়েও চারজনের সাইজ মেলানো যায়নি। বাকি দুজন ডেস্কের ‘খুঁটি’ খ্যাত সৈয়দ আলী আল মাসুদ আর ফরিদপুর প্রতিনিধি তামিম ইসলাম। এই চারজনের দুঃখে উপস্থিত সকল সহকর্মী সমবেদনা প্রকাশ করেন।
আনন্দ আয়োজনে স্বল্প সময়ের মধ্যে পুরাদস্তুর একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়ে যায়। সারা বাংলার প্রতিনিধিদের দুটো দল, ডেস্কের একটি এবং ক্যাম্পাস প্রতিনিধিদের একটি। বুড়ো ক্রিকেটাররা ব্যাটে-বলে রীতিমত ঝড় তোলেন। কেউ হাত ফসকে এক রানকে চার দেন। কেউ ক্যাচ করে উচ্ছ্বাসে সীমারেখা পেরিয়ে ছয় দেন। কেউ ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে না পেরে বোল্ড হন। একটা চার মারতে পেরে মোস্তাফিজুর রহমান নাসিমের উচ্ছ্বাস আর ঠেকানো যায় না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ঝালকাঠি থেকে আসা অলোক শাহাকে। আমাদের এক নারী সহকর্মী একের পর এক সমানে ব্যাট চালিয়ে ছয় মেরে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। কারণ, ছয় মারলে আউট।
ক্রিকেট খেলা নিয়ে আনন্দের মধ্যেও দুঃখজনক ঘটনা ঘটে যায়। ময়মনসিংহ প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান মিলন গর্তে পা পড়ে মেরুদণ্ডে ব্যথা পান। ব্যথা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে শোয়া থেকে উঠতে পারছিলেন না। ধরে তুলে দিলেও পা নাড়াতে পারছিলেন। উচ্চমাত্রার পেইন কিলার দিয়ে তাকে প্রাইভেট কারে করে অনেক কষ্টে ময়মনসিংহে পাঠানো হয়। জানি না, তাকে কত দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়।
এই বনভোজন আয়োজন করা হয় মূলত প্রতিনিধিদের সঙ্গে অফিসে কর্মরতদের একত্রিত হওয়া এবং পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা আরো গভীর করার উদ্দেশ্যে। প্রতিনিধিরা থাকেন অফিস থেকে অনেক দূরে। প্রতিদিন অফিসের প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়, কথা হয় কিন্তু দেখা আর হয় না। অফিসে কর্মরতরা প্রতিনিধিদের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে পরিচিত কিন্তু অনেককেই চেনেন না। প্রতিনিধি সম্মেলন সেই চেনা ও জানা, কাছাকাছি আসার সুযোগ তৈরি করে দেয়। প্রতিনিধি সম্মেলনে তারা তাদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি এবং প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। নির্বাহী সম্পাদক তাপস রায় এবং প্রকাশক এস এম জাহিদ হাসান তাদের দিক-নির্দেশনা দেন। সবাই রাইজিংবিডি ডটকম-কে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
খেলার মাঠের ইভেন্ট শেষ করতে করতে দুপুর গড়িয়ে যায়। তাড়াহুড়ো করে মাঠ থেকে চলে আসতে হয় রেস্তোরাঁয়। কিন্তু বহুদিন পরে ডুব দিয়ে গোসল করার সুযোগ কেউ কেউ হাতছাড়া করতে চাননি। হাফ প্যান্ট পরে লাফিয়ে পড়েন সুইমিং পুলে। নদীর স্বাদ সুইমিং পুলে মেটানো আরকি! সুইমিং পুলে লাফ-ঝাঁপ করে কেউ কেউ সেটা ভিডিওতে ধারণ করেন। কেউ আবার এই সুযোগে সাঁতার চেষ্টা করেন।
দিনের শেষ আয়োজন ছিল র্যাফেল ড্র। ফ্রিজ, টিভি, রাইস কুকার, বিভিন্ন কোম্পানির গিফট ভাউচারসহ ছিল নানা পুরস্কার। এক একটি কুপন উঠতে থাকে, আর সবাই দুরু দুরু মনে অপেক্ষা করতে থাকেন। কুপন নম্বর প্রকাশের পর নিজের কুপনের সঙ্গে নম্বর মেলান সবাই। মিলে গেলে খুশিতে হাত উঁচু করে জানান দেন। কেউ কেউ আনন্দে মাঠ থেকে স্টেজের দিকে দেন দৌড়। মঞ্জুরুল আলম মুকুল তার কুপনের নম্বর মিলে গেলে ঊর্ধ্বশ্বাসে যে দৌড় দেন, তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। মুকুল দুটি পুরস্কার পেলেও সাব্বির আহমেদ তনু ছিল আরো এগিয়ে। তিনি একে একে পেয়ে যান তিনটি পুরস্কার। যদিও এদিক থেকে সবার থেকে এগিয়ে অফিসের ‘লাজুক বালক’ খ্যাত মনিরুল হক ফিরোজ। তিনি প্রথম পুরস্কার ফ্রিজসহ জিতে নেন দুটি পুরস্কার। কেউ কেউ একাধিক পুরস্কার পেলেও কারো কারো ভাগ্যে পুরস্কারে শিকে আর ছেঁড়েনি। তাদের পরবর্তী বনভোজনের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে। নির্বাহী সম্পাদক তাপস রায়ের উপস্থাপনায় র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠান ছিল আকর্ষণীয়।
আমরা যারা প্রতিনিয়ত রুটিন মাফিক কাজ করতে এবং সংসার সামলাতে সামলাতে হাঁপিয়ে উঠি, তাদের একগুঁয়েমি এবং অবসাদ পেয়ে বসে। তাদের মাঝে-মধ্যে প্রয়োজন গণ্ডি পেরিয়ে নিরিবিলি-নির্জনতায় কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যাওয়ার। প্রকৃতির রূপ-রস-ঘ্রাণ আস্বাদন করতে পারলে জীবনে ভিন্ন মানে খুঁজে পাওয়া যায়। সেদিন ছায়া-ঢাকা, পাখি-ডাকা বংশী নদীর পাড়ে বসে জীবনের যে উপলব্ধি হয়েছে, তা স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবে বহুকাল।
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনে জুয়া বন্ধে হচ্ছে নতুন সাইবার সুরক্ষা আইন
কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন সাইবার সুরক্ষা আইন পাস হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। গতকাল রোববার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন সাইবার সুরক্ষা আইনটি পাস হবে বলে আশা করি। এই আইনে সাইবার স্পেসে জুয়া কিংবা অনলাইন জুয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন পাস হওয়ার পরে আমরা জুয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া এবং বেটিং সাইটগুলো নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেব ইনশা আল্লাহ।’
বেশ কিছুদিন ধরে বিকাশ, রকেটসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অনলাইন জুয়া, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ই–কমার্স এমএলএমের নাম করে অর্থ পাচারের অভিযোগ ওঠায় বেটিং সাইটগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত এমএফএস কোম্পানিগুলোর সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ বিষয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমরা মোবাইল ব্যাংকিংসহ ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশনগুলোকে আগাম সতর্কতা জানিয়ে রাখি। কেননা সাইবার জুয়া কোম্পানিগুলো মোবাইল ব্যাংকিংসহ ব্যাংক, ফাইন্যান্সিয়াল হাউস কিংবা পেমেন্ট গেটওয়ে, এমএফএস/পিএসও/পিএসপি ইত্যাদির সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড। মাসের পর মাস নির্দিষ্ট কিছু পুলের মোবাইল ফাইনান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে ইরেগুলার, একমুখী এবং অস্বাভাবিক ট্রাঞ্জেকশন হচ্ছে। একটা পুল অফ নম্বরে টাকা যাচ্ছে, সেটা নির্দিষ্ট নম্বরে গিয়ে ক্যাশ আউট হয়ে বাইরে পাচার হচ্ছে, আপনি দেখেও না দেখার ভান করে বলবেন, আমি জড়িত নই! এটা হবে না। সুতরাং অবৈধ জুয়ায় জড়িত সবাই সাবধান।’
আরও পড়ুননিষিদ্ধ অনলাইন জুয়া চলছেই, তরুণ–তরুণীরা আসক্ত১৬ এপ্রিল ২০২৫গত ২৭ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনে ‘বেআইনি অনলাইন ক্যাসিনোতে তিন মাসে রংপুর শীর্ষে, রাজশাহীর অবস্থান দ্বিতীয়’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। সেখানে গুগলের তথ্য অনুসারে, রংপুর বিভাগে সবচেয়ে বেশি মানুষ এই ক্যাসিনোর একাধিক সাইট গুগলে খুঁজেছেন। সারা দেশের তুলনায় এখানকার সার্চের হার সবচেয়ে বেশি রংপুর বিভাগ থেকে, যার স্কোর ১০০-এর মধ্যে ১০০। রাজশাহী বিভাগ রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে, যার স্কোর ১০০-এর মধ্যে ৪৬। এরপর চট্টগ্রাম (৪১) এবং খুলনা ও বরিশাল (৩৬)।
গত ১৬ এপ্রিল প্রথম আলো অনলাইনে ‘নিষিদ্ধ অনলাইন জুয়া চলছেই, তরুণ-তরুণীরা আসক্ত’ শিরোনামে আরও একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি যে কিওয়ার্ড গুগলে সার্চ হয়ে থাকে, সেটি হচ্ছে জেটবাজ ডটকম। এই সাইটে প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে ৭৬ লাখ বারের মতো সার্চ করা হয়। জেটবাজ জুয়ার সাইট প্রথম স্থানে রয়েছে। এরপর দ্বিতীয় জুয়ার স্থানে অবস্থান করছে জয়া৯ ডটকম, এই সাইট বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে সার্চ হয় ৫৮ লাখের মতো। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্রিকেস ডটটিভি। এই সাইটের নামে ৩৬ লাখ বার সার্চ হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনবেআইনি অনলাইন ক্যাসিনোতে তিন মাসে রংপুর শীর্ষে, রাজশাহীর অবস্থান দ্বিতীয়২৭ মার্চ ২০২৫বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক জুয়া সাইটের কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে যে ওয়েবসাইটগুলো বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে বাংলাদেশ থেকে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে এমসিবাংলাদেশ ডটওআরজি, ক্রিকায়া ডটআইও, ক্রিকায়া ডটবেস্ট, দারাজপ্লে ডটভিআইপি, জেরেমিথ ডটকম, ক্রেজিটাইম৮৮ ডটঅ্যাপ, সিএসওয়েলকাম ডটকম, বাংলাবেট ডটনেট, বাবু৮৮বিডিটি ডটকম, ১উইনবাংলাদেশ ডটকম, বাবো৮৮ ডটকম, বিকে৩৩ ডটনেট, এল৪৪৪ ডটওআরজি, স্লটএম৭৭ ডটকম, জয়া৯৯ ডটকম, ৭৭৭জয়া ডটনেট, টিকে৯৯৯ ডটওআরজি, ধোনি৮৮ ডটকম, বাবু৮৮এইচ ডটকম, বিগটাকা ডটকম, বাবু৮৮এফ ডটকম, খেলা৮৮ ডটঅনলাইন, নগদ৮৮ ডটকম, মোস্টপ্লে ডটভিআইপি, ফ্যানসিউইন ডটকম, গ্লোরিক্যাসিনো ডটকম, নগদ৮৮ ডটপ্রো, জেডব্লিউ ডটক্যাসিনো, ক্যাসিনো ডটওআরজি/বিএন-বিডি, উইন-বিডিটি ডটকম/বিএ, বাংলাবেটস ডটকম, জিটাউইন ডটকম ইত্যাদি।
বিকাশ ও নগদের মতো প্রতিষ্ঠানে জুয়ার টাকা লেনদেনের ব্যাপারে কি পদক্ষপ নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তারা প্রথম আলোকে বলেন,‘অনলাইন জুয়াসহ যেকোনো প্রতারণার ব্যাপারে আমরা সব সময় কাজ করে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুনসাকিব–বুবলী–পিয়াসহ তারকাদের অনলাইন জুয়ার অবাধ প্রচারণা০৮ এপ্রিল ২০২৫