প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া একজন মানুষের কথা ভাবুন। প্রত্যাখ্যানের আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে তাঁর জীবন। সামাজিকভাবেও যে তিনি কখনো কখনো হাসির পাত্র হয়ে উঠতে পারেন, সেটিও অস্বীকার করার উপায় নেই। সবকিছুর ভেতর দিয়েই অবশ্য জীবন এগিয়ে যেতে থাকে। তবে প্রত্যাখ্যানের সেই আঘাতে কারও কারও মনোজগতে বেশ গভীর ছাপ পড়ে। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘রিজেকশন ট্রমা’।
একপাক্ষিক ভালোবাসায় প্রত্যাখ্যানের আঘাতের ঝুঁকি থাকে মারাত্মক। আবার কেউ প্রেমের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এলেও প্রত্যাখ্যানের আঘাতে জর্জরিত হতে পারেন অপরজন। বিবাহবিচ্ছেদেও এমনটা ঘটতে পারে। প্রত্যাখ্যানের আঘাত পাওয়া একজন মানুষের বিশ্বাসের ভিত নড়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। একদিকে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগতে পারেন তিনি, নিজেকে ভাবতে পারেন ‘অযোগ্য’। অন্যদিকে আবার অন্যের প্রতিও বিশ্বাস হারাতে পারেন তিনি। এমনটাই বলছিলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিন হক।

নিজের ভেতর যা চলে

প্রত্যাখ্যানের কারণে নিজেকে তাঁর মনে হতে পারে অসুন্দর ও অপাঙ্‌ক্তেয়। নিজের ওপর রাগও হতে পারে। বিষণ্নতায় ভুগতে পারেন তিনি। কোনো কিছুই ভালো না লাগা বা কোনো কাজেই আগ্রহ না পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মন খারাপের এক অনুভূতিতে ডুবে থাকতে পারেন। নিজেকে দুর্বল মনে হতে পারে। ঘুম, খাওয়াদাওয়া ও রোজকার অন্যান্য স্বাভাবিক কাজও এলোমেলো হয়ে পড়তে পারে। কাজকর্মে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হতে পারে। আবেগীয় ভারসাম্য এলোমেলো হয়ে পড়তে পারে। কেউ কেউ নিজের ক্ষতি করতেও উদ্যত হন।

আরও পড়ুনআম্মার ভয়ে প্রেম করিনি, এখন আম্মাই বলে, তুমি খুঁজে আনো৫ ঘণ্টা আগেঅন্যের প্রতি…

প্রত্যাখ্যানের অভিজ্ঞতা হওয়ার পর একজন মানুষের মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। মানুষকে বিশ্বাস করতে না পারাটাই হয়ে দাঁড়াতে পারে বিশাল এক সমস্যা। অনেকে নতুন কোনো সম্পর্কে জড়াতে ভয় পান। এমনকি পেশাদার কাজেও অন্যরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবেন, এমন একটা ধারণা জন্মে যেতে পারে তাঁর মধ্যে।

এমন হলে কী করবেন

এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কারও কারও দীর্ঘ সময় লেগে যায়। যন্ত্রণাময় দিনে মনে রাখা প্রয়োজন, জীবন যেমন সুন্দর, তেমনি কঠিনও বটে। পাওয়া না–পাওয়ার এক জটিল সমীকরণই তো জীবন। স্মৃতিতে কষ্ট থাকতেই পারে। কিন্তু পৃথিবীর বুকে আপন অস্তিত্বকে অপাঙ্‌ক্তেয় মনে করবেন না। যেকোনো কারণেই আপনার ভালোবাসা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন একজন ব্যক্তি। তাতে আপনি ‘অযোগ্য’ প্রমাণিত হলেন, ব্যাপারটা একেবারেই তা নয়। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। নিজের জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোর কথা ভুলে যাবেন না। এগুলোর মাধ্যমেই নিজের নেতিবাচক ভাবনাগুলোকে নিজেই ‘চ্যালেঞ্জ’ করতে পারেন। যাঁরা আপনাকে ভালোবাসেন, যাঁরা আপনার আপনজন, তাঁদের ভালোবাসাকে অসম্মান করবেন না। তাঁদের ভালো রাখতে হলে কিন্তু নিজের যত্ন নেওয়ার বিকল্প নেই। খুব কাছের কোনো মানুষের সঙ্গে কষ্টের কথা ভাগ করে নিতে পারেন। পেশাগত ও শখের কাজে সময় দিন। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। শিথিলায়নের ব্যায়াম করতে পারেন। পেশাদার সাহায্যের জন্য প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

কালিয়াকৈরে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় আটক ২ নেতা, পরে ছাড়া পেলেন একজন

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, বিক্ষোভ ও হামলার ঘটনায় বিএনপির দুই নেতাকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল রোববার রাতে তাঁদের নিজ নিজ বাসা থেকে আটক করা হয়।

তবে আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হেলাল উদ্দিনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক অপরজন হলেন উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নতুন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পারভেজ আহমেদ।

এ বিষয়ে গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (এসআই) ফারুক বলেন, ওই দুজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ থাকায় আটক করা হয়েছে। হেলাল উদ্দিনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও পারভেজ আহমেদ এখনো পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গাজীপুর জেলা বিএনপি সম্প্রতি কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভা ও জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে। এরপর তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জেলা আহ্বায়ক কমিটি। গত শনিবার সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয় মৌচাক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদারকে এবং সদস্যসচিব করা হয় এম আনোয়ার হোসেনকে। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয় মামুদ সরকারকে এবং সদস্যসচিব করা হয় মহসিন উজ্জামানকে। দুই কমিটিতে মোট ৪১ জন সদস্য রয়েছেন।

পৌর বিএনপির কমিটি নিয়ে আপত্তি না থাকলেও উপজেলা কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ ও তাঁর সমর্থকেরা। তাঁরা শনিবার রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করেন। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পারভেজ আহমেদের পক্ষে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। একই সময় নতুন কমিটির পক্ষ থেকেও একটি মিছিল বের হয়।

এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইটপাটকেল নিক্ষেপে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। দুপুর ১২টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আরও পড়ুনকালিয়াকৈরে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া২১ ঘণ্টা আগে

পরে গতকাল রাতে কালিয়াকৈর থানা ও গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে সাহেববাজার এলাকা থেকে হেলাল উদ্দিন এবং হিজলতলী এলাকা থেকে পারভেজ আহমেদকে আটক করা হয়।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান বলেন, ‘আটকের বিষয়ে আমি এখনো কিছু জানি না। সম্ভবত রাতে একটি অভিযোগ হয়েছে। বিস্তারিত অভিযোগ দেখে বলা যাবে।’

গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে ছাড়া পেয়ে হেলাল উদ্দিন বলেন, কালিয়াকৈর বিএনপির মধ্যে কিছু খারাপ লোক রয়েছে, যারা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিল। তাঁরা এখন তিন বছর ধরে রাজনীতিতে আসা এক নেতার আশ্রয় নিয়েছেন। এতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কখন ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে, সেই আতঙ্কে দিন কাটছে তেহরানের মানুষের
  • ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র কেড়ে নিল তরুণ ইরানি কবি আর তাঁর পুরো পরিবারকে
  • মহাবিশ্বের কেন্দ্র কোথায়
  • চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু
  • আমি কারো সঙ্গে পাল্লা দিতে আসিনি: অপু বিশ্বাস
  • হামজাদের কোচিং স্টাফ বাড়ছে
  • ব্যক্তিগত মুহূর্ত নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা, স্পষ্ট বার্তা দিলেন অপু
  • ব্যক্তিগত মুহূর্ত নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় আমি নেই: অপু বিশ্বাস
  • শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই
  • কালিয়াকৈরে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় আটক ২ নেতা, পরে ছাড়া পেলেন একজন